এই ঝুনো মিয়া টা বেশ ঝানু একটা মাল। তার সাথে কথায় পাল্লা দেওয়া টা চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। কথার পিঠে কথা বলে যাওয়ায় অস্বাভাবিক রকমের পটু এই ঝুনো মিয়া। রাস্তায় কেউ ঝুনোর সামনে দিয়ে হেটে যাবে আর আর ঝুনো তাকে বিদ্রুপ একটা নাম দেবে না, তা তো হয় না। ক্যাটকলিং যাকে বলে আর কি! ছেলে মেয়ে বাচ্চা কাচ্চা কেউ বাদ পরে না ঝুনোর এই অত্যাচার থেকে। সরকারের "বাদ যাবে না একটি শিশু" স্লোগান টি বেশ মনে ধরেছিলো ঝুনো মিয়ার। সে আবার বেশ পলিটিকাল মানুষ, রহিম মোল্লার খাস লোক!
তো যা বলছিলাম, এই ঝানু মাল টার থুক্কু, ঝুনো মিয়ার ক্যাটকলিং এর অত্যাচার এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে এটাকে আর ইভ টিজিং বা এডাম টিজিং এর কাতারে ফেলা যায় না। এ একবারে "ঝুনো টিজিং।" পাড়ার লোকজন আদর করে বলে ঠুয়া দেওয়া। ডাক্তারের আবার ঝুনোর এসব ঠুয়া ফুয়া গায়ে মাখার সময় নেই, ঠুয়া দিতে এসে উল্টা বেশ কয়েকবার ঝুনো ঠুয়া পলিথিনের ব্যাগে করে নিয়ে গিয়েছে।
ঝুনোর ত্যাঁদড়ামি তে স্বয়ং রহিম মোল্লা ও অতিষ্ঠ হয়ে যান মাঝে মাঝে। তখন এই ঝুনো কে দু-একটা কানের গোড়ায় না দিলে আর পোষায় না। তবে রহিম মোল্লা নিজে বেশ ব্যস্ত মানুষ। তার নেশা হচ্ছে জায়গায় জায়গায় গিয়ে শত্রু বানানো। অদ্ভুত নেশা, বাট আন্ডারস্ট্যান্ডবল। তার কারখানার সরিষার তেলের ঝাঁজ বেশি, তাই মাঝে মধ্যে একটু আসে পাশে গিয়ে ঝাল ঝেড়ে আসতে হয়। ফর দ্যা গ্রেটার গুড। বেচারা কে মানুষ বুঝতে চায় না। তবে এতে মোল্লার আফসোস নেই, তার শত্রু বানাতে নাকি ভালই লাগে। ওই যে, অদ্ভুত নেশা।
তবে এতদিক সামলাতে সামলাতে আবার ঝুনো কে ও সামলানো আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই দরকার পরে একজন আ্যন্টাগনিস্ট এর। তৈল মর্দনের সুবর্ণ সুযোগ বুঝে ঝুনোর স্বঘোষিত আ্যন্টাগনিস্ট বণে যায় ডাক্তার।
সে কি রেষারেষি ডাক্তার আর ঝুনোর। মোটামোটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যায় যায় ভাব। ব্লকের শৃঙ্খলে তো এটাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। হ্যা, ইট স্টার্টেড ইভেন বিফোর সূর্য টুক ওভার "স্টিমি।" সেই যুদ্ধে কিন্তু আবার ডাক্তার আর ঝুনো একই ব্যাটালিয়নে থেকে যুদ্ধে অংশ নেয়। সেই সময় আপাতত তাদের নিজেদের যুদ্ধবিরতি দিয়ে দেয় তারা, ফর দ্যা গ্রেটার গুড।
পলাশীর তীরে "স্টিমির" যুদ্ধের পরে আবার লেগে যায় ডাক্তার আর ঝুনোর। শহরের বাসিন্দারা একচ্ছত্র ভাবে ডাক্তারের সমর্থনে নেমে যায়। এতদিন পর ঝুনোর অত্যাচারের প্রতিশোধ কেউ তো নিচ্ছে! স্বয়ং পান্ডার বেপারী ও কূটনৈতিক অবস্থান থেকে সরে এসে ডাক্তারের সমর্থনে সায় দেন।
অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে কোণঠাসা ঝুনো মিয়া কালোজাদুর আশ্রয় নেয়।
ডাক্তারের মিনিট দুই-এক লাগে বুঝতে কি হচ্ছে। এই না কিছুক্ষণ আগেই সে ঝুনো মিয়া কে একদম কোণঠাসা করে রেখেছিল। কিন্তু এখন দেখছে সে রাস্তার ওপারে একটা মাজারের দাওয়ায় বসে দাঁত খিলতে খিলাতে নিরীহ শান্তশিষ্ট লেজ বিশিষ্ট নাগরিকদের মনের সুখে ঠুয়া দিচ্ছে, একদম পাইকারী দরে। "বাদ যাবে না একটি শিশু" স্টাইলে। তার মাথার উপর একটা সাইনবোর্ডে বড় করে লেখা, "ঠুয়া বাবার মাজার।"
ডাক্তার না হেসে পারল না, মনে মনে ভাবলো এই ঝুনো টা এত বেকুব ক্যা রে?!! খাল কেটে কুমির আনার স্বভাব টা গেলো না এই ঝুনোর। মোক্ষম অস্ত্র পেয়ে গেছে ঝুনো কে একটা চাইনিজ বাঁশ দেওয়ার, এই ভেবে ডাক্তার রাস্তা পর হতে শুরু করে। আশেপাশে তাকিয়ে খুজে তার সমর্থকেরা কথায়, ঝুনো কে এই বাঁশ টা সবার সামনে দিতে পারলে জমতো বেশ! কিন্তু এ কি!
