শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক সমীপেষু,

in #bangladesh6 years ago

 

শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক সমীপেষু,
========================
-এস এম কামাল হোসেন
দেশের বহুল প্রচারিত সংবাদ পত্র “বাংলাদেশ প্রতিদিন”এ এক সময়ের নিয়মিত সিনিয়র সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের অদ্যকার লেখাটি আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়েছি।শুধূ আজকে নয় তাঁর অনেক লেখাই আমি পড়েছি।তার লেখার হাত অনেক ভালো। ভাষার গাঁথুনী,বাক্যের চয়নে তিনি খুবই পটু ।আমাদের এ প্রজন্মের তরুন যে ক’জন সাংবাদিক এবং কলামিষ্ট লেখেন তার মধ্যে তার লেখনি অন্যতম। তবে তাঁর লেখনি একটি নিদিষ্ট গোষ্ঠী তথা মহলের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও মদদ পুষ্ট তাতে করে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।
অদ্যকার তাঁর লেখাটি ১৪০০ শব্দের।লেখাটি দু’টা ভাগে বিভক্ত।লেখার প্রথম দিকে তিনি ১০২৫ শব্দ ব্যবহার করেছেন তাঁর নিদিষ্ট একটি মহলের গুনকীর্তণ করে,বাকী ৩৭৫ শব্দে তিনি তাঁর মত ও পথের বিরোধীর তিনি সমালোচনা করেছেন কঠোর ভাষায়।যদিও মাঝখানে তিনি বি এন পি চেয়ার পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার যৎসামান্য গুণগান গেয়েছেন।অথচ ঐ লেখাটির তিনি যে নামকরণ করেছেন তা কিন্তু ভীষণ আপত্তিকর।শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তার উদ্দেশ্য কিছু বলতে চাই, বলতে চাই একজন সাধারন নাগরিকের যায়গা থেকে। আমারাও ভাই এদেশের নাগরিক। আমাদেরও কিছু লবণ জ্ঞান আছে। আপনাদের মত তুখোর, ঝানু পটু সাংবাদিকের মতো আমাদের লেখনির শক্তি হয়ত নেই কিন্তু আমাদের মন আছে, অনুভূতি আছে, আর আছে সেই সাথে বিবেকও। আমরা আমাদের মনের কথা গুলো হয়ত আপনাদের মতো জাতীর সামনে তুলে ধরতে পারিনা কিন্তু সে গুলো বোবাকান্না হয়ে মনের ভিতরই মজে যায়। আমরা আপনাদের মজ্জাগত বিবেক হীনতার দাসত্বের পুজারীদের শুধু মনে মনে ঘৃণা করেই তুষ্ট থাকি আপনাদের বিবেক হীনতার মাত্রা দেখে।এছাড়া আর আমদের কিছুই করার থাকে না। আপনারা আপনাদের বিজ্ঞাপন চালিয়ে যাচ্ছেন তো যাচ্ছেনই থামার কোন শুভ লক্ষণ দেখিনা।আপনারা ইনিয়ে বিনিয়ে কোম্পানীর বিজ্ঞাপন অনস্ক্রীন চালিয়ে যাবেনই তাতে আমরা কিন্তু মাঝে মাঝে হতবিহ্বল হয়ে যাই।অন্ধত্বের দাসত্বে আপানরা এতটাই নিমজ্জিত যে পানির ভেতর ডুব দিয়েও আপনারা পানির সন্ধান পান না। সাগর চুরির ভিতর দেশটা ডুবে গেলেও আপনারা চুরির উপলব্ধি টুকুও অনুভব করেন না।পিঁপড়ের কামড়ের ব্যথায় আপনারা এতটাই জ্ঞা্ন হারিয়ে ফেলেছেন যে, এখন ও তার বিষে আপনারা ক্ষণে ক্ষণে মুর্ছা যান। আর সাপের বিষের জ্বালায় যে আমরা নিত্য নতুন মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করছি তা নিয়ে আপনাদের মতো নিদিষ্ট কোস্পানী সাংবাদিকের কোন মাথা ব্যথা নেই।