চকচক করলেই সোনা হয় না

in BDCommunity2 years ago

বর্তমান সমাজে প্রকৃতপক্ষে ভালো মানুষ খুজে পাওয়া দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় মানুষের উপরে সুন্দর রুপ কিন্তু ভিতরে তাদের আসল রহস্য। যেমন চকচক করলেই খাটি সোনা হয় না। কারন অনেক ধাতু আছে যা দিয়ে সোনার রুপ দেয়া যায়, সোনার বর্ন ধারন করানো যায় কিন্তু সেটা আসল সোনা হয় না। এমনি রূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের বর্তমান সমাজে। অনেক মুখুশ পড়া ভদ্রলোক কিন্তু তাদের ভেতরটা প্রকৃতপক্ষে ভালো নয়। আমরা ছোট বেলায় স্কুলে পড়ে আসছি চকচক করলেই সোনা হয় না এমন ভাবসম্প্রসারন। সেই তখন থেকেই আমরা বুঝে আসতেছি এর মুল কথাটি। বর্তমানে আমরা এখন অনেক বড় যে ভুলটি করি সেটাই হলো এই মানুষ চেনা। আমরা মানুষের উপরের সৌন্দর্য দেখে ধারনা করে ফেলি সে অনেক ভালো মানুষ।

আমরা এখন বেশির ভাগ সময় দেখি মানুষ মানুষকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে না পাড়ায় নানা ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। কতো মানুষ তাদের জীবন হারাচ্ছেন এবং তাদের সম্পদও হাড়িয়ে ফেলছেন শুধু মাত্র সঠিক ভাবে মানুষ চিনতে না পাড়ার কারনে। মানুষের উপরের রূপ সৌন্দর্য দেখে সবাই ভেবে ফেলে উনি অনেক ভালো মানুষ হবে এটাই সব থেকে বড় ভুল। কারন এখন একজন প্রতারকও নিজের দোষ গুন গুলো ভিতরে চেপে রেখে বাহিরে চলাফেরা করে। সে নিজেকে এমন ভাবে সাজিয়ে রাখে মনে হয় সে সমাজের বা দেশের অনেক ভালো এবং সৎ একজন ব্যক্তি। আমরা তাদের কাছে গিয়ে সব বিসর্জন দিয়ে ফেলি। একারনেই আমরা বেশি প্রতারণার শিকার হয়ে যাই।

আগের দিনে দেখতাম আমাদের বাবা চাচা, দাদা দাদিরা ছেলেদের বিয়ের জন্যে মেয়ে দেখতে যেতো। সেখানে গিয়ে মেয়েদের খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতেন। মেয়ে কে নানা ধরনের প্রশ্ন করতেন এরপর তারা সিদ্ধান্ত নিতেন মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিনা। তখন মেয়েদের এমন অদ্ভুত প্রশ্ন গুলো করা হতো মা দেখি তো একটু হেটে দেখাও, মা তোমার চুল গুলো দেখিতো, মা একটু হেসে দেখাও তো, মা তুমি ফাতেহা সুরাটা পড়ে শুনাও তো ইত্যাদি এমন আরো কত রকম প্রশ্ন করেই তারা ঠিক করতেন মেয়ে তাদের ছেলের জন্যে সঠিক কিনা। তাদের এমন অদ্ভুত নিয়মটাই আমার কেমন জানি মনে হয় ঠিক ছিলো। কারন আমরা দেখি বর্তমান সমাজে এতো পরিমানের পারিবারিক সমস্যা হচ্ছে। শাশুড়ী বউকে দেখতে পারে না, বউ শাশুড়ী কে দেখতে পারে না। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদাভাবে সংসার গড়ার চিন্তা এইসব যেনো আমাদের সমাজে নিত্য নতুন ঘটনা। কিন্তু আমরা আগের দিনে যেটা দেখতাম বর্তমানের মতো ছিলো না কোন ছাড়াছাড়ি, ছিলো না এখনকার মতো এমন শাশুড়ী বউয়ের এমন পরিস্থিতি। এর কারন হচ্ছে আমরা এখন মেয়েদের ভিতরের গুন দেখি না, আমরা দেখি মেয়ের বাহিরের সৌন্দর্য। আমরা। মনে করি একটি মেয়ে সুন্দর দেখতে হলেই সেই মেয়ে ভালো হবে। যার ফলে দেখা যায় একটা মেয়ে উপরে সুন্দরী কিন্তু তার ভিতরটা একদম ফাকা থাকে। এর জন্যে বর্তমান সমাজে এতো সমস্যার তৈরি হচ্ছে।

মানুষ না চেনার কারনে এমনও অনেক বড় বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। এর জন্যে আমাদের নিজেদের এমন ভাবে তৈরি করে নিতে হবে যেনো আমরা এমন ভুল করার আগে হাজার বার ভাবতে পারি এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি। কারন বর্তমান সমাজটা এখন আর কারও জন্যে ভাবে না কারও জন্যে বসে থাকে না। কে কাকে ঠকিয়ে উপরে উঠতে পারবে এই চিন্তা নিয়েই সবাই ফাদ পেতে বসে থাকে। তাই আমরা উপরের সৌন্দর্য দেখে মগ্ন না হয়ে যেকোন মানুষ কে বিশ্বাস করার আগে তার ভিতরটা চেনার চেষ্টা করা উচিত। একটা মানুষের উপরের সৌন্দর্য দেখে কখনও তার উপর বিশ্বাস করে সব বিসর্জন দিবো না।

1661539971676-01.jpeg

Sort:  

এখন নাকি বিয়ে করার আগে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে চিনার প্রয়োজন হয়,একসাথে ঘোরাঘুরি এমনকি লিভ টুগেদার করে যাচাই করে নিতে হয়, এতে নাকি তাদের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হয়।
কিন্তু দেখা যায়,ইদানীং এতোসব করে যে পরিমাণ বিচ্ছেদ হচ্ছে, আর আগে বিয়ে করার পর চিনেও আমাদের বাপ-দাদারা এক বউ এর সাথে পঞ্চাশ, ষাট বছর কাটিয়ে কবরে যাওয়ার পর বিচ্ছেদ হয়েছেন।

হ্যা। এখনকার স্বামী স্ত্রীর আর আগের দিনের স্বামী স্ত্রীর দের মধ্যে রাত দিন তফাৎ।