বাড়ি ফিরে এসো সন্ধ্যে নামার আগে...

in BDCommunity2 years ago

img_0.744714566857946.jpg

বাস থেকে কুমিল্লায় যখন নামি, তখন ঘড়িতে বাজে রাত প্রায় ২ টা। সন্ধ্যার দিকে ঢাকা থেকে রওয়ানা দিলেও রাস্তায় অতিরিক্ত জ্যামের কারণে ঢাকা থেকে বের হতে হতেই প্রায় ১১ টা বেজে গিয়েছিল। তার উপর আবার বৃহষ্পতিবার! জ্যাম তো একটু বেশিই থাকবে, তাই না?

যায় হোক, রাত ২ টায় কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোডে নামার পর দেখি রাস্তাঘাট পুরোপুরি ফাঁকা। পাশে অবশ্য ২-৩ টা টং এর দোকান খোলা ছিল। ফাঁকা রাস্তায় কিছুটা ভয় লাগছিল। তাই ভয় কাটানোর জন্য সবচেয়ে কাছের দোকানটাতে বসে একটা চায়ের অর্ডার দিলাম আর সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশ্য হাতের চা শেষ হতে না হতেই সিএনজি একটা পেয়ে গিয়েছিলাম। যদিও প্রায় ২-৩ গুন বেশি ভাড়া দিয়ে বাড়িতে আসতে হয়েছিল।

বাড়ি ফিরি রাত প্রায় আড়াইটার দিকে। এদিকে ঠান্ডা বেশ ভালই। চারপাশ একেবারেই চুপচাপ। রাস্তায় ২-১ টা রাত জাগা কুকুর ছাড়া আর কিছু ছিল না। তবে শীত পড়লেও চারপাশে কুয়াশা তেমন একটা ছিল না। পুকুরের পাশ দিয়ে যাবার সময় একটা কুকুর কোত্থেকে যেন ঘেউ ঘেউ করতে করতে এক দৌড়ে পেছনে চলে আসছিল। শুরুতে হুট করে কিছুটা ভয় পেলেও পরে নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম।

img_0.8283959216534896.jpg

কাল সারাদিন কাজের চাপে লাঞ্চ বা ডিনার কোনোটাই করা হয় নি। বাস কুমিল্লায় ঢুকার পর একবার যাত্রাবিরতি দিয়েছিল। ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাস থেকে নেমে দেখি একটু দূরে রাস্তার পাশে গরম গরম ভাপা আর পুলি পিঠা বানানো হচ্ছে। এরকম গরম গরম ধোয়া উঠা পিঠা দেখলে তো লোভ সামলানো একেবারেই দায়। তাই আগপিছ চিন্তা না করে প্রথমে দুইটা পুলি পিঠা খাওয়া শুরু করলাম। অবশ্য ভর্তাটা খুব ঝাল লেগেছিল। তাই পরে ভাপা পিঠা খেয়ে সেই ঝাল কাটাতে হয়েছিল। তবে পুলির চেয়ে ভাপা পিঠাটাই যেন বেশ ভাল ছিল।

যায় হোক, রাতে বাড়িতে ফিরে কারো সাথে অবশ্য দেখা হয় নি। আমার আসার অপেক্ষা করতে করতে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিল। মা অবশ্য তখনোও জেগে ছিল। বাড়ি ফিরে সামান্য খেয়ে দেয়ে এমন এক ঘুম দিলাম যে ঘুম থেকে উঠতে উঠতে একেবারে দুপুর হয়ে গেল। গাজীপুর থাকলে অবশ্য এরকম ঘুম ঘুমাতে পারি না। যেভাবেই হোক, ৮ টার আগেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। এরপর রেডি হয়ে অফিস করতে হয়। শুক্রবারটাও এমনকি বাদ যায় না।

