বন্ধু

in BDCommunity2 years ago (edited)

বন্ধু ঘুম থেকে উঠেই বালিশের নিচে হাতরায়। কখনো কখনো আবার লুঙ্গির ভিতরেও। কারণ রাতে চ্যাট করতে করতে ঘুমায় পরে। ঘুমের মধ্যে ফোন কখন কোথায় ঢুকে থাকে তার কোন ঠিক নাই। কয়েকবার তো ফোনের উপরেই সারারাত নির্যাতন করে সকালে উঠে লুঙ্গির ভিতর থেকে ডিসপ্লে ভাঙ্গা ফোন আবিষ্কার করেছিল।

যাই হোক ফোন হাতে নিয়েই বাবু উঠছো, নাকে মুখে চোকে উম্মা দেওয়া টাইপের প্রেমিক। যাকে বলে হাবুডুবু খাওয়া প্রেম। জনম জনমের প্রেম, প্রেমে নাকানি চুবানি খাচ্ছে এমন প্রেমিক। "তেরে লিয়ে ইয়ে জান কুরবান" টাইপের প্রেমিক ছিল। মানে মারিয়ার জন্য জান দিয়ে দিবে এমনটাই প্রেমিক।

তবে এই প্রেম আর কতদিন? বিয়ে সাদিও তো করতে হবে তাই না? বাবু উঠছো, বাবু খাইছো, বাবু সুইছো দিয়ে প্রেম চললেও বছরের পর বছর তো চলে না। দীর্ঘ দুটা বছর টানা প্রেমের পর মারিয়া বেঁকে বসলো বিয়ে করবে। আর বেঁকে বসবেই বা না কেন? বাসায় থেকে তাকেও তো চাপ দিচ্ছে বিয়ের জন্য। কার বাবাই বা চাইবে এভাবে অনার্স পরুয়া তাও আবার সুন্দরী মেয়েকে বাসায় বসে রাখতে।

মারিয়া সজিবকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও সজিব নিরুপায়। সে চাকরীর জন্য হন্য তন্য হয়ে এদিক সেদিক দৌড়াচ্ছে। এদিক চাকরি ছাড়া শশুর বেটিও দিতে চায় না। বেকার ছেলেকে কে মেয়ে দিয়ে নিজের মেয়ের জীবনটা ধ্বংস করতে চাইবে বলুন।

বাসায় অন্য একটি ছেলে পছন্দ করেছে। ছেলেটাও একটি বেসরকারি কোম্পানীতে হ্যান্ডসাম সেলারী পায়। দেখতেও মাশাল্লা। মারিয়ার সাথে খাপে খাপ। শেষে বাধ্য হয়ে মারিয়া পাল্টি মারে। মুখ ঘুরিয়ে নেয় সজীবের থেকে। সে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায়।

সজীবের মাথা ঠিক নেই। মাথা আউলায়া গেছে কি করবে বুঝতেছে না। বিয়ের দিন তারিখ পাক্কা। আর কয়টা দিন বাকী। যতোই দিন গড়িয়ে আসছে ততোই নাজেহাল হচ্ছে সজীব। বিড়ির পু*কিতে বিড়ি লাগিয়ে ফুকিয়েই যাচ্ছে।

তার বিয়ের খবর রীতিমত তোলপাড় ছড়িয়ে দিয়েছে সজীবের ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে। ঠিক মারিয়ার বিয়ের রাত মানে খাঁটি বাংলায় বাসর রাতের নাশকতা সহ্য করতে না পেরেই হারপিক খেয়ে জয় বাংলা করতে চেয়েছিল নিজেকে। কিন্তু তাতেও তার শেষ রক্ষা হয় নিই দ্রুত মেডিক্যালে নিয়ে ওয়াশ করে জীবন বেঁচে গেলেও আজও লবন ছাড়া তরকারীর মত জীবন অতিবাহিত করছে সজীব।

তারপর থেকে সে আর কারো বিয়ের দাওয়াত খেতে যায় না। সামনে জানুয়ারীর শেষে অথবা ফেব্রুয়ারীতে বিয়ে করবো প্রায় প্রস্তুতি সম্পন্ন। সজীবকে বললাম। তুই তো আবার কারো বিয়ের দাওয়াত খাইস না যাক আমার অন্তত একজনের দাওয়াতের খরচা টা বাঁচলো। বলতেই সজীব চিক্কুর দিয়ে উঠলো। বালামার, দুনিয়ার সব বিয়ের দাওয়াত ছাইড়া দিমু লেকিন তোর বিয়ার দাওয়াত ছারমু না। কই মওকা নেহি ছোরনেকা। ঐ বালের মাইয়ার জন্য বহুত দাওয়াত মিস করছি আর না বলেই সে কি মন খুলে হাসি। সজীবের এমন প্রানবন্ত হাসি শেষ কবে দেখেছি মনে মনে অনেক চেষ্টা করেও স্মরণ করতে পারছিলাম না।

আমি শুধু মনোমুগ্ধ হয়ে চেয়ে ছিলাম তার দিকে। দীর্ঘদিন পর তার প্রাণ উজার করে হাসি, সেই পূরোনো চরিত্র যেন ফিরে পেয়েছে। আমি শুধু ভেবেই যাচ্ছিলাম সেদিনের তার আত্মহত্যার চেষ্টা যদি সত্যি সত্যিই সফল হত তাহলে আজকে কি তাকে আমরা নতুন করে এভাবে বাঁচতে দেখতাম।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের খারাপ ভালো দুটো সময়েই পরিবর্তন হয়। কাজেই খারাপ সময়কে ধৈর্য্যের সাথে সামলানোটাই হচ্ছে বুদ্ধিমান, বিবেক সম্পন্ন ও সাহসী ব্যাক্তির কাজ।

IMG-20211204-WA0049.jpg

Sort:  

অনেক দিনের লম্বা বিরতি, গল্পের ধাচ এবং ছবি, সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে আপনি শুভ কাজটা সেরে ফেলেছেন। 😛

😍 অর্ধেক সারছি। দোয়া কইরেন আমাদের জন্য 🥰।

Dear @steemitwork,

The previous HiveBuzz proposal expired end of December.

Do you mind supporting our proposal for 2022 so our team can continue its work next year?
You can do it on Peakd, ecency,

Hive.blog / https://wallet.hive.blog/proposals
or using HiveSigner.
https://peakd.com/me/proposals/199

Thank you. We wish you a Happy New Year!