পুকুর পাড়ে বসে আছি।এক দেড় বছরের একটা বাচ্চাকে তার ভাই কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,যার বয়স আট-নয় বছর হবে।ভাই এর সাথে খেলা করছিলো।দুষ্টামি করে বলছিলো,পুকুরে নামতে।দুষ্টামি করতে করতে বাচ্চাটা পানিতে পরে গেলো।তার ভাই দৌড়ে গিয়া সাথে সাথে তুলে ফেলাতে,বেশি কিছু হয় নাই।নাকে-কান দিয়ে একটু পানি ঢুকছে,এইটুকুই।তবে বড় কোনো বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।
বাচ্চাটাকে বাড়িতে নিয়ে চলে গেলো,একটু পর দেখলাম ঐ ছেলে হাতের মুষ্টিতে করে কিছু চাল এবং টাকা নিয়ে আসলো।আমি জিজ্ঞেস করলাম,এগুলো কি করবি?
সে মুষ্টির চাল ঢিলা দিতে দিতে বললো,তার বলছে, তিন মুষ্টি চাল আর টাকার কয়েনটা এখানে ফেলতে।আমি চিন্তা করতে থাকলাম,কেনো এটা করতে হবে।
তখন বুঝতে পারলাম,আসলে বেপারটা হচ্ছে, তাদের মতে,পুকুরটা খাবার চাচ্ছে, তার জন্যই বাচ্চাটাকে টেনে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলো,যেহেতু নিতে পারে নাই,তাই ঐ চাল আর টাকা দিয়ে পুকুরের খিদা মিটিয়া দেওয়া হয়েছে।যাতে পরবর্তীতে আর কোনো দিন পুকুর পাড়ে আসলেও টেনে নিয়ে না যায়।
ঘটনাটা শুনতে হাস্যকর মনে হলেও,গ্রামের মানুষের কাছে এইসব কুসংস্কারে বিশ্বাস করা স্বাভাবিক। তারা আজব আজব জিনিসে পূর্ণ বিশ্বাসী।ধর্মের দিক দিয়েতো এগুলোর কোনো ভিত্তি নাই বরং নিন্দনীয়। আর বৈজ্ঞানিক দিক দিয়েতো পুরোই হাস্যকর।
কেউ কোথায় যেতে বের হলে,পিছু না ঢাকা,পিছু ঢাকলে বিপদ হবে।
গলায় কাটা বিঁধলে বিড়ালের পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়া,কারণ কাটা বিড়ালের খাবার,সেই খাবার খেয়ে মানুষ বিড়ালের প্রতি অন্যায় করে।আর অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত হিসাবে বিড়ালের পা ধরে ক্ষমা চায়।
মেহমান আসলে,খাবার খাওয়ার পর,মেহমান যদি সেই খাবারের প্লেট নিজে ধুঁয়ে, পানি বাহিরে ফেলে দেয়,তাহলে আরেকদিন ঐ বাড়িতে আসলে সে আর খাবার পাবে না।
এক বাড়িতে তিন বৌ একসাথে গর্ভবতী হলে,এক বৌয়ের বাচ্চা ডেলিভারি হতে অবশ্যই সমস্যা হবে।
ভাঙ্গা আয়না দিয়ে মুখ দেখা যাবে না।
ছিঁড়া গামছা দিয়ে শরীর মুছলে,টাকা আসবে না।
হেঁটে হেঁটে দাঁত ব্রাশ করলে,সম্পদ ঠিকবে না।
হাত চুলকালে টাকা আসবে।
এইরকম হাজারো রকমের কুসংস্কার তারা মেনে চলে তাও সিরিয়াসলি।কাজে ডিস্টার্ব হলেও তারা এগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে মানে।যদিও এসব বাস্তবিক ভাবে হয়তো কোনো কাজে লাগে না।কিন্তু তাদের বিশ্বাসের কারণে হয়তো তাদের মনে হয় কাজ হয়ে যায়।
একটা কথা আছে,বিশ্বাসে মিলাি বস্তু, তর্কে বহু দূর।তাই বলে উল্টা পাল্টা ভিত্তিহীন বিশ্বাসে,বস্তু পাওয়া দূরে থাক,হয়তো অনেক কিছু হারাতে হয়।
কুসংস্কারে আচ্ছন্ন মানুষকে বুঝানোও যায় না।তারা হয়তোবা আজীবন এভাবেই কাটাবে।মানুষ দিন দিন শিক্ষিত হচ্ছে। শিক্ষা যতো বাড়বে,ততোই হয়তো কুসংস্কার কমে আসবে।
সত্যি বলতে আমি এরকম কুসংস্কার শুনেছিলাম ছোটবেলায়, পরবর্তীতে যখন বড় হয়েছি । আস্তে আস্তে আমার এই জিনিসগুলো কেটে গিয়েছে ,সত্যিই এই জিনিসগুলো এখনো ভাবায় আমাকে । কতোই না বোকা ছিলাম ।
Congratulations @shaonashraf! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
You can view your badges on your board And compare to others on the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
To support your work, I also upvoted your post!
Support the HiveBuzz project. Vote for our proposal!
Congratulations!
Curated by
@sourov
Join us on Discord
A Youth Run Community Organization from Bangladesh
50SP100SP200SP500SP1000SP2000SP5000SP10000SP