প্রকৃতি দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে। আজকে বিকালে বন্ধু হাসান ফোন করে বললো নতুন একটা গ্রামে যাবে। আসরের নামাজের পরে বেরবো। আমি নামাজের আগেই বাসা থেকে বের হয়ে আর এক বন্ধু বাপ্পির বাসায় গেলাম। পরে একসাথে মসজিদে নামাজ পরে হাসান কে ফোন করি ও আর ফোন ধরে না। মেজাজ অনেক খারাপ হতে থাকলো ও নিজে বেরতে বলে এখন ওর কোন খবর নাই। এদিকে হাসানের বাসার দিকে যেতেও চাচ্ছিলাম না। ওর বাবা আমাদের স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। স্কুলে থাকতে অনেক ভয় পেতাম। চুল বড় রাখার কারনে বেশ কয়েকবার মার খাইছিলাম। আর স্যার কে দেখে এমনিতেও আমরা সবাই অনেক ভয় পেতাম। আমার সেই ভয় এখনও রয়ে গেছে। এখন আমার চুল এতো বড় হয়ে গেছে যে ঝুটি করতে হয়। এখন স্যার কিছু বলবেন না কিন্তু তারপরেও স্কুলের সেই ভয়টা এখনও রয়ে গেছে। হাটতে হাটতে হাসানের বাসার সামনে যেয়ে দেখি ও একজন লোকের সাথে কথা বলছে। এটা দেখে আমি বাপ্পিকে বললাম এটা নিশ্চয়ই হাসানের হবু শশুর। হাসানরা এই বাসাতে নতুন উঠছে। এই বাসাতে উঠার পর থেকেই নাকি বাসার মালিক হাসানের ফ্যামিলিকে ওর সাথে বিয়ে দেয়ার কথা বলতেছে। বাপ্পিকে বলতেছিলাম ব্যাটা হবু শশুরের সাথে কথা বলতেছে জন্যে আমাদের ফোন ধরতেছে না। হটাৎ হাসান আমাদের খেয়াল করলো আর বাসায় যেতে বললো। আমি বললাম এখন বাসায় যাবো না তুই তারাতারি বাসা থেকে বেরো। হাসান হাসতে হাসতে বলল আব্বু নাই বাসায় আসতে পারিস। অনেক দেরি হয়ে গেছে এখন ভিতরে বসার সময় নাই হাসান কে তারাতাড়ি বেরতে বললাম।
হাসান বাসা থেকে বের হয়ে আসার পরে বললো ওর দাদার বাড়ি পালি তে যাবে। ওখানে ওরা নতুন বাড়ি করবে। আমাদের কে দেখাতে নিয়ে যাবে। বাইকে করে আমরা পালির উদ্দেশ্য রওনা হলাম। পালি তে যেতে মাঝে শাহাপুর নামে একটা গ্রাম পরে। এই গ্রাম আমাদের গ্রাম থেকে বেশ দূরে। শাহাপুর পার হলেই পালি। পালিতে ঢুকার সাথে সাথে হাসান দেখি বলে উঠলো যে জমি শুরু হলো। এরপরে আশেপাশে যা মোটামুটি সব ই হাসানদের জমি। ইটের রাস্তা ছেড়ে মাটির রাস্তাতে ঢুকার পরেই বাপ্পি মজা করে বলে উঠলো হাসানকে এতো ভিতরে বাসা করলেতো কেও তো তোমাকে মেয়ে দিবে না। স্যারকে অন্য কোথাও বাড়ি করতে বল। এখানে বাড়ি করলে জিবনেও কেউ মেয়ে দিবে না তোকে আর আমাদেরও বিয়ে খাওয়া হবে না। এইসব বলতে বলতে অল্প সামনে যেতেই যেখানে বাড়ি করবে চলে আসলাম। জায়গা দেখার পরে নতুন রাস্তা দিয়ে জয়পুরহাট শহরের দিকে যেতে থাকলাম। এই রাস্তাতে আগে আমরা কেউ যাইনাই।
এদিক থেকে বাজার অনেক দূরে। মোটামুটি সবার বাসার সামনে অনেক জায়গা। এখানেই যে যার মত প্রয়োজনীয় সবজি গাছ লাগায় রাখছে। নিজেরাই সব আবাদ করে খায়। আমার অনেক ইচ্ছা আছে আমার নিজের বাড়ি হলে আমি এরকম আবাদ করে খাবো।
গ্রামের আরও একটু সামনে যেয়ে দেখি একটা নদী। এই নদীর আসল নাম শ্রী নদী কিন্তু সবাই একে মরা নদী বলে। এই নদী আমাদের গ্রামের উপর দিয়েও গেছে। ছোটবেলায় অনেক মাছ ধরতে যেতাম এই নদীতে। নদীর পাড়ে কিছুক্ষণ বসে থেকে সন্ধ্যা হয়ে আসলে নামায পরে বাসায় চলে আসলান।