বিশেষ করে ক্ষমতাসীন সরকারের বিশেষ সাফল্যগাঁথা যেমন- শেয়ার বাজার ধস,হল মার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লাহ গ্রুপ,মুদ্রা পাচার,রিজার্ভ চুরি, বিদ্যুতে ইনডিমিনিটি দিয়ে চুরি, ডাবল থেকে ট্রিপল টু সেভেন মার্ডার, সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষণ,আবার বাবা মায়ের সামনে মেয়ে ধর্ষণ, পায়ূ পথে হাওয়া দিয়ে খুন, গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় বর্বরতার খুন, বাবা মেয়ের ট্রেনে ঝাপ, জঙ্গি উত্থান, বিনা ভোটের সংসদ, বিনা প্রতিদ্বন্দীয়তায় ১৫৩ সিট, একই সাথে সরকারে আবার বিরোধী দলের আজব সংসদ, রায়ের কারণে বিচারকের দেশ ছাড়া, প্রধান বিচারপতিকে জোড় করে ক্যান্সারের রোগী বানিয়ে বিদেশ ভ্রমনের মাধ্যমে পদচ্যুত করণ, সাগর রুনির হত্যা,তনুর মত হাজারো তনুদের ধর্ষক দের স্বর্গরাজ্যে, প্রকাশ্যে বিশ্বজিতকে ফালি ফালি করে কোপানো, বিরোধী দল ও পথের লোক কে খুন ও গুম, গনতান্ত্রিক চর্চার মৃত্যু, ৭০/৮০ বয়স উর্দ্ধ রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও কোয়ার্টার থেকে শুরু করে হাফ সেঞ্চুরি হয়ে সেঞ্চুরির দিকে বহমান পরিমান মামলা দিয়ে নাস্তানাবুদ করণ,নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবাদির উর্ধ্বগতি, দফায় দফায় তেল,গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো, দেশ প্রেমিক সেনাবাহীনির ৫৩ জন চৌকষ সেনাকর্মকর্তাকে খুন, দেশে রেকর্ড পরিমাপ ৪ কোটি ৬৬ লক্ষ লোক বেকার, প্রশ্ন ফাঁস ও শিক্ষায় ধস, মাতৃগর্ভে ও শিশু অনিরাপদ ইত্যাদি নিয়ে আপনার মতো উজ্জ্বল লেখনির সাংবাদিকের লেখায় তা দেখিনা।শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক পীর হাবিব ভাই, বিনয়ের সাথে প্রশ্ন রাখতে চাই সাম্প্রতিক এক টিভি টক শো তে আপনি সাবেক মন্ত্রী এম মোর্শেদ খানের উদ্ধৃতি দিয়ে সাবেক প্রধান মন্ত্রীর ছেলেদের নিয়ে যে মন্তব্য করছেন তা যে আপনার বিভ্রান্ত মস্তিস্কের কল্পনাপ্রসূত তাতো মোর্শেদ খানের তথ্য ও তত্ত্বগত প্রতিবাদেই প্রতিয়মান। তার পর তো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার তথা দেশবাসীর কাছে আপনার ক্ষমা মার্জনা করার প্রার্থনা করা উচিত ছিল । কৈ আপনি তো তা করলেন না ?
শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক পীর হাবিব ভাই,পরিশেষে এতটুকু বলতে চাই ইটলি মারলে পাটকেলটি তো খেতেই হয়। যদি নিজেকে একজন সত্য ও নির্ভিক সাংবাদিক বলে দাবী করেন তাহলে ষোলো কোটি মানুষের হৃদয় স্পর্শ করা অনুভূতি গুলো নিয়ে লিখুন। তাতে আমাদের মতো অধমের ভালোবাসায় সিক্ত হবেন।আর তা নাহলেও আমার মতো অধমের ব্যথাতুর ভালোবাসাটুকু পাবেন এতটুকু গ্যারান্টি শুধু আমার ব্যক্তিগত গনতান্ত্রিক মন থেকে দিচ্ছি।২৯ নভেম্বর, ২০১৭।