wanderlust || ইতিকথা

in BDCommunity4 years ago

ছুটির দিন হলেই সব বান্ধবীরা বেরিয়ে পড়তাম কোথাও না কোথাও ঘুরতে।আমাদের হোস্টেল এর আশেপাশে যত জায়গা আছে প্রায় সবই দেখা শেষ।প্রথম বর্ষ পরীক্ষার পর দুইদিন ছুটি পেলাম আমরা।সবাই মিলে ঠিক করলাম এবার কেউ বাসায় যাব না, এবার আমরা ঘুরবো।তো রাত্রে সবাই প্ল্যান করে ফেললাম। পরের দিন সকালবেলা সবাই রেডি হয়ে ঘুরতে বের হলাম।


প্রথমে আমরা ঘুরতে গেলাম পাহাড়পুরের সোমপুর বিহার অর্থাৎ বৌদ্ধবিহার।যেহেতু আমরা হোস্টেলে থাকি সন্ধ্যার পর হোস্টেলে ঢুকতে দেয় না।জায়গাটা ও দূরে ছিলো, তাই আমরা ওখান থেকে দুপুর হতে হতে চলে আসলাম।হোস্টেলে এসে সবাই ফ্রেশ হয়ে খেয়ে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম।এমন সময় আমাদের এক বান্ধবী বলল চলো এখনো তো বিকেলটা বাকি আছে আমরা কাছে থেকে কোথাও ঘুরে আসি।যেই ভাবা সেই কাজ। আমরা রাতের মিল অফ করলাম কারন আমরা ফেরার সময় রাতের খাবারটা বাহিরে থেকে নিয়ে আসবো এইজন্য।
তো সবাই মিলে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম আমরা সুগারমিল দেখতে কারন সুগারমিল টা আমাদের হোস্টেলের কাছাকাছি ছিলো।এটা আমার প্রথম সুগারমিল ভ্রমণ ছিল কারণ আমি এর আগে কখনো সুগারমিল দেখিনি।তাই খুব আনন্দ হচ্ছিল আমার।তারপর সবাই মিলে আমরা পৌঁছে গেলাম।গিয়ে দেখলাম সুগারমিল দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ।কিন্তু একটা আঙ্কেলকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বললাম যে আঙ্কেল আমরা কলেজ থেকে এসেছি আমরা কখনো দেখিনি আজকে আমাদের ঢুকতে দেন দয়াকরে।আংকেল টা রাজি হয়ে গেল। আমরা ভিতরে ঢুকলাম। আমি তো অবাক হয়ে গেলাম দেখে, আমার খুব ভাল লাগছিল।
এরপর আমরা একে একে সব ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম কিভাবে আখ নিয়ে তারপর সেগুলো কে ধুয়ে মেশিনের ঢুকাই। এরপর আমরা একবারে ভিতরে ঢুকে গেলাম।আমি জানিনা আপনারা সুগারমিল দেখেছেন কিনা। তবে যারা দেখেছেন তারা বুঝবেন এর ওপরে উঠলে কতটা ভয় লাগে।আমি তো প্রথমে উঠবোই না। আমি তো একদম কান্না করব করব অবস্থা, তখন আমার বান্ধবীরা বলল কিচ্ছু হবে না, আমাদের সাথে আয়।তারপর একদম উপরে উঠে গেলাম আমরা লোহার সিড়ি বেয়ে বেয়ে। উপরে উঠে যখন নিচের দিকে তাকাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিলো, আমি আর নাই।এখান যদি নিচে পরে যাই তাহলে আমার নখও কেউ খুজে পাবেনা।ভয়ে ভয়ে ঘুরে ঘুরে দেখলাম তারপর নিচে নেমে আসলাম।যাদের হার্টের রোগ আছে তারা একদম এখানে উঠতে যাবেন না।ওখানে ওঠে আমার গলাটা শুকিয়ে গেছিল। তারপর একটা ভাইয়া আমাদের সবাইকে আখের রস খাওয়ালো, কিছু চিনিও দিলো খেতে।তারপর আমরা ওখান থেকে বের হয়ে আসলাম। এরপর হোটেল থেকে আমাদের পছন্দমতো খাবার গুলো কিনে হোস্টেলে ফিরলাম
অনেক সময় ভ্রমনের সাধ থাকলেও সাধ্য হয়ে ওঠে না কারণ আমরা যে মেয়ে।বিয়ের আগে বাবা মার অনুমতি ছাড়া কোথাও যাওয়া যাবে না, বিয়ের পর স্বামীর কথা, স্বামীর অবর্তমানে সন্তানের কথা।তাই যতটুকু পেরেছি ভ্রমণ করার চেষ্টা করেছি। এই ছোট ছোট ভ্রমণ গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগার এবং আনন্দমাখা, যেগুলো আমি কখনো ভুলতে পারবোনা। ভ্রমন গুলো আমার কাছে স্মৃতি হয়ে আছে এখনো মনের মনিকোঠায়।
এই কথাগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে পারলাম, এটা আমার খুব ভালো লাগলো।"ধন্যবাদ সবাইকে"
received_1126276500891530.jpeg