আশেপাশে কোন চেনা মানুষ কে চোখে পড়ছে না কেন। সব নতুন নতুন মানুষ দিয়ে রাস্তা গিজগিজ করছে, এদের কাউকেই এই শহরে কখনো দেখেনি ডাক্তার। স্লোলি, এভরিথিং স্টার্টস টু মেক সেন্স। ডাক্তার এখন আর নিজের টাইমলাইনে নেই। ঝুনোর কালোজাদুর কথা আসতে আসতে মনে পড়ে।
কোণঠাসা হয়ে ঝুনো মিয়া কালোজাদুর আশ্রয় নিয়ে সবার স্মৃতি থেকে ডাক্তার কে মুছে দেয়। হি ক্রিয়েটস এ নিউ ডাইমেনসন। শহরের নতুন বাসিন্দারা জানতে ও পারে নি যে এই ঝুনো মিয়ার অত্যাচারের প্রতিবাদ করার মানুষ ও ছিল। তার সবাই ঠুয়া বাবার মাজার থেকে বস্তা বস্তা ঠুয়া নিয়ে ঘরে ফিরছে।
এই মালটিভার্স এ ঝুনোর কোনো এন্টাগনিষ্ট নেই, দিস মালটিভার্স ইজ ম্যাডনেস!!
ডাক্তারের তেলাপোকা গুলোর জন্য মায়া হয়। আহারে, তার ভুলের জন্যই তো আজ ঝুনো মিয়া একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে বেড়াচ্ছে। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে ডাক্তারের চোখচোখি হয়ে যায় রহিম মল্লার সাথে। রহিম মোল্লা ও সরিষার তেল মেখে হাটতে হাটতে ডাক দিলেন, ডাক্তার এসেছে দেখি!
যাক বাবা, কেউ তো চিনল তাকে।
ঝুনো মিয়া চেয়েছিল এই মালটিভার্স এ কেউ যেন ডাক্তারের কথা মনে না রাখে। ঠিক যেমন করে ড: স্ট্রেঞ্জ সবার স্মৃতি থেকে স্পাইডারম্যান কে মুছে দিয়েছিল। তবে ঝুনো মিয়া তো আর ড: স্ট্রেঞ্জের মত এক্সপার্ট না, সে হচ্ছে গিয়ে হাতুড়ে ড: স্ট্রেঞ্জ। তাই ব্লকের শৃঙ্খলের আদি যুগের কিছু কিছু মানুষ আজও মনে রাখে ডাক্তার কে। কিন্তু ঠুয়া বাবার মাজারে খেয়ে ঠুয়া বাবা কে গোশশা করানোর মতো অপরাধে কেউই কলঙ্কিত হতে চায় না।
বাট ডাক্তার উইল রিটার্ন, বি কেয়ারফুল ঝুনো মিয়া, বি ভেরি কেয়ারফুল!
Superlative!!
Thank you Dada! This was fun to write, felt like the good old days :)
Now all we need is for ঝুনো মিয়া to strike a comeback!
ঝুনো মিয়াঁর ঠুয়া বাবার মাজারে ফ্রি তে ঠুয়া দেয়। আগে মানুষজন ঠুয়া খেতে বিরক্ত বোধ করতো - এখনো করে কিন্তু কালে ভদ্রে ঠুয়া খেতে তাদের খুব একটা খারাপ লাগেনা। "ফ্রি কা মাল" বলে কথা
তা ঠুয়া খেতে আসবেন কবে, ডাক্তার মশাই?
ডাক্তার আসবে, ডাক্তার কে আসতেই হবে। পলিথিনে ভরে ঠুয়া নিয়ে আসব ঝুনো মিয়ার জন্য।
Hi @simplifylife, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON