অনেক দিন পর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে একটি বড় পোগ্রাম সম্পন্ন হলো। আজকের অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিলেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ক্লাব সদস্য। তারা অনেক সুন্দর ভাবে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন কোন প্রকার সমস্যা ছাড়া। আজকের এই অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে ছিলেন মুনজেরিন শহীদ, শিরোনামহীন ব্যান্ড এবং হাওয়া সিনেমার টিম মেম্বার। অনেক দিন পর এতো বড় একটি অনুষ্ঠান হওয়ায় অনেক বেশি পরিমান ছাত্রছাত্রী ছিলেন অনুষ্ঠানটিতে। তবুও এতো পরিমান ছাত্রছাত্রী হওয়ার পরেও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছেন আজকের অনুষ্ঠান।
আমাদের ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে প্রতি নিয়তই অনুষ্ঠান হতো। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়ার কারনে সকল ক্লাস অনলাইন হওয়ায় ক্যাম্পাস তেমন কোন অনুষ্ঠান হয়নি অনেক দিন যাবত। আমরা শুরুতে যখন ভর্তি হয়ে ক্যাম্পাসে আসি তখন দেখা যেতো প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন ডিপার্টমেন্টের পোগ্রাম থাকতো। তখন শুরুতে আমরা সকল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতাম। কিন্তু একটা সময় দেখা যেতো আমরা পোগ্রাম দেখতে দেখতে পরে অনুষ্ঠান দেখার ইচ্ছে কমে গিয়েছিলো। তখন অনুষ্ঠান হলেও আমরা ক্লাস করে রুমে চলে আসছি। আবার ক্লাস না থাকলেও আমরা রুমেই ঘুমিয়েছি বা সবাই গল্প করেছি কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসের অনুষ্ঠানে তেমন যাইনি।
দেখতে দেখতে এভাবেই আমাদের প্রায় শেষ মুহুর্তে চলে এসেছি। এখন হইতো চাইলেও আর আগের সেই শুরুর দিন গুলোতে ফিরে যেতে পারবো না। তখন যেমন আনন্দ করেছি ছোট বড় সকল অনুষ্ঠানেই। কিন্তু এখন আমাদের মাঝে সেই আগের মতো আনন্দ করাটা খুজে পাইনা। নিজেকে কেমন যেনো মনে হয় বড় হয়ে গিয়েছি। মনে হয় এখন আর আগের মতো সেই আনন্দ করার সময় টা আর নেই। আনন্দ করবে নতুন যারা ক্যাম্পাসে এসেছে তারা। এতো দিন পরে ক্যাম্পাসের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছি ভাবছি সবাই মিলে অনেক আনন্দ করবো, কিন্তু কি হলো সবটাই তার বিপরীত হলো, চুপটি করে এক স্থানে দাঁড়িয়ে শুধু অনুষ্ঠানটি উপভোগ করলাম। এটাই হইতো আমাদের বড় হওয়ার প্রতিফলন।
আজকের পোগ্রামে এতো ছাত্রছাত্রী হবে আমি নিজে দেখেও অবাক হয়ে গিয়েছি। কারন আমাদের ক্যাম্পাসে এতো পরিমান পোগ্রাম হওয়ায় সবারই অনুষ্ঠানের প্রতি অনিহা তৈরি হয়ে গিয়েছিলো। অনেক দিন পরে এতো বড় একটি অনুষ্ঠান ছিলো আর তার থেকে বড় কথা হলো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি গুলো সবার কাছে বেশি পছন্দনীয় ছিলো। বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের জনপ্রিয় ব্যান্ডের মধ্যে শিরোনামহীন অন্যতম। কম বেশি সকলেই এই ব্যান্ডের গান শুনে থাকেন। যার জন্যে সবাই অনেক বেশি আগ্রহে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলো। আবার বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের প্রচলিত সব থেকে বেশি জনপ্রিয় সিনেমা 'হাওয়া'। এই হাওয়া সিনেমার টিম মেম্বার অনুষ্ঠানে থাকবে। যার জন্যে আরো বেশি ছাত্রছাত্রী হয়েছিলো আজকের অনুষ্ঠানে।
যাইহোক আজকের অনুষ্ঠানের সব কিছু অনেক সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছি। হইতো হতে পারে আমাদের ভার্সিটি জীবনের এটাই শেষ পোগ্রাম। এটা ভেবে কষ্ট লাগে যে আর চাইলেও আমরা পারবো না এতো সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে। কারন তখন আর আমাদের এই সময়টাই হয়ে উঠবে না। সত্যি বলতে কি সময় কারো জন্যেই বসে থাকে না এটা চিরন্তর সত্যি কথা। আর বাস্তবতা এটাই আমরা আজ যেখানে আছি, কিন্তু কাল সেখানে থাকবো না। এভাবেই সবাই আসবে যাবে কিন্তু ক্যাম্পাস ঠিক আগের মতোই থাকবে। ক্যাম্পাসে সেই আগের মতোই ক্লাস হবে পোগ্রাম হবে। এটাই আমাদের জীবন সংগ্রাম, কিছু হারিয়ে ফেলবো আবার নতুন কিছু ফিরে পাবো।
একটা সুন্দর ব্যবস্থাপনাই পাড়ে একটা সুন্দর অনুষ্ঠানের সুন্দর সমাপ্তি ঘটাতে।
মানুষ একটা সময় দেখে আনন্দ পায়, একটা সময় নিজের মাধ্যমে আনন্দ পায় আবার একটা সময় অন্যদের আনন্দ দেখে আনন্দ পায়। আমরা মানুষ এভাবেই সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে থাকি এবং ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আনন্দ পেতে থাকি।
হ্যা। আমাদের বয়সের সাথে সাথে আমাদের চিন্তাধারা যেমন পরিবর্তন হয়। তেমনি আমাদের আনন্দ পাওয়ার মাধ্যম গুলোও পরিবর্তন হয়।
প্রচুর শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছে দেখা যাচ্ছে,তবে এর একটা কারণ হয়তো শিরোনামহীন😉
হ্যা।