সবার জীবনে পাওয়া প্রথম অমূল্য ভালোবাসা

in BDCommunity3 years ago

একটা সন্তান জন্ম নেওয়ার পর সর্ব প্রথম ভালোবাসা পায় মা - বাবা আর মাতৃ-ভূমির। আর এ ভালোবাসা চিরকাল অক্ষয় হয়ে থাকে।

আমাদের অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, এ-পৃথিবীতে পিতা-মাতাই আমাদের জীবনের উৎস। তারাঁই আমাদেরকে এ বিশ্বে এনেছে। আমাদের শৈশবে তাঁরাই আমাদের লালন পালন করেছে। শৈশব থেকেই তারা আমাদের সার্বাধিক যত্নে স্নেহে তত্ত্বাবধান করেছে। তাঁদের স্নেহ সিক্ততা ব্যতীত পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব অসম্ভব হয়ে পড়ত। তাঁদের স্নেহে সিক্ত আদর যত্ন আর প্রাত্যহিক মঙ্গল কামনায় আজ আমরা ধরণীর আলো-বাতাসে মুক্ত বিহঙ্গের মত বিচরণ করছি।

![IMG20201218165924.jpg](UPLOAD FAILED)

পিতা-মাতার অবদানেই সন্তান এই সুন্দন পৃথিবীর রূপ-রস, আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করার সুযোগ পায়।

এই বিষয় গুলো আমি এখন গভীর ভাবে উপলব্ধি করি। কারণ আমি নিজেই এখন সন্তানের মা।

আজ দুপুরে বাচ্চাদের ঘুম পাড়িয়ে আমি আমার নিজের মা ও বাবার কথা ভাবতেছিলাম। তখন হঠাৎ ২০১৬ সালের রমজান মাসে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার কথা মনে পড়লো। ঘটনা টা মনে হতেই আমার হৃদয় টা আবেগে বিগলিত হয়ে উঠলো। ঘটনা টা হলো ---

এক রাতে সেহেরী খেয়ে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়ছিলাম।
হঠাৎ ঘুমের মধ্যেই দেখি শীতকালের মতো শীতে ঠক ঠক করে কাঁপছি। বুঝলাম কোন কারন ছাড়াই প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়েছি।

রোজা টা না ভাঙার কারনে ওষুধ খাওয়া সম্ভব হয়নি।
তাই সারাদিন ছিলাম জ্বরে কখনো হুশ, কখনো বেহুশ।
এক পর্যায়ে আম্মু আমাকে আমার রুম থেকে তাদের রুমে নিয়ে যায়।

ঠিক এসময়ই ঘটলো ঘটনা টা।২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আমার
আব্বু স্ট্রোক সহ আরো নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কথা তেমন বলতে পারে না, হাঁটাহাটিও করতে পারে না গত 3-4 মাস ধরে।
আমি আব্বুর রুমে কোন মতে টলতে টলতে যাওয়ার সাথে সাথেই আমার দিকে চেয়ে বলে উঠলো -" মা
এখন কেমন " এ পর্যন্ত বলে আর কিছু বলতে পারলো না।
আব্বু অসহায় ভাবে আমার দিকে চেয়ে থাকতেছে, আর কখনো হাত কখনো বা কপাল ছুয়ে বার বার জ্বর পরীক্ষা করছে।
আব্বুর এই ব্যাকুলতা, অস্থিরতা দেখে আমার হঠাৎ মনে হলো পৃথিবীটা বুঝি থমকে গেছে।
যেই মানুষটার নিজেরই কোন হুশ নেই, সেই মানুষটা মেয়ের এই করুণ দশা দেখে তৎক্ষণাৎ নিজের অসুস্থতার কথা ভুলে যায়। আর এটাকেই হয়তো বলে পিতৃস্নেহ!!!

পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত থাকার যন্ত্রণা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবে না

মাবুদ গো, তুমি তো তোমার বান্দার অন্তরের সব খবর রাখো, স্থায়ী ভাবে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হওয়ার আগেই তুমি আমাকে নেক মৃত্যু দান করিও।

যদিও জানি পরকালের পাথেয় আমার কিছুই নেই। কিন্তু মাবুদ গো এও তো জানি তোমার নাদান বান্দার গুনাহ তোমার রহমত আর করুণার চাইতে বেশী না।

আল্লাহ তায়ালা আমার আব্বু - আম্মুকে সুসাস্থ্য এবং নেক হায়াত দান করো মেহেরবানি করে।

আমিন।।।