গান শুনতে পছন্দ করে না, এমন মানুষ বর্তমানে খুজে পাওয়া যাবেনা। কমবেশি সকলেই গান শুনতে পছন্দ করে। অনেকেই নিজের মধ্যে জমে থাকা কথাগুলোকে গানের ভাষায় প্রকাশ করতে চায়৷ কেউবা নিজের মধ্যে জমে থাকা গল্পগুলোকে গানের ভাষায় অনুভব করে। আবার কেউবা নিজের মধ্যে জমে থাকা কষ্টগুলোকে গানের মধ্যে খুজে বেড়ায়।
আমিও গানের প্রতি আসক্ত একজন মানুষ। গানের প্রতি ভালোবাসা ছোটবেলা থেকেই। খুব অল্প বয়সে যখন ক্লাস টুতে পড়তাম তখন বাবা তার প্রথম মোবাইল ফোন ক্রয় করে। সময়টা ২০০৫/৬ এর দিকে হবে। সেটি ছিলো একটি নোকেয়া বাটন ফোন। তার মধ্যে থাকা রিংটোন গুলো আমার খুবই প্রিয় ছিলো।
প্রতিদিন অফিস করে বাবা যখন বাসায় ফিরতো আমি তার কাছে বায়না ধরতাম রিংটোন শোনার। বাবা আমাকে কোনদিন নিষেধ করেনি। তবে শর্ত ছিলো রাত নয়টা পর্যন্ত আগে পড়াশোনা করতে হবে। শর্ত মোতাবেক পড়াশোনা করে প্রায় প্রতিদিনই আমি মোবাইলের রিংটোন শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তাম। তারপর বাবার ক্রয় করা দ্বিতীয় মোবাইল ফোনটি দিয়ে আমি সুযোগ পেলেই সেই সময়কার প্রচলিত গানগুলো শুনে সময় পার করতাম।
গানের প্রতি সবচাইতে বেশি আসক্ততা তৈরি হয় কলেজ জীবনে। কলেজ জীবনেই বাবা আমাকে প্রথম একটি মোবাইল ফোন কিনে দেয় এবং আমার প্রথম ফোনটিই ছিলো স্মার্টফোন। স্কুল জীবনে একেবারে হাবাগোবা ভাবে চলাফেরা করা ছেলেটির কলেজ জিবনে আসে পরিবর্তন। জিবনে প্রথম কাউকে খুব ভালো লাগে শুরু করে। মনের কথার সাথে মিলে যাওয়া গানগুলো শুনতে খুব ভালো লাগতো। তাই খুজে বেড়াতাম নিজের গল্পগুলোর সাথে মিলে যাওয়া গানগুলোকে।
[কলেজ জিবনের শুরুতে সবচাইতে বেশিবার শোনা গান]
কিন্তু একটা সময় এই গানগুলোই পরিনত হতে থাকে অপছন্দের তালিকায়। সময়ের পরিবর্তনে পরিস্থিতি বদলে, বদলে যায় পছন্দের গানের তালিকাও। তখন শুধু কষ্ট দিয়ে পূর্ণ গানগুলোই যুক্ত হয় পছন্দের তালিকায়।
আমার জীবনে সবচাইতে বেশিবার শোনা গানটির নাম “ দীপান্বিতা "। প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ বার এই গানটি শুনা হতো। সবসময় এই গানটির মাঝে নিজেকে খুঁযে বেড়াতাম আমি। মনে হতো আমার জীবনটা হয়তো এই গানটির মতোই। সকাল, বিকাল এবং রাত সবটুকু সময় জুরেই দীপান্বিতা গানটি ছিলো হৃদয় জুড়ে।
সময় অনেক পরিবর্তন হয়েছে, তবে কিছু গান আজও রয়ে গেছে পছন্দের তালিকায়। তানভির ইভানের অভিমান, অভিযোগের মাঝে আমি আজও আমাকে খুজে বেড়াই। আজও দীপান্বিতা গানটি আমার পুরোনো স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়।
[বর্তমানে সবচাইতে পছন্দের গান ]
আজও আমার মন খারাপের সঙ্গী এই গানগুলো। মন খারাপ থাকলে আমি একলা একটা খোলা জায়গায় বসে গান শুনতে খুবই পছন্দ করি। আজও ব্যস্ততার সময়ে কিছু প্রিয় গান আমার অবসাদকে দূর করতে সাহায্য করে।
প্রিয় গানগুলোর মাঝেই ভালো থাকতে চাই বাকিটা জীবন।