কিছুদিন আগে আম্মুর কথায় আমার পুরনো বই ও খাতা পত্র গোছানোর কাজ করছিলাম। টেবিল থেকে বই ও খাতাপত্তর গুলো নামিয়ে নিচ্ছিলাম মোছার জন্য। সেই আমার স্কুল ও কলেজ জীবনের কিছু জিনিস পেলাম। মনটাই ভালো হয়ে গেল। বত-খাতাগুলোর পাশাপাশি কিছু পুরনো স্মৃতিও ভেসে উঠলো চোখের সামনে। চিন্তা করলাম একটু উল্টিয়ে পালটিয়ে দেখি বইগুলো। কলেজের একটি পুরানো রসায়ন বইয়ের ভাঁজে একটি ঈদ কার্ড খুঁজে পেলাম। কিছু সুন্দর স্মৃতি ছাড়া আমার সংগ্রহে এখন পুরানো তেমন কিছু আর নেই। আসলে সব কিছুই তো একসময় হারিয়ে যায়, ধরে রাখা খুব কঠিন।
কার্ডটা দেখে তাই মনটা ভাল হয়ে গেল। কার্ডের ভেতরে লেখা পড়ে হাসছি। যাকে দেওয়ার কথা তাকে দেয়া হয়নি। কার্ডের কারণে অনেক সুন্দর কিছু দৃশ্য চোখে ভাসছে। মিরপুরের আর্চিস গিফট কর্ণারের ভেতরের সারি সারি ঈদ কার্ড। কোনটা রেখে কোনটা কিনব এমন অবস্থা। এত সুন্দর কার্ডগুলো, দেখে লোভ লাগে। সব কিনে ফেলতে ইচ্ছে হয়।
অথচ, সেই বয়সে টাকাও থাকত না খুব বেশি। টিফিনের টাকা কিংবা দোকানে সদায় কিনার বাড়তি খুচরাটা আব্বাকে ফেরত না দেয়া পয়সা জমানোর দিন সেসব। তবুও, একবছর একটু বেশি কার্ড কিনেছিলাম। সেই কবের কথা। এত দিন পরে সেই কার্ডগুলোর একটা বইয়ের ভাঁজে দেখে কেমন দীর্ঘশ্বাস লাগলো।
আগে এলাকায় ঈদ কার্ডের অনেক দোকান বসত। কিশোর বয়সী ছেলেরাই দোকান দিয়ে বসে যেত, কয়টা বাঁশের খুঁটির উপর কি সুন্দর অস্থায়ী দোকান দাঁড়িয়ে থাকত। নায়ক নায়িকাদের পোস্টার, মিউজিক কার্ড, ঈদ কার্ডে সাজানো। কোনো কোনো মিউজিক কার্ড খুললে শোনা যেত, আই লাভ ইয়ু্... হা হা হা। এসব দোকান এখন আর চোখে পড়ে না এলাকায়।
কার্ডের মধ্যে হাতে লেখা ঈদের শুভেচ্ছা, চার লাইনের ছন্দ মেলানো ঈদের উইশ - এসব খুব মিস করি, এই ডিজিটাল সময়ে। কেউ কোনো কিছু কষ্ট করে হাতে লিখে দিচ্ছে, এর মূল্য কতখানি! আমি হয়ত কেঁদেই ফেলতাম এখনকার সময়ে কেউ হাতে লেখা কোনো কিছু আমাকে দিলে...খুব বেশি চাইতে নেই। মানুষের ইতিহাসটাই হারানোর।
হারিয়ে ফুরিয়ে যা থাকে তা নিয়েই চলতে হয় আসলে। তবুও, খারাপ লাগে। সরল একটা শৈশব, সন্ধ্যার লোডশেডিং, বিকেলের আকাশের মতো চুরি হয়ে যাওয়া সময়গুলো ফিরে পাওয়ার লোভ হয় কখনো কখনো। কিভাবে এগুলো সব হারিয়ে গেল, কি ভয়ানক নিরবে!!! কখন যে এসব 'আদিখ্যেতা' মুক্ত হয়ে জড় পদার্থ হয়ে যাওয়ার জীবনে পা বাড়িয়েছি টেরও পেলাম না...
যদিও আমরা এসব দেখে বড় হয়েছি সে হিসেবে আমরা আমাদের নিজেদেরকে ভাগ্যবান বলতেই পারি, কারন আজকালের শিশুরা এসব জিনিস থেকে বঞ্চিত তাদের বেশির ভাগ সময় কাটে মোবাইলে ভিডিও গেম খেলতে খেলতে। শৈশবের সেই ঈদ কার্ডের স্মৃতিগুলো খুবই অম্লান ছিল।
ঠিক বলেছেন ভাই। ছোট বেলার রোজা, ঈদ, শীতকালীন ছুটি, গ্রীষ্মকালীন ছুটি গুলো খুব বেশি প্রাণবন্ত ছিল। সারাদিন ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন সহ আরও কত খেলা যে ছিল সময় কাটানোর অস্ত্র!!! তাছাড়া গডজিলা, ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট, পোকেমন ছিল বিকেল বা সন্ধ্যার সঙ্গী।
অনেক কিছু একসাথে মনে পরে গেল আপনার কথায়। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আমারও স্কুলের বই গুলো এখনো গুছিয়ে রেখে দিছি মাঝে মাঝে সেগুলো পড়ি,কারণে বই গুলো পরলেই কেমন জেনো স্কুল জিবনের অনেক স্মৃতি মনে পরে যায়।
ছোটবেলায় স্কুল থেকে যখন নতুন বইগুলো পেতাম, কেমন যেন একটা সুন্দর গন্ধ পেতাম। প্রথম কয়েকদিন শুধু বইগুলো নিয়ে শুয়ে থাকতাম, পড়তাম আর সুগন্ধ নিতাম বুক ভরে। মিস করি ফেলে আসা ছেলেবেলাটাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, সময় নিয়ে পড়ার জন্য। আপনার কথাগুলো আমাকে আমার স্কুল জীবনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।
Congratulations @abmamun! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s):
Your next target is to reach 50 posts.
Your next target is to reach 2500 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Check out the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
Thanks for the support.
You're welcome @abmamun 😊👍