দুর্নীতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্থিতিশীলতার অন্যতম অন্তরায়। দিন দিন দুর্নীতি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিকে দুর্বল করে ফেলছে। দুর্নীতি এতোটাই বেড়ে গেছে যে মানুষ তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দুর্নীতি আইনের শাসনের পরিপন্থী। দুর্নীতির ফলে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সরকার ও মৌলিক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা একেবারেই তলানিতে।
এখনো দেশের অধিকাংশই ভাল মানুষ ধরে নিতে হবে। যদিও বা অনেকেই সুযোগের অভাবে ভালো মানুষ। রাজনীতিকদের অনেকেই এখনো সৎ, অনেকেই এখনো সৎ রাজনীতির পক্ষে। বিভিন্ন অফিস-আদালতে কর্মরত বেশিরভাগ মানুষই দুর্নীতির সাথে জড়িত নয়। খুব কম সংখ্যক মানুষেই দূর্নীতি করে। এখানেও অনেকে সুযোগ পায় দূর্নীতি করার। এরপরেও সমাজে দুর্নীতির বিস্তার ঘটছে প্রবল বেগে। অস্থিরতা গ্রাস করছে ভয়াবহ গতিতে। সব থেকে বেশি এইসব দুর্নীতির মধ্যে জড়িত উচ্চ শিক্ষিতরা। কলমের এক খোঁচায় কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি করে ফেলছে।
অথচ, দুর্নীতিবাজ নস্ট মানুষের সংখ্যা সব জায়গায়ই কম। কিন্তু এরাই সব থেকে বেপরোয়া। এদেরকে সবাই সমীহ করে চলে। উঠতে বসতে স্যালুট মারে। এরা সর্বত্র যা ইচ্ছে তাই করার স্পর্ধা দেখায়। আবার এদের পিছনেই তেল মারে পাবলিক। ঘুরঘুর করে কিছু অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার আশায়। তবে এই অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার আশায় যারা এদের পিছনে ঘুরঘুর করে তারাও পরোক্ষভাবে এই দুর্নীতির জন্য দায়ী। এরা হয়ে যায় সর্বসর্বা কারণ, রাজনীতি এদের পিছনে শক্তি জোগায়। এমপি মন্ত্রীরা এদের মাথায় হাত দিয়েছে।
কোন কোন অফিসের পিয়নের উত্তাপে থাকায় যায় না। একটা সরকারী অফিসের পিয়ন, একটি মতলববাজী সংগঠনের নেতা সেজে তার বসকে ভয়ে কাঁপায়। একজন শিক্ষার্থী, যিনি তার পাঠদানের শিক্ষক; রাজনীতির লেজুড়বৃত্তির শক্তি নিয়ে সেও শিক্ষককে শাসায়। আবার শিক্ষকেরাও রাজনীতির লেজুরবৃত্তির কারনে নিজের নীতি ভূলে গিয়ে তার শিক্ষকতার নীতিকে চাপা দিচ্ছে। শিক্ষক যে সমাজের মানুষ গড়ার কারিগরী তারা আজ সন্ত্রাসী গড়ে তুলছে।
সামাজিক বিচ্যুতি, দুর্নীতি, ক্ষমতার দাপট, অন্যায়, অপরাধসহ যাবতীয় পাপাচার, অনাচার তার আশ্রয় প্রশ্রয়ের নিরাপদ আধার হয়ে উঠছে ক্ষমতার রাজনীতি।
এতো ক্ষমতা এতো বেপরোয়া এতো শক্তিশালী হওয়ার জন্যই লক্ষ লক্ষ টাকায় এক একটা দলীয় পদ বিক্রি হয়। পদ পেয়ে কোটি কোটি টাকার ভাগ ভাটোয়ারার গল্প শুনতে হয়। এক একজন জেলা উপজেলা পর্যায়ের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি। কেউ কেউ ২, ৩ হাজার কোটি টাকার ও মালিক।
এই যে এখনো ভাল মানুষের আধিক্য। দৈত্য আর দুর্বৃত্তায়নের যাঁতাকলে তারা আর কতকাল নিঃশ্বাস নিতে পারবে কে জানে! তবে ভালো মানুষের নিশ্চুপ নীরবতা এদের প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। হয়তো এভাবে একদিন সমাজ ও দেশ দুর্নীতির অতল গহব্বরে তলিয়ে যাবে। ভালো মানুষ গুলো আরো অত্যাচারিত, নিপীড়িত হবে। ভালো কিছু করার বা ভাবার লোক থাকবে না। সব খানেই অনিয়ম আর দুর্নীতির জয়জয়কার হবে। দুর্নীতির প্রতিযোগিতা হবে। কে কার থেকে বেশি দূর্নীতি করতে পারে।
পরিবর্তন দরকার এখনেই পরিবর্তন দরকার। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান গুলোই প্রায় ধ্বংসের পথে। প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের বালু কনা ধুলা বালি সব কিছুই চিৎকার দিয়ে বলছে ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
Hi @steemitwork, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @linco!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON