লাল এটেঁল মাটি পানি ধরে রাখতে পারে বেশি, তাই কাদাঁও হয় প্রচন্ড;আঠাঁলো কাঁদা।জুতা কোম্পানিও এতোটা লেয়ার যুক্ত সোলের জুতাঁ বানানোর পরিকল্পনায় কোনোদিন ছিলো নাহ বলেই ধারনা।
আমার সেই লাল মাটির পাড়ায় আবার আসছি গত দশ বছর পর! কি বিষন্ন সুন্দর লাগছে! প্রাক্তন পাঁয়ের চিহ্নের কাছে এসে,জুতায় লেগে থাকা মাটি দেওয়ালের ইটের সংগে চেঁচে তুলছিলাম, যেমনটা নারেকেল কোরানি দিয়ে নারকেলের সাদা অংশ আলাদা করে! মনে পরে যাচ্ছে।তাই তো! মনে পরে যায়, মনে হয়।
আমাদের দুই ভাইবোনকে ভালো স্কুলের বিদ্যা দেবার জন্যই হয়তো বাবা বললেন,”আমরা আগামী সপ্তাহের মাঝেই শিফট হচ্ছি, আর এখানকার বাড়িটা ভারা দিয়ে দিবো”
তারপর ভালো বিদ্যার চাপে আশা হয়নি অনেকদিন; দশ বছর অনেক সময়!বাবার চুলের পাক ধরার জন্য যথেষ্ট।আজো বৃষ্টি হচ্ছে ; আজো মাটিতে বৃষ্টির পানি এমনভাবে পড়ছে যেনো পরে আরাম পাচ্ছে…।
বৃষ্টির ঝাট দেখে ঊঠান থেকে রুমের ভেতর গিয়ে বসলাম, ভাড়াইটিয়ার রুম।ভাড়াটিইয়ার চায়ের কাপে ,চুমুক দিতে দিতে স্টিলের দরজার দিকে তাকাতেই ছোটোবেলার চুংগামের সাথে পাওয়া স্টিকার চোখ পরলো ; এখোনো আছে এগুলো! পলি-ইথিন এই পলিমারটাকে আমার ভালো না লাগলেও আজকে আমাকে সময় পরিবহনের মেশিনে করে, ভিন্ন সময়েই নিয়ে যাচ্ছে !সুখানুভুতিটা খুবই তীব্র!
মানুষের ম্যামোরি সেলগুলোর চাবি কি “কমন চাবি”! এমন যে, একটা খুললেই সব খুলে যায়! সব যাচ্ছেও খুলে …।
আমাদের এলাকায় যারা জমির মালিক, তারা জমির চারপাশে দেওয়াল দিয়ে প্লট করে বিক্রি করে।।বিক্রি এবং বাড়ি তোলার আগ অবধি, এই ছোটো ছোটো জায়গাগুলো আমাদের কাছে শর্ট পিচ খেলার জন্য বেজায় প্রিয়।সেদিন এমনই এক প্লটে খেলছিলাম আমরা , বন্ধু সকলে দলে ভাগাভাগি হয়ে একদল ব্যাটিং করছিলো, আরেকদল ব্যাটসম্যানের চারদিকে ঘিরে দাড়িঁয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করছিলো যাতে বল বাউন্ডারি না ছোঁয়; নয়তো চার হয়ে যাবে! ব্যাটস্ম্যান ছিলাম আমি;লেগ স্ট্যাম্পের ওপরে ছিলো বল; একটু পেছনে পা দিয়ে লেগ বাউন্ডেরীর দিকে ব্যাট ঘোরাতেই বল লাগলো পাশের বাসারর কাচে! কাচ ভাংগার শব্দ বাতাসে মিলাতে না মিলাতেই প্লটটা খালি হয়ে গেলো! হা হা হা!
আমার বুকের হ্রদস্পন্দন তখনো আমি নিজের কানে শুনছিলাম! ভয়ে সোফার এক কোনে বসে সৃষ্টিকর্তাকে যা বলে খুশি করানো যায় সে চেষ্টায় রতো ছিলাম, মিনিট পার হয়ে ঘন্টা, কেউ এলো নাহ বিচার নিয়ে! ভাবলাম সৃষ্টকর্তাকে খুশি করতে পেরেছি হয়তো!সোফার কোন থেকে মাথা বের করতেই
“ভাবি, আপনার ছেলে কই”
“ও তো খেলতে গিয়েছে! আপনার বাড়ির ওখানেই তো খেলে”
“সে আজ আমার জানালার কাচ ভাংছে”
“ও বাসায় আসুক, আজকে ওর একদিন কি আমার একদিন”
আম্মু ঘরে ঢুকতেই আধা ক্রন্দনরতো আমি একবার উনার দিকে তাকিয়ে ,মাটির দিকে তাকাই।দৃষ্টি কয়েক মিলিসেকেন্ডের জন্য হলেও এক সুতায় গাথা ছিলো!
“কি হয়েছে আমার আব্বুর, ভাংছে ভাংছে তোর আব্বুকে বলে , কিনে দিতে বলবো”
কয়েকঘন্টা পর আমি আবার স্বাধীন পাখির মতন যাচ্ছিলাম চেনা পথটা ধরে, প্রত্যেক টিনশেড বাড়ির; প্রত্যেকটা ইট, আমাকে চেনে!আমি এই লাল মাটির রাস্তায় কতো রক্ত দিয়েছি,পরে গিয়ে হাটু ছিলে! এই মাটিও তাই আমার বিচরন সাচ্ছন্দে নেয়!খুব আদুরে আমি সবার…।
“আব্বু বলেছে আপনার কাচের টাকা পরিশোধ করে দিবে”
আমার দৃষ্টিতে ছিলো না কোনো ভয় , কনো অপরাধবোধ আমাকে ছোঁয়ার সাহস পাচ্ছিলো নাহ তখন!
এভাবেই বড়ো হচ্ছিলাম
টিনের চালে বৃষ্টির আওয়াজ শুনে
বর্ষায়, ছোটো পুঁটি ধরে!
ডিসের লাইন যার বাসায় আছে ,তাকে বড়োলোক ভেবে!
বিটিভির তিনটার উডিউটপেকার(কার্টুন) দেখে।
প্রচন্ড রোদে বোনের সাথে এক ছাতায়, স্কুল থেকে ফিরতে ফিরতে।
কেটে যাচ্ছিলো আমার না ফিরে পাওয়া দিনগুলো , আমার লাল মাটির দেশে!
হা হা কাচ ভাঙগানোর গল্পটা অনেক কিছু মনে করিয়ে দিল। কতোই না জ্বালাইলাম প্রতিবেশিদের।
hum vai..amr chotobelah amn onk hoieache..
আমরা তো পাশের বাসায় ভাড়ায় থাকা হজমোলা আন্টিকে বিরক্ত করে খাইছিলাম।
ha ha.. vaggoban amra j amader life ato colourful chilo
আসলেই। এখন তো সব স্কুলের বই প্রাইভেট কোচিং মোবাইল ফেসবুক ইউটিউবে সীমাবদ্ধ হয়ে পরেছে।
hmm
ভালো লিখেছেন ভাইয়া 😊
Shuvo sokal vai
ar osonkho dhonnobadh likha ta somoy nia porbar jnnow..
Congratulations @nirupom.azad! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Do not miss the last post from @hivebuzz:
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!