প্রিয়,
পাঠকগণ,
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন।
আমরা প্রায় প্রত্যেকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট হই, সেটা হতে পারে ভালো খাবার, ভালো পোশাক, ভালো বাড়ি কিংবা আরও অনেক কিছু।নিজেদের জন্য খারাপ কোনো কিছুই আমরা পছন্দ করি না।
যেমন শুঁয়োপোকা দেখতে আমাদের খুব খারাপ লাগে,তবে ততক্ষন পর্যন্ত যতক্ষণ না সেটা প্রজাপতি হচ্ছে। প্রজাপতি হয়ে যাওয়ার পর আমরাই কিন্তু চেষ্টা করি সেই প্রজাপতিকে নিজের হাতের ওপর ধরার।
ঝুনুদিদের সাথে সেদিন যমুনা নদীতে যাওয়ায় সময় একটা পুকুরের পাড়ে দূর্গা ঠাকুরের কাঠামো দেখে আমার এই কথাটাই মনে হচ্ছিল।
দুর্গাপুজো যখন শুরু হয় তারও বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই কুমোরটুলিতে ঠাকুর বানানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। অর্ডার অনুযায়ী তারা মূর্তি গড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, আর পুজো আসলেই বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সময় ঠাকুর রং করা, শাড়ী পরানো, গয়না পরানো সমস্ত কিছু কত সুন্দর। পুজোর কয়েকদিন মূর্তি গুলোর মধ্যে যেন প্রাণের সঞ্চার হয়। আমরা সকলে কত ভক্তি নিয়ে সেই মূর্তির পুজো করি।
অথচ পুজো শেষ হলে সেই মূর্তির বিসর্জন দিয়ে দেই কোনো নদী কিংবা পুকুরে। আর যখন কাঠামো থেকে মাটি গলে যায় তখন তাকে দাড় করিয়ে রাখি পুকুর/নদীর পাড়ে। তখন আর সেটার মূল্য থাকে না আমাদের কাছে।
কিন্তু দেখা যায় পরের বছরের জন্য অনেকেই পুরোনো কাঠামো জমা করেন। ওই পুরোনো কাঠামোর ওপর আবার নতুন করে মাটি দিয়ে, রং দিয়ে, নিজের যত্ন দিয়ে গড়ে তুলবে নতুন কোনো মূর্তি। যার পুজো আবার হবে।
এটাই আমাদের স্বভাব, ভালোর পিছনে বহুদূর ছুটতে ভালোবাসি আমরা, অথচ নিজেদের যেটুকু আছে সেটাকে ভালো রাখার চেষ্টা কিন্তু আমরা করি না। আর যা খারাপ তাকে বাদ দিয়ে দেই,এক বারও ভাবিনা যে আমার একটু যত্নে, একটু ভালোবাসায় খারাপ ও ভালো হতে পারে। তাই হয়তো অনেকেই জীবনের অনেক ভালো কিছু এইভাবেই হারিয়ে ফেলি।
এই চিন্তাভাবনাটা একান্তই আমার নিজের।আপনাদের অনেকের ভাবনা আমার সাথে নাও মিলতে পারে। তবে কাউকে আঘাত করাটা আমার উদেশ্য নয়, আমি শুধু মনের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম মাত্র।
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই কামনা রইল।