Mausmai cave দেখে আমরা চলে আসলাম Seven Sister falls আর Noahkalikai falls দেখতে। কেভ দেখে ফেরার পথে আমার রাবারের পাম্প স্যুও ভিজে শেষ। পা ঢুকালেই চপ চপ শব্দ করে। আর এক্সট্রা কোনো জুতা নাই। এই ভেজা জিনিস পায়ে দিয়ে দুইদিন কিভাবে চলবো ভাবছি। এদিকে বৃষ্টি দেখে মনে হচ্ছে আজকে সারাদিনে হয়তো আর থামবে না। সেভেন সিস্টারস দেখার জন্য যখন নামলাম দেখি মেঘ দিয়ে অনেকটা ঢাকা। ফলস বেশ দূরে থাকলেও গর্জন ঠিকই শোনা যাচ্ছিলো। তবে ঝর্ণাগুলার নাম কেন সেভেন সিস্টারস এটা বের করতে পারলাম না। হাজার গুণেও সাতটা ঝর্ণা পেলাম না, আমার কাছে কমই লাগলো
(ছবি দিয়ে দিলাম, গুণে বইলেন তোহ!)।
(Seven Sister falls এর রিয়েল নাম এটা)
এরপর চলে আসলাম কাছেই Noahkalikai falls এ। তবে এর নামকরণের পিছনে যে ফোকটেলস ছিল সেটা বেশ দুঃখজনক। কাহিনী বলবো কিনা বুঝতেসিনা। আচ্ছা শুনেন বাট খারাপ যে লাগবে এই আলার্ট আগে থেকেই দিয়ে রাখলাম।
(Don't read as নোয়াখালী ফলস :3)
likai নামে এক মেয়ে ছিল। যে বিয়ে করে এবং তার একটা মেয়ে হয়। কিছুদিন পর হুট করে তার স্বামী মা'রা যায়, এবং এরপর সে আরেকটা বিয়ে করে। এই নতুন জামাই লিকাইয়ের মেয়েকে ভালো চোখে দেখতো না। তো একদিন লিকাই বাসায় ছিল না। সেই সুযোগে সৎ বাবা মেয়েটাকে খুব ব্রুটালি মে'রে ফেলে। আর লিকাই বাসায় এসে তা জানতে পারার পর কোনো ভাবেই জিনিসটা মেনে নিতে পারে নাই। ব্যথাতুর হৃদয় নিয়ে এই fall এ এসে ঝাপ দেয়। এই likai এর নাম ধরেই পরে ঝর্ণার নাম হয়ে যায় Noahkalikai falls.
(এই যে ফুল স্টোরির ছবির স্টোরি, পরে দেখতে পারেন)।
তো এসব দুঃখের কাহিনী শুনে দুপুরের দিকে আমরা রওনা দিলাম শিলং এর উদেশ্যে। নতুন সুন্দর হোটেলে উঠায় দিয়ে ট্যুর গাইড বললো আজকে আর কোনো স্পট নাই। বাকি বেলাটা নিজেরাই শিলং ঘুরে দেখেন, আর টুকটাক শপিং করতে চাইলে তাও করতে পারবেন।
(হোটেলের সামনের ভিউ)
খালু ওয়েদার ফরকাস্ট দেখে বললো আজকে আর সারাদিনে বৃষ্টি হবে না। আমরা ফ্রেশ হয়ে হোটেলেই লাঞ্চ সেরে খুশি মনে রওনা দিলাম। (আচ্ছা বলে রাখি আমি শপিং ফ্রিক না, ইন্ডিয়ান প্রডাক্টের উপর আগ্রহও কম। essential যেসব না কিনলেই না সেগুলা কিনতাম) (আর আমার সেই ভেজা পাম্পশু পড়ার কোন ইচ্ছা ছিল না। তো বাধ্য হয়ে শেষ সম্বল বাসায় পড়ার step এর স্যান্ডেল পরে বের হয়ে গেলাম। এই স্যান্ডেল পরে আগামী দুই দিন হাইকিং, ziplining সবকিছু করসি :3)।
তো শপিং এর জন্য যেখানে এসে নামলাম জায়গা অনেকটা আমাদের গাউসিয়া-নিউমার্কেটের মতন৷ ফুটপাতে "স্য রুপিয়া লে লিজিয়ে স্য রুপিয়া" হেকে সস্তা জামা জুতা ব্যাগ সেল করছে। কিন্তু ফুটপাতের ভেন্ডর থাকলেও যেখানেই যাই, সবখানেই দোকান বন্ধ। শপিং মলেও সব ফাঁকা। ঢুকে দেখি পোস্টারের সামনে দাঁড়ায় কিছু চেংরা টাইপের পোলাপাইন টিকটক বানাচ্ছে। সব বন্ধ দেখে সন্দেহ হচ্ছিল, ব্যাপার কি। পরে জানা গেল আজকে সানডে। আর সানডেতে শিলং এর সবকিছু বন্ধ থাকে। এমন কি ট্রাফিক পুলিশও ছুটিতে। জিনিসটা আমার কাছে এত অদ্ভুত ঠেকলো। কারণ আমাদের দেশে উইকএন্ডেই মূলত সবাই কেনাকাটা করার সুযোগ পায়। আর দোকানিদের সবচেয়ে বেশি সেলও হয় এই দিনে। ইন্ডিয়াতে এই অদ্ভুত নিয়ম কেন?
