আমরা যা কিছু করি না কেনো তার মূলে রয়েছে শক্তি।শক্তি ছাড়াতো কোন প্রাণী চলতে পারে না।তাই সব মানুষেরই শক্তি বা ক্ষমতা রয়েছে।কারো কম বা কারো বেশি।যদিও বিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি আর ক্ষমতা এক বিষয় নয়।দুটোর আলাদা সংঞ্জা রয়েছে।কিন্তু বাস্তবিক জীবনে আমরা দুটো শব্দকে প্রায় একি অর্থে ব্যবহার করে থাকি।যেমন,ছেলেটা খুব শক্তিমান বা তার বাবার ক্ষমতা অনেক,এলাকার সবাই তার কথায় উঠে বসে।
শক্তি ব্যবহার করা হয় সাধারণত ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে আর ক্ষমতা ব্যবহার করা হয় সমষ্টিগতভাবে বিস্তৃত পরিসরে।
সে যাইহোক,মূল কথা বলা যাক,কোনো কোনো মানুষের শক্তি বা ক্ষমতা হইতো খুব বেশি।সে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে বা পুরো একটি বিস্তৃত অঞ্চলের সবাই তার কথায় উঠে বসে বা ধরা যাক পুরো দেশই তার নিয়ন্ত্রণে,আচ্ছা এটাও ধরা যাক হয়তো পুরো বিশ্বে তার শাসন চলে।তবে যতো যাইহোক,সে মানুষ,আর মানুষের শক্তি খুবি নির্দিষ্ট একটা গন্ডির মধ্যেতো বটেই,ক্ষমতাও একটা সীমানার মধ্যে।বলা হয় মানুষ চাইলে সব পারে।হ্যাঁ সমগ্র মানবজাতির মধ্যে একেকজনের ক্ষমতা একেক জায়গায়,একেকজন হয়তো একেক বিষয় পারে,সে হিসাবে মানুষ সব পারে।কিন্তু একজন মানুষ,একজন ব্যক্তি কি সব পারে?না, পুরো দুনিয়ার খুবি ক্ষুদ্র একটা অংশ তার আয়ত্ত্বে।আর একজন মানুষের পক্ষে স্বাভাবিকভাবে তার স্বভাবের বাহিরের কিছু করা সম্ভব নয়।মানুষের মৃত্যু সুনিশ্চিত।সুতরাং তাকে অনেক কিছুই ভেবে পা বাড়াতে হয় যাতে তার মৃত্যু না হয়।
একজন চাইলেই পাখির মতো উড়তে পারে না,যদি কেউ চাই যে, আমি দশতলা দালানের ছাদে উঠে পাখির মতো উড়ে উড়ে নিচে নামবো।সে এটা করার সাহস পাবে না,কারণ তার মৃত্যুর ভয় আছে।যদি মৃত্যু ভয় না থাকতো, তাহলে যদিও সে উড়তে পারবে না তবু সে চেষ্টা করে দেখতো।
আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মানুষ অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলছে দিন দিন,কিন্তু যত কিছুই করুক তার সেই সীমানার বাহিরে যেতে পারবে না।
এই সীমানার বাহিরে যদি কেউ কিছু করতে পারে সেটা "সুপারন্যাচারাল পাওয়ার" বা অতিপ্রাকৃত শক্তি।এই অতিপ্রাকৃত শক্তি পেতে চাওয়ার ইচ্ছে সবারই থাকে।ছোট সময় মানুষ সবচেয়ে বেশি আকর্ষিত হয় এসব অতিপ্রাকৃত শক্তির ধারা।ছোট সময় রুপকথার গল্প শুনে বা গল্পের বই এ রাজা,রাজপুত্রদের বিভিন্ন অতিমানবিক গুণের কথা শুনে নিজেকেও সেই জায়গায় বসাতে ইচ্ছে করে।তখন আসলে যেই শক্তিই দেখে সেটাই নিজের জন্য পেতে ইচ্ছে করতো।
কিন্তু বড় হওয়ার পর কিছু নির্দিষ্ট অর্থবোধক বিষয়ে অতিপ্রাকৃত শক্তি পেতে মন চাই।
এই যেমন আমার সবসময় মনে হয়,যারা মানুষকে কথার মাধ্যমে কষ্ট দেয়,অন্যকে নিয়ে নিজে মজা করে কিন্তু বিপরীত মানুষটা যে কষ্ট পাচ্ছে তা বুঝে না,তাদেরকে প্রতিহত করার কোনো একটা অতিপ্রাকৃত শক্তি যদি আমার থাকতো।এমন হতে পারে,আমার সামনে যখন কেউ অন্যকে নিয়ে মজা করছে,অন্যের দোষ নিয়ে কথা বলে হাসিহাসি করছে,অযথা অন্যকে অপবাদ দিচ্ছে এমন সময় আমি এমন একটা কিছু করবো যে তার মুখটা অটোমেটিক সেলাই হয়ে যাবে।
আমি ছোট থেকে খুব লজ্জা পায়।মানুষের সামনে দিয়ে চলতে খুব অস্বচ্ছন্দ্যবোধ করি।আমার সবসময় মনে হয় আমাকে যদি কেউ দেখতে না পেতো,অদৃশ্য হওয়ার ক্ষমতা পেতাম।আসলে অনেকেই এই ক্ষমতাটা চায় বিভিন্ন কারণে।তবে আমি এই জন্য এই শক্তিটা চাই যে, আমি যদি অদৃশ্য হয়ে পরিচিত মানুষের সামনে দিয়ে চলে যায় তবুও মানুষ আমাকে দেখবে না।আমার হাতে এমন একটা বাটন থাকবে,যেটাতে চাপ দিলে অদৃশ্য হয়ে যাবো,আবার চাইলেই পূর্বের অবস্থায় ফিরেও যাবো।
আমার যখন সেই আট-নয় বছর বয়স, তখন আম্মাকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় চলে আসি পড়ালেখার জন্য।গ্রামে থাকলে পড়ালেখা হবে না এইজন্য আম্মা আমাকে আমার বোনদের কাছে ঢাকাতে পাঠিয়ে দেন।এতো ছোটবেলা আম্মাকে ছেড়ে চলে এসেছি,তাই আমার শুধু বাড়িতে যেতে মন চাইতো।কিন্তু বাড়িতেতো আর বললেই যাওয়া হয় না।স্কুল-কলেজ ছুটি দিলে কয়েকদিনের জন্য যেতে হয়,আর ছোট সময় আমার বাসে যেতে খুব কষ্ট হতো,এসব কারণে মনে হতো আমার যদি এমন কোনো শক্তি থাকতো,চোখের পলকে বাড়িতে চলে যেতে পারতাম।আর যখন দরকার হবে তখন চলে আসবো।
এই অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতাগুলো পেতে সবসময় মন চাই।কেউ যদি "সুপারন্যাচারাল পাওয়ার" দেওয়ার কথা বলতো তাহলে আমি এগুলোই নিতাম।
প্রথমেই বলেছি মানুষ তার বেঁধে দেওয়া সীমার বাহিরে হয়তো কখনওই যেতে পারবে না,তাই এসব অতিপ্রাকৃত শক্তি কখনওই পাবো না বা কেউ পাবে না,তারপরও এসব নিয়ে চিন্তা করতে বেশ ভালোই লাগে,নিজেকে ঐ অবস্থানে রেখে কল্পনা করলে আলাদা একটা উন্মাদনা কাজ করে মনের ভিতর।
Ah, wish you could have this power! Life would be much more easier..
Thanks for joining in!