বউ শাশুড়ি: পর্ব ১

in BDCommunity3 years ago

IMG20200919121819.jpg

" মা আমি মিতুকে নিয়ে মার্কেটে যাচ্ছি। ঘরের ফার্নিচারগুলো তো আবার ওর পছন্দেই না-কি কিনতে হবে।"
আমি ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। কিছু বলতে পারছি না। আমার হাতে তসবি। একটা খতম পড়ছি। সূরাটা তসবিতে একশয়ের ঘর অতিক্রম করার জন্য আমি দ্রুত ঠোঁট নাড়ছি আর ওকে মাথা দিয়ে যাওয়ার জন্য ইশারা করছি।
এমন সময় মিতু এসে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল
" মা আপনার ছেলে বলে অামার যাওয়ার দরকার নেই। সে নিজেই পছন্দ করে অর্ডার করে আসবে। এটা কেমন কথা? যে ঘরে আমি থাকব, সে ঘরের ফার্নিচার আমার পছন্দের হবে না?"
আমি মিতুর মাথা সামনে টেনে এনে কপালে চুমু খেয়ে বললাম
" অবশ্যই তোমার পছন্দের হতে হবে। যে ঘর তোমার, সে ঘরের সব আসবাবপত্র অবশ্য তোমার পছন্দের এবং তোমার হাতে কেনা হতে হবে। ইমন বললে কী হবে!"
ইমন বিরক্তি নিয়ে কপাল কুঁচকে পাশে দাঁড়িয়ে রইল। ওর মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, বিরক্তির কোনো শেষ নেই তার মাঝে। অথচ মুখে জোর করে হাসি ধরে রেখে মিতুকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল।
নিচের সিঁড়িতে মিতুর হাইহিলের শব্দ মিলিয়ে গেলো মুহূর্তে।
ইমন আমার একমাত্র ছেলে। বিয়ে করিয়েছি গতমাসে। পছন্দ অবশ্য আমিই করেছি, ছেলে দ্বিমত করেনি। দ্বিমত করার কোনো সুযোগও আমি রাখিনি। ভালো পরিবারের উচ্চ শিক্ষিত, সুন্দরী, ভদ্র, মার্জিত মেয়ে মিতু। যাকে যে কেউই পছন্দ করবে।
ছেলের বিয়ের আগে আমি দোতলায় বড় একটা রুম ওদের জন্য বরাদ্দ করেছি। যেটার দক্ষিণমুখী বারান্দা। ঐ রুমের জন্য কোনো আসবাবপত্র কিনিনি। আমি অল্প শিক্ষিত সেকেলে মানুষ, আজকালকার মেয়ের রুচি ও পছন্দ যদি আমার সাথে না মিলে সে কারণেই আমার এই পন্থা অবলম্বন। ছেলের বউ এসে নিজের জিনিস নিজে পছন্দ করে কিনবে। যদিও আমার ছেলের ঘরে আসবাবপত্রের অভাব নেই। তারপরও নতুন বউয়ের জন্য আমি এটাই ঠিক মনে করেছি।
এই একমাস বিয়ের বিভিন্ন অানুষ্ঠানিকতা, এবাড়ি ওবাড়ি দাওয়াত খেতে খেতে এসব কেনাকাটার কথা সবই ভুলে গেছি।
গতকাল মিতু বাবার বাড়ি থেকে আসার পর আমি ওর রুমের ফার্নিচারের জন্য বাজেট করা দুইলাখ টাকার চেকটা ইমরান সাহেবের সামনেই গিয়ে মিতুর হাতে দিয়ে এলাম।
" মিতু কাল ইমনকে নিয়ে তোমার ঘরের জন্য কি কি অাসবাবপত্র লাগবে সব নিয়ে এসো। এখানে দুইলাখ টাকার চেক আছে। আরও কিছু লাগলে দেয়া যাবে।"
মিতু স্বাভাবিকভাবেই আমার থেকে হাত বাড়িয়ে চেকটা তুলে নিলো। তখন থেকেই ইমরান সাহেব রেগে আছেন। তিনি আমার এমন বাড়াবাড়ি মোটেও পছন্দ করেননি।
ইমরান সাহেবের একটাই কথা
"মিতু এই বাড়ির বউ হয়ে এসেছে সবে একমাস হবে। এখনই ওকে এত প্রায়রিটি দেয়ার মানে কি? ইমনকে না দিয়ে ওর হাতে দুই লাখ টাকা চেক তুলে দেয়ার কি দরকার ছিল? ছেলে আমার অপমানবোধ করেছে। এভাবে না চাইতে লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়ে গেলে মেয়েটার চোখ বড় হয়ে যাবে। তার চাহিদা বেড়ে যাবে।"
আমি এসব ইচ্ছে করেই করছি। যে কষ্ট আমি সারাজীবন পেয়েছি, সে কষ্ট অন্য মেয়ে পাক সেটা আমি কোনোভাবেই চাইনি।
আমার কোনো মেয়ে নেই। থাকলে তার জীবনটাও আমি নিজের হাতে গড়তে চাইতাম। ইমনও চায়নি স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ফার্নিচার কিনতে যেতে। সে যে আপত্তি করবে সেটা আমার মন আগেই বলছে। বাবার ছেলে, বাবার চেয়ে ব্যতিক্রম কেন হবে?
আমি ইমনকে নিজ হাতে মানুষ করেছি। সে মানবিকগুণ সম্পন্ন একজন ভালো মানুষ। আমার ছেলে কখনো কারো মনে কষ্ট দেয়নি, কারো ক্ষতি করেনি। কখনো মায়ের অবাধ্যতা করেনি।
কিন্তু স্বভাবগতদিক দিয়ে সম্পূর্ণরূপে বাবার মতো হয়েছে।
অবশ্য এসব আমার ছেলের দোষ নয়, সে ছোটবেলা থেকে এসব দেখেই অভ্যস্ত হয়েছে।
স্ত্রী মানে ঘরে থাকবে, রান্না করবে, ঘর গোছাবে। আর মাথা নিচু করে 'জি হুজুর' 'জি হুজুর' করবে।
সে তার মায়ের ভূমিকা তো সারাজীবন এভাবেই দেখে এসেছে।
তার মা হাসি মুখে একজীবন এমন অবহেলার অত্যচার মুখবুঝে সহ্য করেছে।
তার মা কখনো নিজের পছন্দে রান্না করতে পারেনি, পোশাক পরতে পারেনি, কোথাও যেতে পারেনি। কোনোদিন সংসারে নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারেনি।
সে ভেবেই নিয়েছে তার স্ত্রীও তার মায়ের ব্যতিক্রম হবে না।
অথচ মিতুকে আমি বিয়ের পরেরদিন তার অনুমতি নিয়ে রান্নাঘরে পাঠিয়েছি।
" মিতু তুমি কি রান্না করতে জানো?"
" জি মা, কিছু কিছু পারি। বাকিটা আপনার থেকে ধীরে ধীরে শিখে নেব।"

     🖋️ অসমাপ্ত 🖋️
Sort:  

লিখাটি ভালো তবে এটি কি আপনার নিজের লিখা?
আসল সোর্স > https://www.facebook.com/sbtrvn/posts/830553804227126
আপনি ফেসবুক থেকে অন্যের লিখা কপি করে এখানে পেস্ট করছেন, হাইভে প্ল্যাগারিজম একদম নিষিদ্ধ।
রিসেন্টলি আরো দুটি পোস্ট চোখে পরেছে যেগুলো আপনি হুবুহু কপি করে এইখানে পেস্ট করছেন।