আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় পাঠক

in #esteem6 years ago

মোগল আমল থেকেই পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিছু অনুষ্ঠান করা হত। প্রজারা চৈত্র মাসের শেষ পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করতেন এবং পহেলা বৈশাখে জমিদারগন প্রজাদের মিষ্টি মুখ করাতেন এবং কিছু আনন্দ উৎসব করা হত। এছাড়া বাংলার সকল ব্যবসায়ী ও দোকানদার পহেলা বৈশাখে “হালখাতা” করতেন। পহেলা বৈশাখে এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটি মূলতঃ রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন নিয়ম কানুনকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে কাজ পরিচালনার জন্য নির্ধারিত ছিল। এ ধরনের কিছু মূলত ইসলামে নিষিদ্ধ নয়।
কিন্তু বর্তমানে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এমন কিছু কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে যা কখনোই পূর্ববর্তী বাঙালিরা করেনি। পহেলা বৈশাখের নামে যুবক-যুবতী , কিশোর কিশোরীকে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে। আজ থেকে কয়েক বছর আগেও এদেশের মানুষ যা জানত না, এখন পহেলা বৈশাখ বা নববর্ষের নামে তা আমাদের সংস্কৃতির অংশ বানানো হচ্ছে।
আমাদের দেশজ সংস্কৃতির অনেক ভাল দিক আছে। সামাজিক শিষ্টাচার, জনকল্যাণ, মানবপ্রেম ইত্যাদি সকল মূল্যবোধ আমরা সমাজ থেকে তুলে দিচ্ছি। পক্ষান্তরে দেশীও সংস্কৃতির নামে অশ্লীলতার প্রসার হচ্ছে। বেপর্দা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, মাদকতা ও অপরাধ একসূত্রে বাধা। অনন্যা অপরাধ ও অশ্লীলতার মধ্যে পার্থক্য হল কোন একটি উপলক্ষে একবার এর মধ্যে নিপতিত হলে সাধারণভাবে যুবক-যুবতী , কিশোর কিশোরী আর এ থেকে বেরোতে পারে না। বরং আরও বেশী পাপ ও অপরাধে নিপতিত হতে থাকে। কাজেই নিজে, নিজের পরিজন ও সন্তানদেরকে সকল অশ্লীলতা থেকে রক্ষা করুন।
আল্লাহ বলেছেনঃ
“তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্দন হবে মানুষ ও পাথর,যার উপর নিয়জিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফেরেশতাগন, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ দেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হন না।,আর তাদের যা নির্দেশ দেয়া হয় তা-ই তামিল হয়” (সুরাহ আত- তাহরীমঃ ০৬)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেক কেই তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, রাষ্ট্র নেতা তার প্রজাদের সম্পর্কে, একজন পুরুষলোককে তার পরিবারের ব্যাপারে,একজন মহিলাকে তার স্বামীর সার্বিক ব্যাপারে, একজন পরিচালক তার মালিকের সম্পদের রক্ষক,আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।“ (বুখারি-৮৯৩,মুস
লিম-১৮২৯)
এছাড়াও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বারংবার বলেছেনঃ
“তিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করেচেন,তারা হল মাদকাসক্ত, পিতামাতার অবাধ্য ও দাইউস, যে তার পরিবারে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়।" (মুসনাদে আহমাদঃ ২/৬৯)
এখানে ‘দাইউস’ বলতে বোজানো হয়েছে, যে ব্যক্তি তার স্রী-সন্তানদের বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয়।
নিজকে ও নিজের পরিবার পরিজনকে রক্ষা করার পাশাপাশি মুমিনের দায়িত্ব হল সমাজের মানুষদেরকে সাধ্যমত উদ্বুদ্ধ করা।কাজেই পহেলা বৈশাখ বা অন্য যে কোন উপলক্ষে ছেলে-মেয়েদের আবদ মিলামেশা, অন্যায় ও পাপের বিষয়ে সবাইকে সাধ্যমত সচেতন করুন।আর যদি আপনি তা না করেন তবে এ পাপের গজব আপনাকেও স্পর্শ করবে।
অশ্লীলতার প্রসারের ব্যাপারে আল্লাহর ভয়ংকর শাস্তির কথা শুনুনঃ
“যারা চায় যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রচার ঘটুক তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।" (সুরাহ আন-নুরঃ ১৯)
সুতারাং সাবধান হন। আপনি কি আল্লাহর সাথে পাল্লা দিবেন ? মহান আল্লাহ আমাদের সবাই কে হেফাজত করুক।
আমীন।

Sort:  

Hi! I am a robot. I just upvoted you! I found similar content that readers might be interested in:
https://thebarta.com/archives/75954