মেস জীবন মানেই যেনো কিছু বাস্তবতা কে সামনে থেকে দেখে জীবনের লক্ষে জুটে চলা।মেস জীবনটা অনেকটা পাহাড় চুড়ায় উঠার মতো যদি আপনি যদি আপনার মানসিকতা দৃঢ় থাকে তবে উঠতে পারবেন না হলে পারবেন না। যখন কেউ নিজের প্রিয় শহর প্রিয় মানুষগুলো ছেড়ে মেসে উঠে তখন হয়তোবা তার মনে হাজারওটা প্রশ্ন উঠে।মেসের বর্ডার,মিল,ফিক্সড,এই রকম অনেক শব্দ শুনে সে হয়তো মনে করে কোথায় এলাম।মেসের সেই ছোট রুমে একসাথে তিনজন থাকা,সকালবেলার সেই আলুর ভর্দা আর পানির ডাল তার কাছে মনে হয় ভিন্নগ্রহের কোনো খাবার।আমার মেস জীবন শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে, যখন প্রথম মেসে যায় সেদিন মেসে ঢুকার পর থেকে যেনো কিছু দিনের জন্য নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছিল।মেসের নানারকম লুঙ্গি পড়া মানুষকে দেখে মনের ভিতর ভয় ঢুকে যাচ্ছিলো।এদের সাথে কি ভাবে থাকবো এই প্রশ্নটা যেনো মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিলো..৭ দিন পরের ঘটনা,আসলে আমি প্রথম দিন এসে যেগুলো ভেবেছিলাম সবগুলো মিথ্যা প্রমানিত হয়ে আমার অনুকুলেই সব ঘটছিলো,বড় ভাইদের ভালোবাসা,ব্যাচমেটদের আন্তরিকতা সব কিছু মিলে শুরু হলো মেস জীবন,এ জীবন যেনো এক শৈশবের হাটা শিখানোর এক জীবন,মেসের চারিপাশের পরিবেশ যেনো নিত্যনতুন জিনিস শিখায়,শিখায় কিভাবে জীবনের বাকিপথগুলোতে একাই লড়াই করতে।
আমার মনে হয় ছাএ মেসে তিনধরনের পোলাপাইন থাকে।
১.যারা বই পড়াকে জীবনের ফরজ কাজ হিসেবে বানি নিয়েছে,এদের আর অন্য কোনো কাজ নেই,কলেজ যাওয়া,প্রাইভেট পড়া আর শুধু বই পড়া,
২.গেম লাভার,এরা রাত জেগে কনে ইয়ারফোন লেগে শুধু বন্দুক ধরেই দৌড়ায়,এদের রুম থেকে ফায়ারের শব্দ ছাড়া আর কিছুই শুনা যায়না হোক সেটা পিস্তলের বা তাদের মুখের
৩.আরেকদল আছে এদের কোনো কাজ নেই,এরা সবারি রুমে ঘুরে কার সাথে আড্ডা দেওয়া যায় সেটা তদারকি করে,,এদের আবার গালফেন্ড ও থাকে ২/৩ টা।এদের আগুনের ধোয়া খাওয়ার ব্যাপারে অনেক পারদর্শী হয়।।এরা কলেজে কোন মেয়ে কোন ডিপার্টমেন্টে পড়ে সেগুলে সম্পকেও অভিজ্ঞতা কম নয়।
আরও নানা টাইপের ছেলে থাকে কেউ খেলাপ্রিয়,
কেউ আবার নাচপ্রিয়,কেউ আবার ধর্মপ্রিয়।। মেস জীবনের কিছু বন্ধুকে সবসময় মিস করি,মেসের কোনো একজনের জন্মদিন মানে যেনো কারে বাড়িতে বিয়ের উৎসব,ডিম মারা,ময়দা মাখানে,কেক মুখভর্তি করে রাতে তাকে গোসল করানো যেনো জন্মদিনের একএকটা নিয়ম।
মাসের প্রথম ১০ দিন যেনো মেসের ছেলেরা রাজার হালে চলে,এদের মাসের বাকি দিনের যাবতীয় চাহিদা এরা এই ১০ দিনে বাড়ি থেকে পাঠানো টাকা দিয়ে মেটায়।মেস জীবনে গিয়ে বাজার করতে গেছে কিন্তু বাজারের টাকা বাচিয়ে নিচের পকেটে ঢুকায় নাই এই রকম ছেলে খুব কম পাওয়া যায়
আমার কাছে মনে হয় মেসের ছেলেরা পারেনা এই রকম কাজ নেই,,এরা বাজার করা থেকে শুরু করা রান্না করা,কাপড় কাচা,সবগুলেো কাজেই পাড়ে,মেসের ছেলেরা গানপ্রিয়,,কিন্তু এরা বাইরে যতটুকু না গান বলে তার থেকে বেশি গান চর্চা করে বাথরুমে বসে,,এরা গরুর মাংসের থেকে পোল্ট্রির মুরগি খেতে বেশি অভ্যাস্থ।এদের পানি খেতে কোন গ্লাস লাগেনা। এদের যদি গ্লাসেও পানি দেওয়া তবু এরা সেটা বেতলে ঢেলে তার পর বোতল দিয়ে পানি খেতে ভালেবাসে।মেসের ছেলেরা কখনো অহংকারি হয়না,এরা যেকোনো পরিবেশে অন্য কারো সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে,
বিপদের সময় এরা অন্যকে পারে নিজের সাহ্যযের হাত বাড়িয়ে দিতে ,পারে নিজের দারিদ্রকে বুকের ভিতর চেপে রেখে মুখের মুচকি হাসি দিয়ে ভালোথাকার অভিনয় করতে।এরা এই ভেবেই বেচে থাকে, যে একদিন সুদিন আশবে আর তারাও আকাশের দিকে তাকিয়ে বলবে পেয়েছি যা চেয়েছি।
ভালো থাকুক মেসে থাকা সকল ভাইগুলো এই কামনায় করি।
#ভুলক্রুটি ক্ষমাযোগ্য।
নিজের মেস জীবন নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছে আছে,আপনারা চাইলে লিখতে পারি।
Nice😍
Hi hanifhossain,
Visit curiehive.com or join the Curie Discord community to learn more.
Great post brother. You are bringing back my memories. Keep up the good work.