ভয়ের পরে মৃত্যু।
মধ্যরাতের তালগাছ আর ভয় এই ২টা পোষ্টে রফিক মিয়ার গল্প বলেছিলাম। আজ সেই গল্পের করুণ সমাপ্তটা নিয়ে কথা বলতে আসলাম।
রফিক মিয়া সেই রাতে কি দেখেছিল সেটা আজ পর্যন্ত কেউ জানে না বলেছিলাম কিন্তু সেখানে একটু ভুল হয়েছে, কারণ তার পরিবার পরবর্তীতে একজন কবিরাজ এর মাধ্যমে জানতে পেরেছিল যদিও রফিক মিয়া নিজের মুখে বলে নাই কারণ তিনি যেই জিনিশ টা দেখেছিল সেটা রফিক মিয়া কে বলেছিল এই ব্যাপারে কাওকে বিছু বললে রফিক মিয়ার পরিবারের ক্ষতি করবে।
তো ক্যান্সার নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল ঘুড়াঘুড়ির পালা ছিল তখন। এরপর ডাক্তার বললো রোগীকে বাসায় রাখতে কারণ তার অবস্থা সুবিধার ছিল না, তো রফিক মিয়া কে বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো।
সেদিন শুক্রবার, রফিক মিয়া বিছানায়ই পরে আছে। রফিক মিয়ার বাড়ি থেকে খবর আসলো যে, রফিক মিয়ার মা মারা গিয়েছে। রফিক মিয়ার এরকম খারাপ অবস্থায় খবর টা তাকে জানানো হলো না, রফিক মিয়ার ছেলে আর মেয়েকে পাঠানো হলো দাদির লাশ দেখার জন্য যদিও তারা যাওয়ার আগেই দাফন হয়ে গেল। দিন ফুরিয়ে রাত বয়ে আসলো। রফিক মিয়া তার বউকে ডেকে বলছে, "ছেলে-মেয়ে আহে না কেন এহনো? মায়ের দাফন তো শ্যাষ"। রফিক মিয়া কে কিন্তু তার মায়ের মৃত্যুর কথা জানানোই হয় নাই অথচ সে বলে উঠলো দাফনের কথা। তার বউ কথা ঘুরিয়ে বললো, "কি বলো? কার দাফন? মা তো ভালো আছে, আর অরা কালকে সকালে আসবে"।
রফিক মিয়াঃ মিছা কথা কইও না, মা নাই আমি জানি। মা গেল এই শুক্রবারে আর আমি যামু পরের শুক্রবারে"। এসব কথা শুনে রফিক মিয়ার বউ আর কিছু বলতে পারলো না। পরদিন রফিক মিয়া বাধ্য করলো তাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে। বাড়িতে যাওয়ার পর সেখানকার একজন কবিরাজ এর সাথে রফিক মিয়ার ভাই দেখা করলো আর কবিরাজ এর মাধ্যমে জানতে পারলো রফিক মিয়ার সেই রাতের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা। এগুলো জেনে রফিক মিয়ার বউ জিজ্ঞাসা করলো, "তুমি তো এগুলা কিছুই বললা না আমারে"।
রফিক মিয়াঃ কইলে তোমাগো ক্ষতি করবো তাই কই নাই, নিজে মরলে মরি, তোমরা ভালো থাকো"।
কবিরাজঃ আজ সারারাত তোরা আল্লাহর নামে জিগির করবি, ঘুমাবি না। দরজা জানালা সব বন্ধ করে রাখবি, অনেকেই বলবে খুলতে, অনেক কিছুই দেখবি কিন্তু খুলবি না সাবধান করে দিলাম।
কবিরাজ এর কথা অনুযায়ী রফিক মিয়া কে সামনে রেখে সবাই মিলে জিগির করতে লাগলো যেখানে ছিল রফিক মিয়ার বউ, ভাই-বোন আরো কিছু লোক; ছেলে-মেয়ে তখন ঢাকায় ছিল। জিগির করার সময়ে বেশ কিছু ঘটনা ঘটে গেল যেমন, কেউ ঘরে ঘুমোতে গেলে বিভিন্ন প্রাণি দেখতে পেয়ে ভয় পাচ্ছিল। রফিক মিয়ার বউও পায়ের সাথে একটা কালো বিড়াল দেখতে পেল কিন্তু সেটা অন্য কেউ আর দেখছিল না। তখন গভীর রাত, হঠাৎ দরজায় টোকা দিয়ে পরিচিত একজন মহিলা ডাকছে। এতো রাতে তো এই মহিলার আসার কথা না, দরজা খুলে নাই। পরে বাহির থেকে সেই মহিলা রাগি কন্ঠে কিছু কথা বলে চলে গেল আর বাড়ির ফাকা দিয়ে দেখা গেল সেই মহিলার হাতে একটা পাতিলে আগুন জ্বলছে। আবার রফিক মিয়ার বউয়ের শরীরে বড়বড় ইটের টুকরা পরছিল কোথা থেকে যেন। এভাবে ভয়ংকর রাত টা কেটে গেল।
সেদিন শুক্রবার, রফিক মিয়ার মা যেই শুক্রবারে মারা গেল তার পরের শুক্রবার। রফিক মিয়া তার ছেলে-মেয়ে কে দেখতে চাচ্ছিল কিন্তু তখনো তার ছেলে-মেয়ে সেখানে এসে পৌছায় নাই। চুপচাপ অপেক্ষা করছিল ছেলে-মেয়ে কে দেখার জন্য তারপর একটা সময়ে আসলো তার ছেলে-মেয়ে। পাশে এসে "আব্বা" বলে ডাক দেওয়ার পর রফিক মিয়া তাকালো আর বললো, "আসছোস তোরা?"।
কিছুক্ষণের মধ্যেই খারাপ বুঝে ছেলে পানি তুলে দিল রফিক মিয়ার মুখে। পানি টা খেয়েই পৃথিবী থেকে বিদায় নিল রফিক মিয়া।
Congratulations @ashikstd! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 8500 comments.
Your next target is to reach 80000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!