19 November, 2020 | Tuition Fees

in BDCommunity3 years ago

Students are ordered to clear their dues from 3 November, 2020 to 15 November, 2020 (without delay fine). Students will not be allowed to seat in the examination if he/she will not pay his/her full dues.

IMG_20201123_152339.jpg

আজকে নভেম্বরের ১৯ তারিখ। কালকে থেকে ভার্সিটিতে মিডটার্ম পরীক্ষা শুরু হবে। আমি এখনো টিউশন ফি পরিশোধ করিনি। একটু পরে বের হবো ব্যাংকের উদ্দেশ্যে। ৪টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে। বাসা থেকে বের হবো, ঠিক সেই মুহুর্তে আতিকের ফোন।

আতিকঃ ভার্সিটির টাকা দিছোস?
আমিঃ না! বের হচ্ছি। ব্যাংকে যাচ্ছি। তুই দিছোস?
আতিকঃ না রে! আচ্ছা আয়, আমি ব্যাংকের সামনেই আছি।

আতিকের কন্ঠ শুনে চিন্তিত মনে হচ্ছিল। চিন্তিত হওয়ারই কথা, কিছু পরিমাণ বকেয়া আছে আগের সেমিস্টারের। আবেদন করে বকেয়া রাখা হয়েছিলো কিছু টাকা, এই সেমিস্টারে দিয়ে পরিশোধ করার কথা। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক মেডিকেল কলেজের এরিয়ার মধ্যে। গিয়ে দেখি লম্বা লাইন। আজকেই শেষ দিন জন্যে সবাই ব্যাস্ত হয়ে পড়ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষও কঠোর হয়েছে কোন বকেয়া শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দিবে না।

৪টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে সেটা ভেবে লাইন উপেক্ষা করে আতিকের সাথে দেখা করলাম। আসলেই চিন্তিত ও। একা বসে আছে কলেজের সিড়িতে। গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম টাকা দিলি কেমনে এই লম্বা লাইনের মধ্যে।

আতিকঃ দেইনি! পুরো টাকার ব্যবস্থা হয় নাই এখনো। আন্টিকে ফোন দিছি, কিছু টাকা ধার দিতে বলেছি। বলছে কিছুক্ষণ পর জানাবে। তুই দেখ লাইনের মধ্যে জুনিয়র কাউরে পাস নাকি, ওর কাছে ফর্ম পুরন করে টাকা দে ও দিয়ে দিবেনে।

আমিঃ আন্টিরে আবার ফোন দে আবার। দেখ ম্যানেজ হইছে নাকি।

এটা ভাবতে ভাবতেই ওর আন্টির ফোন আসলো। বলো কিছু টাকা ম্যানেজ হইছে। এখনো ২০% টাকা হলে সম্পুর্ন টা ম্যানেজ হবে। এর মধ্যে আমার টাকাও কিছু কম পড়ে গেলো। এই সেমিস্টারে কোন বকেয়া গ্রহন যোগ্য হবে না। আমাকে আবার বাড়িতে এসে বাকি টাকা গুলো নিয়ে যেতে হলো। গিয়ে শুনি এখনো ওর ১ হাজার টাকা কম আছে সম্পুর্ন হতে। ৩টা বাজে, আমি একজন পরিচিত ছোট ভাইয়ের কাছে টাকা দিয়ে ব্যাংকের ভিতরে পাঠিয়েছি। করোনার সময় আর সব কিছু ধীরে ধীরে হচ্ছে সেজন্য সময় বেশি লাগছে। ৪টা বেজে গেলো, ব্যাংকও বন্ধ হয়ে গেলো। ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর আতিকের ছোট ভাই সাইকেল নিয়ে এসে ১ হাজার টাকা দিয়ে গেলো। কিন্তু তখন ইতিমধ্যে ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে।

ডিপার্টমেন্টের আমাদের ব্যাচের এডভাইজর স্যারকে ফোন দিয়ে জানালাম। স্যার বললো অফিসে গিয়ে স্যারের সাথে দেখা করতে। ভার্সিটিতে গিয়েও দেখি একাউন্ট অফিসে টিউশন ফি জমা নিচ্ছে। সেখানে লাইনে দাড়িয়ে ৫:৩০ এ টাকা দিয়ে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসলাম। আতিকের স্বস্তির নিশ্বাস আমার কানে আসছিলো। আমি ওর চেহারার দিকে তাকিয়েই অনুভব করতে পারছিলাম ওর কত ভালো লাগছে এখন।

ভার্সিটির সামনের চায়ের দোকানে দুজন বসে চুপচাপ চা খেতে লাগলাম। চায়ের কাপে চুমুক দিতেই আতিক বললো, টাকা জোগাড় না হলেও আমি আবেদন করতাম না,রেজিস্টার স্যারের কথা শুনতাম না।আর আমাদের এডভাইজর স্যারের ভাব তো দেখছোস আজকে।

ওহ বলতে ভুলে গেছি, আতিকের টাকা জমা দেওয়া দেরি হওয়াতে স্যার কিছুক্ষন কথা শোনাইছে।


আমি দেখেছি সেদিন আতিকের চেহারায় চিন্তার ছাপ! বাস্তবতা কল্পনার ধারের কাছেও নেই।

-Toushik