কিছু লেখার মাঝে থেকে যায় ভুল হয়তো তোমার ভালোবাসার মাঝে কি অাছে অামার তো জানা নেই।

in #esteemapp6 years ago (edited)

মেয়েটার সাথে পরিচয় হইছে এক ঘন্টা আগেই। কোন কাজ নেই, বেকার আমি। তার উপর বন্ধুরাও একেক জন একেক কাজে ব্যস্ত। অনেক চিন্তা ভাবনার পর সিদ্ধান্ত নিলাম পার্কে বসে বসে অন্যদের প্রেম করা দেখবো আর বাদাম খাবো। সেটাই করছিলাম। কিন্তু কোথা থেকে যেন একটা মেয়ে এসে আমার কাজে বিঘ্নতা সৃষ্টি করে আমার কাছে বাদাম চাইলো। চেহারা অনেক সুন্দর । ভিড়ের মধ্যে সবার আগে চোখে পড়ার মত। সুন্দরী মেয়ে বাদাম চাইছে না দিয়ে পারলাম না। তারপর আবার আমার অনুমতি নিয়ে আমার পাশে বসে ও গেলো। কিছু বললাম না।
ব্যাপার টা আমার কাছে সত্যিই অস্বাভাবিক। সেই জন্ম থেকেই আমি সিঙ্গেল। স্কুল লাইফে যাকে ভালোবেসেছিলাম, প্রয়োজনীয় সাহসের অভাবে বলতে পারিনি তাকে। আমার মনের কথা মনেই রেখে দিয়েছিলাম। এরপর আর কোনো মেয়ের প্রতি ভালোবাসার ফিলিংস টা আসেনি। লাইন মারতে চেষ্টা করেছি অনেক। কিন্তু কোনো মেয়ের প্রতি মন না বসায় সেটাও ছেড়ে দিয়েছি। আর মেয়েদের আকর্ষন করার মত যে গুণ গুলো দরকার তা আমার মাঝে খুবই কম ছিল।
তার মধ্যে হঠাৎ এই মেয়েটা এভাবে আমার পাশে বসা, অদ্ভুত লাগলো ব্যাপার টা। তারপর কিছুক্ষণ কথা হলো আমাদের মাঝে। আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করলো। আমিও করলাম। লক্ষ করলাম কথার মাঝে মাঝে মেয়েটার মুচকি হাসি চলে আসছে। ভিতরে যেন হাসির ভান্ডার আছে যেটা সে খুব শক্তপোক্ত ভাবে চেপে রাখার চেষ্টা করছে।
সবই ঠিকঠাক চলছিল। সময় মেয়েটা আমাকে প্রপোজ করলো। আমার কাছে একদম সুবিধেজনক মনে হলো না। প্রাঙ্ক করছে না তো? আশেপাশে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলাম। ক্যামেরা ম্যান বা ক্যামেরা জাতীয় কিছু চোখে পড়লো না।
মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। আমি জানি যেই মূহুর্তে আমি তার প্রপোজাল এক্সেপ্ট করবো সেই মূহুর্তে সে এটা প্রাঙ্ক ছিল বলে অট্ট হাসিতে ফেটে পড়বে। যেই হাসিটা সে খুব যত্ন করে এতক্ষণ চেপে রাখছে। তাকে কিছু বলার বা করার সুজোগ না দিয়ে সোজা ওর ঠোটে কিস করলাম। মেয়েটা একদম হতভম্ব হয়ে গেল। যখন ওকে ছেড়ে দিলাম কান্না শুরু করলো। কাঁদতে কাঁদতে বলল " আপনি কাজটা একদম ঠিক করেন নাই" তারপর একটা সময় হাত দিয়ে গাছের সাথে আটকানো একটা ক্যামেরা দেখালো। জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললাম "তুমি যেটা করতে চাইছো সেটা বুঝি খুব ঠিক ছিল?"।
তখন থেকেই মেয়েটা বাচ্চাদের মত নিচের ঠোট উল্টিয়ে আমার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে রইলো। কিছু বলতে ও পারছে না করতেও পারছে না। আমি আর কিছু না বলে সেখান থেকে সোজা চলে আসলাম বাসায়। ফাজিল মেয়ে প্রাঙ্ক করার জন্য আর ছেলে খুজে পেলিনা??
সেদিন থেকে এই অপরিচিত মেয়েটার সাথে আমার বারবার দেখা হতে লাগলো। কখনো বাজারে। কখনো কলেজের সামনে। কখনো রাস্তায়, কাকতালীয় নাকি মেয়েটা ইচ্ছে করে আমার পিছে ঘুরছে বুঝে উঠতে পারছি না।
সেই ঘটনার ছাব্বিশ দিন পর একদিন....
বাজার থেকে ফিরছিলাম। হঠাত দেখলাম সেই মেয়েটা সামনে থেকে আসছে। ভাবছিলাম প্রতিবারের মতই পাশ কাটিয়ে চলে যাবো কিছু বলবো না। প্রায় কাছাকাছি আসার পর দেখলাম মেয়েটা কেমন করুন চোখে তাকিয়ে আছে। সেই প্রথম দিন এর চাহনি টা। সত্যি বলতে এই চাহনি টা আমার খুব ভালো লাগে। অদ্ভুত মায়া কাজ করে এইভাবে কেউ তাকালে। আর এতদিন কাকতালীয় ভাবে মেয়েটাকে দেখতে দেখতে ওর জন্য মনের ভেতর আলাদা একটা জায়গা আপনা আপনি তৈরী হয়ে গেছে। কিভাবে হইছে কেন হইছে এর উত্তর আমার কাছে নেই। আমি মনে করি পৃথিবীর কোন ব্যক্তিই এর উত্তর দিতে পারবে না। ব্যাপার টা প্রাকৃতিক ভাবেই ঘটে যায়।
সোজা আমার সামনে এসে থেমে গেল। সেই অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে বলল " আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে" এই একটা জিনিস খুব বিরক্তিকর। কেউ আমাকে কিছু অর্ডার করলে আমার তার উপর আমার প্রচন্ড রাগ হয়। এমন কি খাবার টেবিলে যখন আম্মু বলে "বাবা একটু ঝোল দিই"? তখনো রাগ হয়। আমার যা দরকার সেটা আমি নিজেই করবো নিজেই বুঝবো ,নিজেই নিয়ে নিবো। কেউ সেটা নিয়ে কথা বলুক অর্ডার করুক আমার একদম পছন্দ না। মেয়েটা কথাটা এমন ভাবে বলল যেন আমাকে অর্ডার করছে। মেজাজ শান্ত রাখার চেষ্টা করে বললাম,

  • হ্যা বলুন কি বলবেন।
  • এখানে না। প্রথমবার যেখানে দেখা হয়েছিল সেখানে বলবো।
    মেয়েটার কথার মাঝে কিছু একটা ছিল। আমি না করতে পারলাম না।
    সেই আগের জায়গা। সব কিছু আগের মতই আছে। দুজন পাশাপাশি বসলাম। দূরত্বটা ও বেশি না। একটা বাদাম ওয়ালা সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো। মেয়েটা তার কাছ থেকে বাদাম কিনলো। তারপর একটা সময় বলল,
  • খাবেন?
  • না। আপনি কি যেন বলবেন?
    কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
  • আসলে কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছি না।বাকি সব কথা গুলো তোমার অজানা থেকে গেলো।অাপনাদের উৎসাহ পেলে কিছু লেখার জন্য অামার কলমের কালি অাপনাদের জন্য খরচ করবো।