বস্ত্রশিল্প ও বাংলাদেশ 🇧🇩

in BDCommunity2 years ago

পোশাক/বস্ত্র মানুষের অন্যতম একটি মানবাধিকার। প্রচীনকালে মানু্ষ গাছের বাকল আর প্রানীদের চামড়া দিয়ে গা ঢেকে রাখতো। সময়ের পরিবর্তনে সাথে সাথে মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। এই আধুনিক সময়ে মানুষ নিজেকে অনেক সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করে। অন্যের সামনে নিজেকে কতোটা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায় সেটাই এখন ভাবনার বিষয়!

বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম পোশাক তৈরিকারী দেশ। বৈশ্বিক হিসাবে চিনের পর তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে। তবে ভিয়েতনাম বাংলাদেশের সাথে সমানভাবে টক্কর দিচ্ছে পোশাক তৈরি ও রপ্তানিতে৷ এইতো কিছুদিন আগেও তারা চলে গিয়েছিলো দ্বিতীয় অবস্থানে। তবে বাংলাদেশ তাদের জায়গা আবাবো পুনরুদ্ধার করেছে।

বস্ত্রশিল্প বা পোশাক খাতে দিনদিন বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে পোশাক রপ্তানি করে থাকে বাংলাদেশে, যার ফলে বহু কোটি ডলারের বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করে থাকে। বলতে গেলে পোশাক শিল্প আর রেমিট্যান্সের উপরেই বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ রপ্তানি আয়ের ৮২% আসে এই পোশাক খাতে থেকে।


image.png
PIXABAY

পোশাক তৈরি প্রধান কাচামাল হলো ফাইবার /আশ। প্রাকৃতিক বা কিভাবে তৈরি ফাইবার দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ পোশাক তৈরি করা হয়। প্রথমে এই ফাইবার গুলোকে এর মাধ্যমে রূপান্তরিত করা হয় সুতায়। বাংলাদেশ কিছু সংখ্যক স্পিনিং মিল রয়েছে যারা বিভিন্ন ফাইবার থেকে সুতা তৈরি করে থাকে। তবে বাংলাদেশে শিল্প কারখানা গুলো বেশিরভাগ সুতাই দেশের বাইরে থেকে কিনে আনে। তার প্রধানে কারন দেশে প্র‍য়োজনীয় গুনগত মান বিশিষ্ট সুতার অভাব। পৃথিবীতে সবচাইতে পরিচিত ফাইবার হলো কটন ফাইবার।

এই সুতা থেকে ফেব্রিক তৈরি করা হয় ওইভিং কারখানাগুলোতে। এখানে ইন্টারলেসিং বা ইন্টারলুপিংয়ের মাধ্যমে ম্যাকানিকাল বন্ডিংয়ের মাধ্যমে কাপড় তৈরি করা হয়ে। বাংলাদেশ বেশকিছু শিল্প কারখানা কাপড় তৈরি করে থাকে। তবে ওভেন কাপড়ে তুলনায় নিট কাপড়ের চাহিদা বরাবরই বেশি। নিট কাপড়ের চাহিদার ৯৫% কাপড়ই তৈরি হয়ে থাকে এদেশেই, বাইরে থেকে আমদানি করতে হয় না।

তারপর এই কাপড় গুলোকে বিভিন্ন রঙে রঙিন করে তোলা হয়ে। কালারিং ইন্ডাস্ট্রি গুলো সাধারণত ডায়িং ইন্ডাস্ট্রি নামে পরিচিত। বায়ারদের চাহিদা অনুসারে কাপড়গুলোকে রং করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কেমিক্যাল এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়ে থাকে।

সবশেষে এ রঙিন কাপড় গুলো দিয়ে তৈরি করা হয় পরিপূর্ণ পোশাক, যা পরিধানযোগ্য। এটি ফাইনাল প্রোডাক্ট নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে প্রায় ৫০০০ পোশাক তৈরির কারখানে রয়েছে, যেগুলো সাধারনত রেডি মেইড গার্মেন্টস নামে পরিচত। এসব কারখানাগুলোতে সাধারনত ফেব্রিক থেকে কাটিং সুইংয়ের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ পোশাকে রূপান্তর করা হয়। এগুলোই সাধারনত আমরা মার্কেটে কিনতে পাই।

দেশের পোশাকের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিশ্বের বড় বড় ফ্যাশন কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয় করে থাকে। নাইকি, এডিডাস, এইস এন্ড এমের মতো বিশ্বের নামিদামি পোশাক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে তাদের পোশাক তৈরি করে থাকে।

এই পোশাক ওকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এক বিশাল চাকরিক্ষেত্রে। দেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ কোন না কোনভাবে পোশাক-খাতের সাথে জড়িত। আশা করি ভবিষ্যতেও পোশাক শিল্প দেশ ও জাতি গঠনে অবদান রাখবে।

Sort:  

You post has been manually curated by BDVoter Team! To know more about us join our Discord.


Delegate HIVE POWER to us & earn HIVE daily.

FOLLOW OUR HIVE AUTO CURATION TRAIL