পাশে দাড়ানোর গল্প | নিজ গ্রামে করোনা ভাইরাস সচেতনতা ক্যাম্পেইন।

in BDCommunity5 years ago

এখন পর্যন্ত যা কিছু করতে পেরেছি তার জন্য আমি সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ। ২০১৭ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত অসহায় মানুষদের পাশে দাড়ানোর এই সুযোগ টা আমার জীবনের অন্যতম পাওয়া ছিলো। নিজেকে সবচেয়ে বেশি সুখী মনে হয় তখন, যখন অসহায় মানুষের মুখে হাসি দেখতে পাই, তারপর সেটা নিজের জন্যই। এর চেয়ে আনন্দের কিছু নাই। যখন একজন বৃদ্ধ মানুষ নিজের আত্মাতৃপ্তি থেকে দোয়া করে। যখন পিচ্চিদের মুখে আনন্দের হাসি দেখতে পাই। সেখানেই প্রকৃত সুখ খুঁজে পাই আমি।

করোনার আতংক শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় বেশ কয়েকটি ক্যাম্পেইন করেছিলাম। আমার উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল গুলো সহ নিজের এলাকাতেও ক্যাম্পেইন করেছি। যা মানুষের জন্য অনেক উপকারী ছিলো।

IMG_20200329_100839 (1).jpg

এই ছবিটা কিছুদিন আগের যখন আমার নিজ গ্রামের মানুষদের মহামারী সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য নেমেছিলাম। করোনার সময় কালে রাস্তার পাশের মানুষ গুলো অনেক আন্তরিক, তাদের নিয়তি যদিও রাস্তায় এনে দাড় করিয়েছে তবুও তাদের মন অনেক সুন্দর। করোনা সারা দেশে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে গেছে, কিন্তু নিজের গ্রামের মানুষদের মধ্যে কোন সচেতনতা দেখতে পাচ্ছিলাম না। তারা অনবরত রাস্তা ঘাটে হাট বাজারে সতর্কতা অবলম্বন না করেই চলাফেরা করছে। এসব ভাবতে লাগলো আমায়, তাই আর দেরি না করে কয়েকজন মিলে একটা দল বানিয়ে ফেললাম। উদ্দেশ্য হলো প্রত্যেক বাড়ি গিয়ে গিয়ে তাদের এই করোনা মহামারী সম্পর্কে সচেতন করা। কয়েক হাজার প্রচার পত্র বানালাম (লিফলেট)। সেগুলো নিয়েই আমাদের প্রস্তুতি।

যদিও বিষয়টা কঠিন ছিলো কারন দিনমজুর মানুষ গুলো বাড়িতে বসে থাকলে পুরো পরিবার অনাহারে থাকবে।

তবুও বেরিয়ে পরলাম তাদেরকে জানাতে যে এই ভাইরাস থেকে নিজে এবং আপনার প্রিয়জনকে বাঁচান, নিজে সতর্ক থেকে। ৬জন মিলে ২টা দলে বিভক্ত হলাম। রাস্তার দুপাশে দিয়ে শতখানেকের বেশি বাড়ি আছে। একদল রাস্তার এক পাশে অন্য দল রাস্তার অপরপাশে দিয়ে শুরু করলাম। কিছু পরিবার ইতিমধ্যে ভাইরাস সম্পর্কে অবগত থাকলেও বেশির ভাগ পরিবার গুলোই করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অবগত না। তারা এখনো জানেই এটা কি। কতটা মারাত্মক এই ভাইরাস। যেখানে সারা বিশ্ব নড়েচড়ে বসছে সেখানে এ অসহায় মানুষ গুলো জানেই না।

IMG_20200329_103437 (3).jpg

আমাদের লক্ষ্য ছিলো রাস্তার দুইপাশের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে সচেতন করা। সাবান দিয়ে প্রতিনিয়ত হাত ধোয়া, বাইরে গেলে মাস্ক পরিধান করা, জনসমাগম এরিয়ে চলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সম্পর্কে অবগত করা ছিলো আমাদের মূল লক্ষ্য। পরিবারের কর্তাকে প্রতিদিন বাইরে কাজ করতে যেতেই হয় কারন সে কাজ করলেই তার পরিবার খেতে পারবে। তবুও সতর্কতা অবলম্বন করে বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে অবগত করা। বাইরে থেকে বাসায় ঢোকার সময় পরিষ্কার হয়ে বাসায় ঢুকতে হবে। বাচ্চাদের খেয়াল রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে বলেছি। যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই বাড়িতে তাদের পড়াশোনার তাগিদ দিয়েছি। বাড়ির মহিলাদের রান্না করার সময় মাছমাংস ভালো ভাবে ধুয়ে যথেষ্ট ভালো ভাবে সিদ্ধ করে রান্না করতে বলেছি।

আমার নিজ উদ্যোগের এই ক্যাম্পেইন ছিলো ২ দিন। ২দিনে আমরা ১১৫ টা বাড়িতে গিয়ে সচেতন করেছি। তাদের করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অবগত করেছি। মহামারীর ভয়াবহতা সম্পর্কে জানিয়েছি।


নিজে সচেতন হোন, পরিবারকে সচেতন করুন, নিজের প্রতিবেশীদের সচেতন করুন, দেশকে সচেতন করুন তারপর বিশ্বকে সচেতন করার চেষ্টা করুন।

দুর্যোগকালে আপনি যদি অন্যের বিপদ দূর করার চেষ্টা করেন আল্লাহ আপনার এ সহমর্মীতার কারণে দুর্যোগ থেকে রক্ষা করবেন আপনাকে আপনার পরিবারকে।

Sort:  

খুব ভালো কাজ, এই কাজগুলোতে অনেক আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়। দোয়া করি এইভাবে সামনের দিনগুলোতেও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে।

 5 years ago  

জ্বি ভাই দোয়া করবেন। অনেক ইচ্ছে তাদের পাশে দাড়ানোর।

Great job brother. Go ahead.

@toushik

Hi @toushik, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!


Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.

JOIN US ON