তখন কেবল বিকাল। আমাদের হাতে প্রচুর সময়। কিন্তু করার কিছু নাই। তাই হেটেই পুরো এলাকা ঘুরার প্ল্যান হাতে নিলাম। ঘুরতে ঘুরতে ফুটপাত থেকে স্য রুপিয়া দিয়ে একটা ক্যাপ কিনলাম। কিনে কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি ক্যাপের পিছে buckle টা জং ধরা। আবার ফিরে এক্সচেঞ্জ করতে গিয়ে দেখি সব ক্যাপেরই একই দশা। সেলারকেও দোষ দেয়া যায় না। কারণ বৃষ্টির রাজ্য, জং ধরাই স্বাভাবিক। সেলার আমার চেহারা দেখে বললো "কোই বাত নেহি, আপ ইয়ে পেয়্যসা লে লি জিয়ে।" আমি তো থ, টাকা ফেরত দিয়ে দিতেসে?! দেশে হইলে তো প্রডাক্ট এক্সচেঞ্জ করায়ই ছাড়তো, টাকা ফেরত পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। এত ভালো সেলারকে অনেক গুলা দোয়া দিয়ে আবার হাটা দিলাম।
কিছুদূর এসে ছোটবোন পানিপুরি দেখে এক্সাইটেড হয়ে গেলো। আমার কোলকাতায় একবার এই জিনিস খেয়ে আশা মিটে গেসে। ওরও যাতে মিটে যায় সেই দায়িত্ব নিলাম।
আনএকপেক্টেডলি ওর কাছে পানিপুরি ভাল লাগলো! আমাদের দেশের এত মজার ফুচকা খেয়ে বড় হওয়া মেয়ের এই পাইনসা পানিপুরি কেম্নে ভাল লাগলো এখনও ভাবি।
তো যাই হোক, আমরা মোমো খেয়ে (এই জিনিস বেশ মজার লেগেছে, টাকা দিতে গিয়ে দেখি ওনার পূর্বপুরুষ সিলোডি, এজন্যই মজার ছিল :3) ঘুরেটুরে সন্ধ্যায় ছোটখাটো এক ঢাবায় গিয়ে বসলাম। সবাই দোসা খেতে ইচ্ছুক। আচ্ছা একটা জিনিস বলে নেই, জানি এই কথা শোনার পর একটু ভ্রু কুচকাবেন, আমি আসলে কখনও দোসা খাই নাই :3 খাওয়ার খুব ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এ জিনিস খাওয়া হয়ে উঠে নাই। তো প্রথমবার যেহেতু খাবো তাই ভালো কোথাও থেকে ট্রাই করার ইচ্ছা ছিল।
অর্ডার দেয়ার পর যখন এই জিনিস টেবিলে আসলো দেখতে বেশ ভালো আর বড়সড় লাগছিল। মুখে দিয়ে মনে হলো আমি আমার ইহজনমে এত টক জিনিস কখনও খাই নাই। দোকানের খাবার সব south indian ধাচের। ওরা যেরকম টক বা ফ্লেবার খাবার খায় সেই অনুযায়ী ঠিকই আছে, কিন্তু আমার কাছে এই জিনিস অখাদ্য। আমি কোনভাবেই আর খেতে পারি নাই, টিকলি রুপির মায়ায় কিছুটা হলেও গলদকরণ করেছিল।
(লেখাটা decipher করেন দেখি :3)
এখন হোটেলে ফেরার পালা। টুরিস্ট স্পট যেহেতু টাক্সিওয়ালারা নানা স্ক্যাম করে ভাড়া বেশি নিতে পটু৷ আমরা ট্যুর গাইডের থেকে ভাড়া জেনে আসছিলাম, তাই বোকা বানাতে পারে নাই। বাট খালু যাকে ঠিক করলো দেখি সে তালুর মধ্যে বুড়া আঙ্গুল ঘসতেসে৷ সে যে গুল খাচ্ছে বুঝতে বিন্দু মাত্র সময় লাগলো না, আমি একটু উনাফেনা করলেও খালু তাকেই ঠিক করে ফেললো। ভয়ে ভয়ে উঠলেও কথা বলে যট্টুক মনে হলো, মানুষ খারাপ না। সুন্দর মতনই হোটেলের সামনে নামায় দিল। নেমে এত সুন্দর furry একটা পোষা কুকুর দেখলাম (মনে হচ্ছিল হোটেলের মালিকেরই হবে)!
রুমে এসে এরপর আম্মুর সাথে ভিডিও কলে কথা বললাম, দস্যুকে (আমার বিড়াল) দেখে মনটা একটু ঠান্ডা করে পরের দিনের জন্য গুছগাছ শুরু করলাম। পরের দিন একটা হেভেনলি এক্সপেরিয়েন্স হয়েছিল! সেই জিপ্লাইনিং এর গল্প আরেকদিনের জন্য রাখলাম!
Congratulations @rafa-noor! You have completed the following achievement on the Hive blockchain And have been rewarded with New badge(s)
Your next target is to reach 700 replies.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out our last posts:
পড়ে ফেলছি। এখন আমার কি জেল হবে আপু? 😬☺️
যাইহোক ; জায়গাটা কিন্তু চোখ জুড়ানোর মতো ❤️
Hehe, almost all did the same thing, no worries :v
Yeah, it was so soothing!