আমাদের বন্ধু শকুন

in BDCommunity5 years ago

অবসর সময়ে ইউটিউবে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ উপস্থাপক হানিফ সংকেত'র জনপ্রিয় অনুষ্ঠান 'ইত্যাদি' দেখছিলাম। এ অনুষ্ঠানের নিয়মিত দর্শক আমি। একটা বিষয় দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সেখানে শকুন সম্পর্কে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
pexelsphoto145957.jpeg

Image

অনেকেই মনে করেন শকুন আমাদের জন্য শত্রু কিন্তু বাস্তবে শকুন আমাদের বন্ধুর মতো উপকার করে থাকে। এই পাখি প্রকৃতিকে পরিস্কার করে পরিবেশকে দূষণ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। এ জন্য শকুনকে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতা কর্মীও বলা হয়। এরা মূলত প্রাণীর মৃত্য দেহ খেয়ে বেঁচে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে শকুন অনেক জীবানু ধ্বংস করে। শকুনের পাকস্থলী এনথ্রাক্স, কলেরা, ক্ষুরারোগসহ অনেক জীবানু হজম করতে পারে। তাই মৃত দেহে এসব রোগের জীবানু থাকলেও শকুনের কারণে তা ছড়াতে পারে না।

এতো উপকার করলেও আমরা শকুনের যথাযথ মর্যাদা দিতে পারিনি। গত দুই যুগে শকুন প্রায় বিলুপ্তির পথে। শুধু যে বাংলাদেশে শকুনের পরিমাণ কমেছে তা নয়। সারা পৃথিবীতে শকুনের পরিমাণ ৯৯.৯৯ শতাংশ কমেছে। আর শকুনের কমে যাওয়ার কারণ আমরা। পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেন নামক ঔষধের ব্যবহারের কারণে শকুন কমে যাওয়া কারণ বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এই জাতীয় ঔষধ হজমের জন্য শকুনের শরীরে কোনো এনজাইম নেই।

শকুন অনেক জীবানু ধ্বংস করতে পারে কিন্তু ডাইক্লোফেনাক নামক এই ঔষধের কাছে হার মেনে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি খাওয়ার দু'দিনের মধ্যে শকুন মারা যায়। এটা জানার আগেই পৃথিবীতে কোটি-কোটি শকুন মারা গেছে। দিনে দিনে যে হারে শকুন কমছে, সে হিসেবে মনে হচ্ছে ডাইনোসরদের মতো শকুনও খুব দ্রুত বিলুপ্ত হবে।

তাদের বিলুপ্ত রুখে দাঁড়াতে বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের কিছু করণীয় আছে। সমাজে প্রতিটি মানুষের মাঝে গণসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা, গবাদি পশু লালনপালন করেন এবং যেসকল পশু চিকিৎসক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন তাদের মাঝে ডাইক্লোফেনাক নামক ঔষধের ক্ষতিকর দিকটি তুলে ধরতে হবে। সৃষ্টি করতে হবে সচেতনতা। ডাইক্লোফেনাক নামক এই ঔষধের ব্যবহার কমিয়ে এর বিপরীত ঔষধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।