img_0.8033817235463904.jpg

দুপুরে ঘুম থেকে উঠে বাইরে এসে দেখি এক বছর আগে আমার লাগানো ফুল গাছটাতে ছোট একটা ফুল ধরে আছে। যদিও গাছটা এই এক বছরে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে, কিন্তু ফুলের পরিমান বাড়ে নি। ছোট বোনের কাছ থেকে জানলাম ২-৩ দিন পর পর নাকি একটা করে ফুল ধরে এটাতে। শুনে মনটা কিছুটা হলেও খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

img_0.9149643940637088.jpg

তবে ফুল জন্য মন খারাপ হলেও এই পিচ্চি দুইটার কারণে মন আবার ভালও হয়ে গিয়েছিল। দুপুরে ঘরে এসে আমাকে দেখতে পেয়ে তো এই দুই পিচ্চি পন্ডিত মহা খুশি। এরা দিন দিন যেন বড় হয়ে যাচ্ছে। পরেরবার হয়তো এসে দেখবো এরা আর পিচ্চি নেই, আরো বড় হয়ে গিয়েছে। তবে বড় হলেও স্বভাব কিন্তু মোটেও পালটায় নি। বরং আগের চেয়েও দুষ্টুমির মাত্রাটা কিছুটা হলেও বেড়েছে এবার। ছোট পিচ্চিটা তো আমার সাথে রেসলিং পর্যন্ত খেলে ফেলেছে। তবে খুব বেশি টায়ার্ড থাকায় এদেরকে তেমন একটা সময় দিতে পারি নি।

img_0.6858516578716615.jpg

আমাদের বাড়ির পুকুর এটা। শীতের সময় পানির পরিমান কমে যাওয়ায় পুকুরের উপরিভাগ কিছুটা ময়লা ময়লা দেখা যায়। কাল রাতে এই পুকুরের পাড় দিয়ে আসার সময়েই হুট করে ভয় কাজ করছিল। তবে দিনের বেলায় ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। অবশ্য এই জায়গাটাতে বসে থাকতে আমার ভালই লাগে। বিশেষ করে বাড়ির দেয়ার আর পুকুরের রঙ সবুজ হওয়ায় এখানকার সৌন্দর্যটা যেন আরো কয়েক গুন বেড়ে গিয়েছে।

পুকুরের ঐ পাশে বড় একটা তেতুল গাছ ছিল একসময়। এখন আর নেই। গত বছর পাড় বানানোর জন্য গাছটা কেটে ফেলা হয়েছিল। তেতুল গাছটা থাকার সময় ঐ পাড়ের সৌন্দর্য্য আরো বেশি ছিল। এখন কিছুটা হলেও কমে গিয়েছে।

img_0.7596156418883415.jpg

এই টিস্যুবক্স টা কিছুদিন আগে গিফট পেয়েছিলাম আমি একটা কোম্পানি থেকে। এতদিন আমার অফিসের ডেস্ক এ এটা পড়ে ছিল কারণ ছাড়াই। তাই কাল ব্যাগ গুছানোর সময় এটাও সাথে করে নিয়ে চলে আসলাম। কোনো জিনিস অকারনে পড়ে থাকার থেকে একটু হলেও কাজে লাগাতে পারলে মন্দ কী? তবে টিস্যুবক্স এর রঙ এর সাথে টেবিলের কাভারের রঙ মিলে যাওয়ায় কিন্তু আরো বেশি সুন্দর লাগছে এখন, তাই না?

কাল আবার চলে যেতে হবে। সারাদিন পরিবারের সবাইকে সময় দেয়ার চেষ্টা করলাম। কাল চলে যাওয়ার কথা ভাবলে মনটা আবারও খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু কিছু করার নেই। এইতো জীবন...

Sort:  

Hi @reza-shamim, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!


Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.

JOIN US ON

Yay! 🤗
Your content has been boosted with Ecency Points, by @reza-shamim.
Use Ecency daily to boost your growth on platform!

Support Ecency
Vote for new Proposal
Delegate HP and earn more