বন্ধুর সাথে ২ নাম্বারি করার শাস্তি।
অনেক সাধনার পর সুমি আর রেজুয়ানা দুই বান্ধবীর বিয়ে হলো। দুজনের জামাই ই ছিল খুবই ভালো। একজনের জামাই সরকারি চাকুরীজীবী আর অন্যজনের জামাই ব্যবসায়ী। বিয়ের আগেই উষ্ণের সাথে প্ল্যান করেছিল তারা যে উষ্ণের ফ্যামিলি সহ মোট তিন দম্পতি মিলে ঘুরতে যাবে সেন্ট মারটিন দ্বিপ এ। ঠিকঠাক ভাবে বিয়ে হয়ে গেল দুজনের ই আর উষ্ণ তো আগে থেকেই বাজিমাত করে রেখেছে। বিয়ের পরপর সবাই মিলে ঠিক করলো যে পরের মাসে তারা সেন্ট মারটিন এ যাবে। উষ্ণ খুব ভালো একটা কটেজ এর খোঁজ ও দিল তাদের কে যেখানে তারা অনেক ভালো সুযোগ সুবিধা পাবে কারণ কটেজ এর মালিক উষ্ণের পরিচিত।
তাদের ঘুরতে যাওয়ার কিছুদিন আগে থেকে রেজুয়ানা বা সুমি কারোই কোন খোঁজ পাচ্ছে না উষ্ণ। আসলে রেজুয়ানা আর সুমি একজোট হয়ে ঠিক করেছে যে তারা নতুন বিবাহিত দুই দম্পতি ই যাবে ঘুরতে, তাদের সাথে উষ্ণদের কে নিবে না। এর জন্য তারা দুজনই উষ্ণ কে সব জায়গা থেকে ব্লক করেছে। তারা দুই দম্পতি চলে গেল সেন্ট মারটিন এ আর যাওয়ার আগে উষ্ণের ই পরিচয় করিয়ে দেওয়া সেই কটেজ এ রুম বুকিং করে দিয়ে গেল। তারা রুম বুকিং দেওয়ার পরই কটেজ এর মালিক উষ্ণকে কল দিয়ে জানতে চাইলো যে সে কেন যাচ্ছে না। ফলে উষ্ণ ব্যাপার টা জানতে পারলো যে তার সাথে তার বান্ধুবি রা দুই নাম্বারি করেছে। তখন উষ্ণ ঠিক করলো যে বান্ধুবিদের কে একটু দৌড়ের উপর রাখবে দূর থেকেই যেটা হবে বন্ধুর সাথে ২ নাম্বারি করার শাস্তি। তো রেজুয়ানা আর সুমি যারযার জামাই নিয়ে ঘুরতে গিয়ে ভুতের ভয়ে পরদিন সকালেই ঢাকায় ফিরলো। ভুতের ভয়ের ব্যাপার টা নিয়ে একটা গল্প লিখেছিলাম যেটা চাইলে এখানে ক্লিক করে পড়ে আসতে পারেন।
আসলে কি ঘটেছিল সেই রাতে?
যেহেতু বান্ধুবিরা গন্তব্যে পৌছানোর আগেই উষ্ণ জানতে এবং বুঝতে পেরেছিল যে তার সাথে দুই নাম্বারি করা হয়েছে তো উষ্ণ তার বউ কে নিয়ে একদিন আগেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এ পৌছে গিয়েছিল আর উঠেছিল সেই কটেজেই। কটেজ টা দেখতে মোটেও ভুতুরে ছিল না যেমন টা রেজুয়ানা আর সুমি রা আসার পর দেখা গিয়েছে। আসলে কটেজের মালিকের সাথে বুদ্ধি করে উষ্ণ ই কটেজ টাকে ভৌতিক একটা রুপ দিয়েছে। মেয়েটার আত্মহত্মা থেকে শুরু করে যা কিছু ঘটেছিল সেই রাতে সবই উষ্ণের প্ল্যান মোতাবেকই চলেছে মাত্র। সুমি ওয়াশরুমে যাওয়ার পর কান্নার শব্দ, চিৎকারের শব্দ থেকে শুরু করে ছায়া দেখা আর তাছের পিছনে মৃত মেয়েটা কে দেখা সবই উষ্ণের প্ল্যানের মধ্যেই ছিল। মেয়ের রোল গুলো পালন করেছিল উষ্ণের বউ নিজেই। সুমি ওয়াশরুমে যাওয়ার পর যে কান্না আর চীৎকারের শব্দ করেছিল সেটা করতে চায় নি উষ্ণের বউ কারণ সুমি যদি আবার ওয়াশরুমে অজ্ঞ্যান হয়ে পরে সেটা ভেবে। কিন্তু উষ্ণ বলেছিল কিছু হবে না। তো সেই ঘটনার পরে সুমি ঘড়ে যাওয়ার সময়ে যে ছায়া দেখেছিল সেটা উষ্ণ নিজেই দেখিয়েছিল ছাদ থেকে। তারপর গাছের পিছনে যে আত্মহত্যা করা মৃৎ মেয়ের লাশ কথা বলেছে সেটাও কোন লাশ ছিল না, উষ্ণের বউ স্পেশাল মেকাপ নিয়ে অভিনয় করেছিল। উষ্ণ কখনো ভাবেও নাই যে তার বউ এতো সুন্দর অভিনয় করতে পারে। সে তো রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছিল সেই অভিনয় দেখে। এমনকি সুমির যে পেট ব্যাথা হয়েছিল রাতে সেটাও নিজ থেকে হয় নি। কটেজ এর লোক দিয়ে উষ্ণ তাদের কে ওয়েলকাম গিফট হিসেবে জুস পাঠিয়েছিল যাতে পেট খারাপ করার ওষুধ ছিল। উষ্ণর প্ল্যান ছিল সবাইকে একসাথে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে সবাইকে আলাদাভাবে ভয় দেখাবে কিন্তু সুমি ছাড়া আর কেউ জুস টা খায় নি সেদিন। তারপর পরদিন সকালে রেজুয়ানা আর সুমি ঢাকায় চলে গেল কিন্তু উষ্ণ আর তার বউ তাদের ট্যুর শেষ করেই ফিরলো ৩দিন পরে। বাসায় ফেরার পরে উষ্ণ ফেসবুকে কিছু ছবি শেয়ার করেছিল সেই কটেজ সহকারে আর তার বউয়ের লাশ সাজা সেই মেকাপসহ কিছু ছবিও শেয়ার করেছিল। ছবিগুলো দেখার পরে রেজুয়ানা আর সুমি উষ্ণকে পিটানোর জন্য সবখানে খুজে বেড়াচ্ছিল কিন্তু উষ্ণ তখন সবাইকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে রাখলো আর ব্লক করার আগে উষ্ণ রেজুয়ানা আর সুমি কে একটা ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল যেখানে লেখা ছিল "বন্ধুর সাথে ২ নাম্বারি করার শাস্তি কেমন লাগলো?"। রেজুয়ানা আর সুমির যেই একটা শাস্তি হয়েছিল সেবার তা ভুলার না।