অশোকের বুদ্ধ ভক্তি

in BDCommunity2 years ago

ইতিহাসের আমার সবচেয়ে প্রিয় সম্রাট, সম্রাট অশোক।
যেন বাস্তবের নয়। তার জীবনাচার কোনো ফ্যান্টাসি বই থেকে উঠে আসা নায়ককেও হার মানায়!

ভারতীয় উপমহাদেশের তৃতীয় মৌর্য সম্রাট। ভারতবর্ষের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সম্রাট দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ ব্যতীত ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল শাসন করেন।
সম্রাট অশোক একজন "সর্বভারতীয় সম্রাট" বলা যায়।
সম্রাট অশোক শাসক হিসাবে কম, ধর্মীয় পৃষ্ঠপোষকতা আর সংস্কৃতমনা ও এর সমাদরের কারণেই স্মরণীয় বেশী।

দ্বিতীয় শতাব্দীতে টলেমি তার মানচিত্রে রামুকে চিহ্নিত করেছিলেন।
রামু সম্ভবত সেইসবের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন শহর, যেখানে একসময় অন্যদের মধ্যে আধিপত্য ছিল, পর্তুগিজ, বার্মিজ, আরাকানি, ত্রিপুরা এবং ব্রিটিশরা এখন বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

রং-উ রামকুট (রাংকুট) বৌদ্ধ মন্দির
সম্রাট অশোকের নিজের রেখে যাওয়া চিহ্ন!

সে প্রায় ৩হাজার বছরের পুরোনো স্থাপত্য। কত সভ্যতার উত্থান পতনের সাক্ষী!

244385427_252786953462675_1008985259241292371_n.jpgমন্দিরের প্রবেশ পথ

এই বৌদ্ধ মন্দিরটি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী, সম্রাট অশোক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বলে জানা যায়। সম্রাট অশোকের সময়ের অনেক প্রাচীন বৌদ্ধ অবশেষ এখানে সংরক্ষিত আছে।

এ ব্যাপারে নাকি স্বয়ং বুদ্ধ ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। যুদ্ধ পরবর্তী পলায়নের সময় তৎকালীন সমতটের চৈত্যগ্রামের (বর্তমান চট্টগ্রাম) পশ্চিম সমুদ্রের পূর্ব তীরে গৌতম বুদ্ধের বক্ষাস্থিকে ভিত্তি করে একটা মন্দির স্থাপিত হবে যার নাম হবে-
রাং (বুদ্ধের বুকের অস্থি) কূট (স্থান)।

241266387_252786926796011_2953293223870429971_n.jpg মন্দিরের প্রবেশ পথেই তাই খচিত অশোকের বিশাল মূর্তি

যেমনটা বুদ্ধের একনিষ্ঠ ভক্ত হিসাবে
সম্রাট অশোক, বুদ্ধের অস্থি সংযোজিত ৮৪ হাজার চৈত্য স্থাপন করেছিলেন (৮৪ হাজার ধর্মবানীকে ভিত্তি করে)।
যার মধ্যে অন্যতম রামুর এ চৈত্যটি।

পরবর্তীতে আরকান রাজা চেঁদিরাজ সে বক্ষাস্থিটি বুদ্ধ-মূর্তির মাথায় স্থাপন করে প্রধান মন্দিরের সামনে সাদা পাথরের উপর স্থাপন করেন মূর্তিটা।

সে হাজার তিনেক বছর আগে কেমন নান্দনিক ছিল সেটা দেখা না গেলেও, বর্তমানের কাজের ছাপ অন্তত কিছুটা জাঁকজমকপূর্ণ সে কারুকার্জের প্রতিফলন ঘটায় বটে।

মন্দিরে ঢোকার প্রবেশ পিথের সিঁড়ির দু'পাশে রেলিঙ বেয়ে ঢেউ খেলিয়ে নেমে যাওয়া একজোড়া ড্রাগনের মত সাদা সর্প।

240580013_252786670129370_9141696615981049586_n.jpg প্রধান মন্দিরে ওঠার সিঁড়ি

সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে এই কনস্ট্রাকশনকে একদম জীবন্ত মনে হয়!
240517602_252787003462670_1889498247582939162_n.jpg পদ্মাসনের চারপাশে মঙ্গলবাতি

বিশেষ করে শেষ বিকেলের বনের মাঝে ঘনিয়ে আসা ছায়ার মাঝে যখন একটা পর একটা মঙ্গল বাতি জ্বলে উঠতে থাকে, আশেপাশের আঁধার যেনো আরো ঘনীভূত হয়।
240527875_191166519811021_8999395768216997881_n.jpg

মন্দিরে প্রবেশের পথে এই যে মূর্তিটি, কাঁচের বাক্সের ভেতর, এটিই সেই বুদ্ধ-মূর্তি যেটাতে বুদ্ধের বক্ষ-পিঞ্জরের হাড়ের একটা টুকরা রাখা আছে!

আমি যেবার গিয়েছিলাম, মন্দিরের সংস্করণ চলছিল।
বহুবছরের, সসভ্যতার ইতিহাসের উত্থান-পতনের পরও আজো টিকে আছে মন্দিরটি।

244805842_191166913144315_7223871291419032496_n.jpgশেষ বিকেলে উচ্চাসন থেকে মন্দিরের পারিপার্শ্বিকের দৃশ্য

All the contents are mine, until the source’s mentioned 

Sort:  

You post has been manually curated by BDVoter Team! To know more about us join our Discord.


Delegate HIVE POWER to us & earn HIVE daily.

FOLLOW OUR HIVE AUTO CURATION TRAIL

মন্দিরটা বেশ সুন্দর। পাসপোর্ট করতেছি ভারত ঘুরতে যাবো বলে 🙂

অবশ্যই অবশ্যই। পাসপোর্ট এমনিতে থাকাও ভালো।

Hi @fahmidamou, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rem-steem!


Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.

JOIN US ON