ট্রেনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
আমি এমন অনেক মানুষকেই দেখেছি যারা এখনো ট্রেন ভ্রমণ করেনি। ট্রেন ভ্রমণ এর অভিজ্ঞতা অনেক মজার একটি অভিজ্ঞতা। আমি সর্বপ্রথম ট্রেন ভ্রমণ করেছিলাম আমি যখন ক্লাস ৩ এ পড়ি। তার আগে আমরা সবসময় বাসে চলাচল করতাম। কিন্তু সেই সময় ট্রেনে যাওয়ার পিছনে একটা বড় কারণ ছিল। সেটা হল আমরা যেদিন যাবো সেই দিন আমাদের বাস আসার পথে একসিডেন্ট করে। তখন কাউন্টার থেকে খবর আসে আমাদের তার পরবর্তী বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তার পরের বাসটি আরো ৩ ঘন্টা দেরিতে আসবে। তাই আম্মু, আব্বুকে বলে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখতে এখন কোনো ট্রেন আছে কি না ? তখন আব্বু খোঁজ করে দেখে আর ৩০ মিনিট পরে একটা ট্রেন আছে।
ট্রেন পাওয়ার পরে সবচেয়ে বড় ঝামেলা ছিল সেটার টিকেট পাওয়া। আব্বুকে দেখলাম অনেক দৌড়া দৌড়ি করে ২ টা টিকেট ম্যানেজ করেছে। তারপর আমরা আমাদের সিট খুঁজে সেখানে বসে পড়ি। যদিও একটু গাদাগাদি হচ্ছিলো কিন্তু প্রথমবার ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কাছে সেটা যেন ধূলিসাৎ কয়ে গিয়েছিলো। ট্রেন তার নির্দিষ্ট সময় থেকে ১০ মিনিট দেরিতে ছেড়েছিলো। ট্রেন ছাড়ার পরের মূহর্তের অনুভতি গুলো বলে বুঝতে পারবো না । আমি সবার আগে গিয়ে জানালার সাইটে বসেছিলাম।
একটু পর পর নানান রকম রাস্তা দিয়ে পার হচ্ছিলো ট্রেন। কিন্তু মাঝে মাঝে অনেক ভয় ও লাগছিলো। কারণ মাঝে মাঝে এমন রাস্তা আসছিলো যেটা মনে হয় ট্রেনের সাথে ধাক্কা খাবে। আবার মাঝে মাঝে বস্তি বাড়ির মাঝখান দিয়ে যাচ্ছিলো। বাড়ি গুলো যেন ট্রেন থেকে সামান্য ইঞ্চি দূরে। যেটা ওই বস্তির মানুষ গুলোর জন্য খুবই বিপদজনক ছিল। আমরা যে রেলস্টেশন থেকে উঠি সেটা ছিল বাংলাদেশের জাতীয় ও সবথেকে বড় রেলস্টেশন , তার নাম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। এই রেলস্টেইনের পাশেই অনেক বস্তি আছে যেগুলো দিয়ে প্রতিদিনই ট্রেন আসা যাওয়া করে।
আমাদের ট্রেনটা একে বাড়ে এয়ারপোর্ট গিয়ে থামে। তখন প্রায় আরো অর্ধেক মানুষ ট্রেনের যাত্রার উদ্দেশ্যে ভিড় করে। আমি সেখান থেকে একটি চিপস কিনতে গেলে ১৫ টাকার চিপস টা ২০ টাকা দাবি করে। আসলে এই অসাধু বেবসায়ীরা সুযুগের সৎ ব্যবহার করে মানুষকে ঠকায়। এয়ারপোর্ট এ ট্রেনটি প্রায় ৩০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। যখন ট্রেনটি ছাড়বে তখন সবার দৌড়া দৌড়ি শুধু হয়ে গিয়েছিল। ট্রেন ছাড়া পর দেখি অনেকই টিকেট ছাড়া এসেছে । তাদের মধ্যে কেউ কেউ কাগজ বিছিয়ে ফ্লোরেই বসে আছে আবার কেউ কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
আমার ট্রেন ভ্রমণের একটা জিনিস নজর করেছিল যে কয়েক জন ট্রেনের দরজার কাছে বসে আছে। আমার মনে হয়েছিল আমার সিটের থেকে তারা আরামে আছে। আমি অনেক বার ট্রেনে ভ্রমণ করেছিল কিন্তু ট্রেন চলাকালীন একবারও দরজার সামনে বসিনি। এই আসাটা এখনো পূরণ হয়নি। আমাদের গ্রামে যেতে সময় লেগেছিলো প্রায় ৩ ঘন্টা। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে ৩০ মিনিট। কিভাবে যে সময়টা চলে গেলো আমিও সেট বুঝতে পারিনি। আমারদের বাড়িতে যাওয়ার সময় মেঘনা নদী পার হয়ে হয় ট্রেনটির। আমি খেয়াল করেছিলাম যখন ট্রেনটি মেঘনা ব্রিজের কাছে চলে এসেছিলো তখন ট্রেনের গতিবেগ কমে গিয়েছিলো। এটা হয়তোবা সুরক্ষার জন্য করা হয়েছিল।
অবশেষে প্রায় ৩ ঘন্টার যাত্রা শেষে আমরা পৌঁছে যাই আমাদের গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছানোর পরে আমাদের আবার CNG করে বাড়িতে যেতে হবে। CNG তে আবার ৪০ মিনিট কেটে যায়। আমরা বাসা থেকে সকাল ৭ টায় বের হয়ে দুপুর ২ টায় বাড়িতে পৌঁছাই। আমার সেই প্রথমবার ট্রেন অভিজ্ঞতাটা ছিল সপ্নের মতো। কারণ আমরা তো বাসে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা নিয়েই বের হয়েছিলাম ট্রেনে নয় ।
Congratulations @shemanto72! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 1000 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz:
valo laglo
Thank you for your review. :)