আমি অত্যন্ত ভ্রমণপিপাসু মানুষ। সুযোগ পেলেই প্রকৃতির কাছে ছুটে যেতে ভালোবাসি। আমি বিশ্বাস করি, প্রকৃতিতেই প্রকৃত শান্তি। সবুজের মধ্যেই প্রকৃত বোঝাপড়া আর মাটির গন্ধেই আসল উৎকর্ষ লুকিয়ে আছে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে আমি সাধারণত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহে যেতে ভালোবাসি..
আমার ভীষণ সৌভাগ্য যে, বাংলাদেশের মতো একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে জন্ম গ্রহণ করতে পেরেছি। এই দেশটিতে এত এত বিচিত্র দর্শনীয় স্থান রয়েছে, এক জীবনে হয়তো দেখে শেষ করতে পারব না।
এমনকি কোন বিখ্যাত স্থান নয়, খুব সাধারন প্রত্যন্ত একটি গ্রামেও যখন কেউ যায়, সেখানকার নিরব নিস্তব্ধ পরিবেশ এতটা মুগ্ধ করে যে, মনে হয় এর চেয়ে শান্তিময় জায়গা পৃথিবীতে আর কোথাও খুঁজে পাবে না। এজন্যই কবি বলেছেন, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি/সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি..
আজকে যখন ভ্রমণের নেশা বিষয়টি নিয়ে লিখতে বসেছি, এত এত ভ্রমণের স্মৃতি মাথায় এসে কিচিরমিচির করছে যে, ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখবো।
জানি, সবাই বিভিন্ন বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে লিখবেন। আমি একটা খুব সাধারন এবং প্রাকৃতিক স্থান সম্পর্কে বর্ণনা করতে চাই। সেটা আমার গ্রাম। কুমিল্লা জেলার লালমাই থানায় অবস্থিত।
আমার জন্ম যদিও গ্রামে, বড় হয়েছি শহরে। তবে প্রায় প্রতিবছর গ্রামে যেতাম। সম্ভবত সেখান থেকেই সৃষ্টি হয় নাড়ির টান।
আজ আমি আমার খুবই প্রিয় গ্রাম সম্পর্কে এবং এরপরে বন্ধুদের সাথে আমার জেলার সবচেয়ে বিখ্যাত স্থানটি ভ্রমণ সম্পর্কে লিখব।
প্রতিদিন তো গদ্যে লিখি, আজ যেন একটু বেশিই কাব্যিকতা ভর করেছে আমার উপর। তাই ছন্দে অনুপ্রাস বর্ণনা করছি আমার ভ্রমনপিয়াসু মনের অভিব্যক্তি..
আমার শুধু ইচ্ছে করে
পাখির মত উড়তে
সুযোগ পেলে বেরিয়ে পরে
দেশ-বিদেশে ঘুরতে।
কখনো যাই পাহাড় চূড়ায়
কিংবা নদীর ধারে
কখনোবা ছুটে বেড়াই
নীল সাগরের পাড়ে।
ভালো লাগে সবুজ-শ্যামল
গ্রামীণ পরিবেশ
সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি
আমার বাংলাদেশ।
মাঝে মাঝে তাই ছুটে যাই
ছোট্ট একটি গাঁয়
শহর ছেড়ে দেশের বাড়ি
আমার কুমিল্লায়।
এটি কেবল ভ্রমণই নয়
মাটির কাছে আসা
মাটির প্রতি দেশের প্রতি
অপার ভালোবাসা।
একটা ছোট্ট পুকুর আছে
সবুজ ঘোলা জল
পোনা মাছে ঘাই মারলে
জল করে টলমল।
পুকুর পাড়ে বাঁশের ঝাড়ে
একলা বসে থাকি
চতুর্দিকে হাজার পাখি
করছে ডাকাডাকি।
সবুজ ক্ষেতে হিমেল হাওয়া
দুলছে ধানের শীষ
বাঁশের পাতায় বাতাস যেন
করতেছে ফিসফিস।
একটি ছাগল কাঁঠাল পাতা
কি আনন্দে খাচ্ছে
ক্ষেতের আইলে হাঁসের ঝাঁক
হেলে দুলে যাচ্ছে।
এসব দৃশ্য দেখার জন্য
প্রতি বছর শীতে
কুমিল্লাতে তাই ছুটে যাই
গ্রামীন প্রকৃতিতে।
গত বছর গিয়েছিলাম
বন্ধু ক'জন সহ
তারাও দেখে মুগ্ধ হলো
সবুজ সমারোহ।
বলল, তারা ঘুরতে যাবে
শালবন বিহারে
ময়নামতি দেখে আসবে
গোমতী নদীর পাড়ে।
যে জন্যে আজ বিশ্বখ্যাত
এই কুমিল্লা জেলা
তাদের নিয়ে গেলাম সেথা
সেদিন বিকেল বেলা।
শেষ বিকেলে হলদে আলোয়
দেখাচ্ছে উজ্জ্বল
হাজার যুগের পুরাতন ইট
করছিল ঝলমল।
বন্ধুরা সব হাত-পা মেলে
ঘাসের উপর বসে
অসাধারণ জায়গাটাতে
আড্ডা দিলাম কষে।
ফাঁকে ফাঁকে চলতেছিল
ফটোগ্রাফির কাজ
দেখতে দেখতে কখন হঠাৎ
আসলো নেমে সাঁঝ।
বেলা শেষে ফিরতে হবে
আবার শহর পানে
ফিরে আসি, তবু বারবার
স্মৃতিগুলো টানে..
আবার যদি সুযোগ মেলে
আবার ছুটে যাব
অন্য কোথাও অন্য ট্যুরে
অন্য মজা পাব।
ভালো লাগে নানা রঙের
বিচিত্র পরিবেশ
সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি
আমার বাংলাদেশ।
আত্মকথনঃ
আমি ত্বরিকুল ইসলাম
সখের বশে ব্লগিং করি। ইদানীং কিছুটা আঁকাআঁকি শিখার চেষ্টা করছি।
Hive: @tariqul.bibm
3speak: tariqul.bibm
"পড়াশোনায় ইঞ্জিনিয়ার। পেশায় শিক্ষক। নেশায় লেখক। সাবেক ব্যাংকার। পছন্দ করি লিখতে, পড়তে, ভ্রমণ করতে এবং জমিয়ে আড্ডা দিতে।"
জীবনটাকে অনেক অনেক ভালোবাসি
আমিও কুমিল্লার ভাই। একদিন দেখা হবে ❤❤
অবশ্যই দেখা হবে। দেশী ভাই বলে কথা!
ভাই ভাই একাকার। আর আমরা ...... ? আমাদের যে দেশী ভাই নাই ।
দেশ তো একটাই বাংলাদেশ। ইনশাল্লাহ একদিন সবাই মিলে একটা বড়সড় রিইউনিয়ন হবে এবং জমিয়ে আড্ডা হবে।
ইনশাআল্লাহ্