প্যারানরমাল গল্প

in #blog6 months ago

20230828_195425.jpg

মানুষের ছোট্ট জীবনে কত কিছুই না ঘটে ..!মনে পড়লো আমারই এক কাজিনের (খালাতো বোন) সাথে ঘটে যাওয়া একটা অস্বাভাবিক ঘটনা।আমার কাজিন বোনটা আমার সমবয়সী ও আমরা এক ক্লাসেই পড়াশোনা করি। ঘটনাটি আমার কাজিনের মুখে শোনা।

সাল২০১৩, জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে অনেক শীত পড়েছে।আমরা তখন ক্লাস ৯এর শিক্ষার্থী।আমার কাজিনরা ছিল দুই ভাইবোন। ওর ছোটভাই তখন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।আমার কাজিন এর নাম সিমি আর ভাইয়ের নাম ওয়ালিদ।সিমি স্কুল,প্রাইভেট শেষ করে সন্ধায় বাড়ি ফিরেছে।গোসল করে ঘরে এসে ভাত খেতে বসবে।আমার খালা ওদের বললো তোমরা থাকো আমি একটু আসি পাশের বাসা থেকে।ওর ছোট ভাই পড়ছিল।সিমি খাবার খেয়ে বারান্দায় আসলো খালা কে ডাকতে। ওদের রুমের পাশে যারা ভাড়া ছিলেন সিমি ঐখানে গিয়ে দেখলো তালা দেয়া। সিমি তখন সিড়ি বেয়ে নেমে অন্য ভাড়াটিয়া আন্টির রুমে যেতে নেয় এইভেবে হয়ত খালা ওই রুমেই আছে। কিন্তু যাওয়ার পথে সিমি দেখে উঠান দিয়ে খালা ওদের বাসার ছোট গেটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

সিমি ওই ভাড়াটিয়ার রুমে না গিয়ে আম্মু আম্মু ডাকতে ডাকতে ওই হেঁটে যাওয়া মহিলার পিছু পিছু যায়। পিছু যাওয়ার কারণ ওনি কালো শাড়ি পরনে ছিল।আর খালাও কালো শাড়ি পরে ছিল। কিন্তু ওই মহিলা এত আম্মু ডাক শোনার পর ও পিছন ফিরে তাকায় না।সিমি তখন ওনার নিচে তাকায়।সিমি দেখতে পায় শাড়িটি শূন্যের ওপর হেঁটে যাচ্ছে।সিমি সাথে সাথে পিছনে তাকিয়ে আন্টি দরজা খোলেন বলে চিৎকার দেয়।চিৎকার দিয়ে আবার সামনে তাকিয়ে দেখে ওই কালো শাড়ি পরনে মহিলাটি সামনে নেই।সিমি ভয় পেয়ে এক দৌড়ে এসে ওই ভাড়াটিয়া আন্টির দরজায় এসে চিৎকার দিয়ে ডাকতে থাকে।কিন্তু ওই আন্টির ছোট বাচ্চার কান্নার আওয়াজ আর ওনার কানে কম শুনতে পাওয়া সমস্যার কারণে সিমির ডাকাডাকি ওনি শুনতে পান না।সিমি ভয় পেয়ে চিৎকার করে ছোটভাই ওয়ালিদকে ডাকতে ডাকতে একদৌড়ে ওদের রুমে গিয়ে ওয়ালিদ ভুত দেখসি , আর দরজা লাগানো বলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

ওয়ালিদ ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি দরজা লাগায় আর কান্না করতে করতে খালার ফোন(ফোন চার্জে দেয়া ছিল) দিয়ে ওদের রুমের সাথে লাগানো ওই আন্টিকে ফোন দিয়ে বলে আন্টি আপনারা তাড়াতাড়ি আসেন।বাসায় ভুত বের হইসে আপু অজ্ঞান হয়ে গেছে। আম্মু আন্টি তাড়াতাড়ি আসে ওয়ালিদকে দরজা খুলতে বলে। আর ওয়ালিদ ভয়ে ভয়ে ঘরের দরজা খুলে দেয়।এসে তাড়াতাড়ি সিমির মাথায় পানি দিতে থাকে ওর জ্ঞান আসলে সব শোনে।কিন্তু কেউ বিশ্বাস করে না ওর সামনে।কারণ ও ভয় পাবে বলে।

বাড়ির মালিকের অবর্তমানে যে দেখাশোনা করে আম্মু তাকে ফোন দিলে সে আসেন।পুরো বাড়ি খুঁজে দেখে কোনো চোর বা কোনো কিছু কিনা। পরে খালার সাথে উনি কথা বললো যে এই বাসায় এক ভাড়াটিয়া বিষ পান করে মারা গেছে অনেক আগে।মাঝে মাঝে একটু সমস্যা করে কিন্তু বড় ক্ষতি করে না।সিমি শুনতে পায় কথাটা। তখন সিমি সত্যিই বিশ্বাস করে যে সত্যি কিছু তার সাথে ঘটেছে।তার দেখা সত্যিই। পরে বাড়ি যে দেখাশোনা করে ওনি ঝাড়াফুঁকও জানেন ওনি সিমিকে আর ওয়ালিদ কে ঝাড়ফুঁক করলেন ,পানি পড়া দিলেন।বললেন আর সমস্যা হবে না।

এরপরে নাকি সিমি বা অন্য কেউ আর কখনো কিছু দেখে নাই কিন্তু সিমি ভয়ের কারণে অনেক দিন জ্বর ও অসুস্থতায় ভুগেছে।অন্য কেউ বা সিমি কোনো সমস্যায় ও পরেনাই।তবে সিমি খুব ভয় পেত এই ঘটনার পর থেকে। সিমির বেশ কিছুদিন ঝাড়ফুঁক নিতে হয়েছে।আমাকে একদিন সিমি আর ওয়ালিদ মিলে ওদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা শেয়ার করলো।
আসলে অনেক সময় আমাদের অনেকের সাথে অনেক কিছুই অস্বাভাবিক ঘটে। সব কিছুকেই গুরুত্ব দেয়া দরকার।দেখেশুনে সাবধানে চলাফেরা করা দরকার।