দুর্দান্ত এক ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের লড়াই। দীর্ঘ দুইমাস ধরে চলমান এবারের আইপিএলে অনেক নাটকীয়তার সম্মুখীন হয়েছে ভক্ত সমর্থকেরা। কি ছিলোনা এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে? এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত রেকর্ড কোন কিছুরই কমতি ছিলোনা। আইপিএলের শুরুতে রেকর্ড দামে খেলোয়াড়দেরকে দলে ভেড়ানো থেকে শুরু করে সবকিছুই করেছে দলগুলোকে। তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জয় করে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স!
এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে অংশগ্রহণ করেছিলো দশটি দল। সিজনের শুরুতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হট ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিলো। কিন্তু এই তিনটি দলই ব্যর্থ হয়েছে মেঘা ফাইনালে জায়গা করে নিতে। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই এবারের আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেছে সানরাইজ হায়দ্রাবাদ এবং কলকাতা নাইট রাইডার্স। এ দুই দল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে থেকেই গ্রুপ পর্ব পারি দিয়েছিলো।
গ্রুপ পর্বের পর কোয়ালিফাই রাউন্ডেও দূর্দান্ত পারফরম্যান্স করে কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ফলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং রাজস্থান রয়েলকে পিছনে ফেলে আইপিলের মেঘা ফাইনালে জায়গা করে নেয় এই দল দুটি। ফাইনালের আগে দল দুটিকে নিয়ে চলছিলো বহু আলোচনা আর সমালোচনা। অনেকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে এগিয়ে রাখলেও বেশিরভাগ ক্রিকেট বিশ্লেষকই ছিলো কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষে। শেষ পর্যন্ত কলকাতাই চমক দেখিয়াছে মেঘা ফাইনালের লড়াইয়ে!
কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মধ্যকার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় চেন্নাইয়ের এমএ সিদামবারাম ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় রাত আট ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচটি। এই ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ক্যাপ্টেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বিশ্বকাপ জয়ী প্যাট ক্যামিন্স। মূলত পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে শুরুতে ব্যাটিং করে দলটির ভালো পারফরমেন্সই ছিলো এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়কে বেছে নেওয়ার কারন। তারা ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে রানের চাপে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের!
ম্যাচের শুরুতে হায়দ্রাবাদের হয়ে ওপেনিংয়ে আসে দলটির দুই ইনফর্ম ব্যাটসম্যান ট্রেভিস হেড এবং অভিষেক শার্মা। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স করা এই দুই ব্যাটসম্যান ফাইনালে পারফর্ম করতে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হয়। ফলে ম্যাচের শুরুতেই চাপে পরে যায় প্যাট ক্যামিন্সের নেতৃত্বাধিন দলটি। দলীয় ৫০ রান পূর্ণ করার আগেই প্রথম চার উইকেট হারায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। এই চাপ সামাল দিয়ে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয় বাকি ব্যাটসম্যানরাও। ফলে ফাইনালে মাত্র ১১৩ রানেই অল-আউট হয়ে যায় সানরাইজার্স!
কলকাতা নাইট রাইডার্স এর বোলারদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের ফলে ব্যাটসম্যানদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। নিজেদের ৩য় শিরোপা জয়ের দিনে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ভেনকাটেস আইয়ার। মাত্র ২৬ বলে ৫২ রান করে আইয়ার। ফলে সানরাইজ হায়দ্রাবাদের দেওয়া ১১৪ রানের টার্গেট ১১ তম ওভারেই চেজ করে ফেলে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আট উইকেটের জয় নিয়ে তৃতীয় আইপিএল শিরোপা নিশ্চিত করে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের কলকাতা। টুর্নামেন্টের অসাধারণ পারফরমেন্সে ম্যান অফ দা সিরিজ নির্বাচিত হয় কলকাতার খেলোয়াড় সুনীল নারিন!