ভুতের বাড়ি | The Haunted House.

in BDCommunity3 years ago (edited)

ভুতের বাড়ি | The Haunted House



Source


রেজুয়ানা আর সুমি বিয়ের পর তাদের যারযার জামাই নিয়ে সেন্ট মারটিন এ পৌঁছানোর পর গেল সেই কটেজ এ যেখানে তারা আগে থেকেই বুকিং করে রেখেছিল। কটেজ এ গিয়ে তো তারা অবাক। কতো সুন্দর করে ভুতের বাড়ির মতো করে সাজানো কটেজ টা। ঠিক যেন বিদেশি রা হ্যালোইন এ সাজায় সেরকম। দেখলেই কেমন গায়ের পশম দাড়িয়ে যায়। তারা বুঝতে পারলো যে পর্যটক আকর্ষণ এর জন্য এটা করা। তো তারা চেক ইন করার পর ঠিকঠাক ভাবে ফ্রেশ হয়ে নিল। তারপর বিকেল বেলায় দুপুরের খাবার খেতে খেতে সন্ধ্যা নেমে গেল। তারা এমনিতেই খুব টায়ার্ড যেহেতু অনেক বড় জার্নি করে এসেছে আর তার উপরে সন্ধ্যা হয়ে গেছে তাই তারা ঠিক করলো যে তারা রাতটা কটেজ এই থাকবে, বের হবে না। হঠাৎ করে কটেজ এর মালিক এসে জানালো যে তাদের একটা রুমে আসা পর্যটক এর মাঝে একজন মেয়ে না জানা কারণে আত্যহত্যা করেছে তাই মালিক কর্তৃপক্ষ সবাই রাতে লাশ দিয়ে আশার জন্য টেকনাফে যাবে আর ফিরবে পরদিন বিকেলে। এই কথা বলে চলে গেল সবাই যদিও কোন লাশ দেখল না রেজুয়ানা বা সুমি কারণ জানতে পেরেছে যে লাশ টা কিছুক্ষণ আগে নিয়ে গিয়েছে। তো রাত টা পুরো কটেজ এ শুধুমাত্র এই দুই দম্পতি ই থাকবে। আত্যহত্যা করার কথা শুনে তারা মনে মনে একটু ভয় পেলেও খুশি ছিল এটা ভেবে যে তারা নিজেদের মতো করে চিল করতে পারবে। তো তারা প্ল্যান করলো যে তখন একটু রেস্ট নিয়ে তারপর রাতে উঠে আকাশ দেখবে। তো যারযার রুমে গিয়ে দুই দম্পতি রেস্ট নিতে থাকলো। তো তারপর তারা রেস্ট নিতে নিতে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়লো।


ঘণ্টাখানেক পর সুমির ঘুম ভাঙল পেট ব্যাথা তে। রুম থেকে বেড়িয়ে ছাদের দিকে দৌড়তে লাগলো কারণ এই কটেজ টায় রুমে কোন ওয়াশরুম নেই, ওয়াশরুম এর ব্যাবস্থা করা হয়েছে ছাদে। পেটে এতোই ব্যথা করলো যে সে তার জামাই কে ডাকার জন্য অপেক্ষাও করলো না। তো ওয়াশরুম এ গিয়ে সুমি যেই না কমোড এ বসলো, একটা চিৎকার শুনতে পেল বাহির থেকে। এ যেন একটা মেয়ের চিৎকার। পরবর্তীতে আর কোন চিৎকার শুনা গেল না। সুমি প্রথমে ভয়ে কেপে উঠলেও পরে বুঝতে পারলো যে আশেপাশে কোন বাচ্চা হয়তো চিৎকার করেছিল। কিছুক্ষণ পর সুমি একটা শব্দ শুনতে পেল। হ্যা, এ তো কান্নার শব্দ। সুমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিল যে কোন একটা মেয়ে তার ওয়াশরুম এর দরজার সামনে থেকেই কাদছে। যদিও কয়েক সেকেন্ড পর আর সেই কান্নার শব্দ বা কোন শব্দ ই শুনা গেল না। সুমি খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিল কিন্তু একা ছিল বলে সে চুপচাপ ছিল। তো সুমি ভয়ে ভয়ে ওয়াশরুম এর কাজ শেষ করলো। তারপর বের হয়ে সামনের দিকে এগোতে লাগলো। তারপর হঠাৎ করে একটা ছায়া দেখতে পেল সুমি আর সাথে একটা চিৎকারও শুনতে পেল। সাথে সাথে সুমি একটা চিৎকার দিয়ে তার রুমে দৌড়ে গেল। অমন টাইমে তার চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙ্গে ভয়ে রেজুয়ানাও দিল চিৎকার। তারপর সবাইকে সুমি ব্যাপার টা বলল। কিন্তু কেউই বিশ্বাস করলো না, আত্যহত্যার ঘটনা টা শুনেছিল তাই এমন টা বলছে ভেবে নিল সবাই। তো পরে সবাই মিলে গেল ছাদে। গিয়ে সামনের দিক টাতে ফেলান চেয়ারে বসলো সবাই। এখান থেকে কটেজ এর সামনের জায়গাটা খুব ভালোভাবেই দেখা যায়। অন্ধকারে ভরা চারপাশ, আর বড়বড় নারকেল গাছ গুলো ভালই লাগছিল কিন্তু রেজুয়ানার কেন যেন মনে হচ্ছিল যে একটা নারিকেল গাছের পিছনে কেউ একজন দাড়িয়ে আছে। সে বাকিদের কে বিষয় টা বলল এরপর সবাই মিলে জায়গা পরিবর্তন করে একটু সাইডে গিয়ে ঐ নারিকেল গাছের পিচন টা দেখতে চাইলো। ঐদিকটাতে যাওয়ার সাথে সাথেই সবাই দেখতে পেল যে ওখানে সাদা কাপড় পরা একটা মেয়ে হাতে ছুরি নিয়ে বসে আছে, আর হাত থেকে রক্ত পড়ছে। রক্ত পরে সাদা সাড়ি টা যেন প্রায় লাল হয়ে গেল। রেজুয়ানার জামাই চিৎকার করে ডাক দিয়ে বলল,

রেজুয়ানার জামাইঃ কে আপনি? কি করছেন ওখানে?
মেয়েটা জাবাব দিলঃ (ভারী কন্ঠে) আমি কেউ না এখন আর। আজ বিকেলেও কেউ ছিলাম যখন আপনাদের পাশের চেয়ারেই আমার হাসবেন্ড এর সাথে ছিলাম। কিন্তু অর সাথে ঝগড়ার পর আমি যখন ছুরির সাহায্যে আত্যহত্যা করলাম এরপর থেকে আমি আর কেউ না। আমার লাশ টা সবাই নিয়ে গেল কিন্তু আমাকে তো নিল না।

এই কথা বলে মেয়েটা অট্টহাসি দিতে লাগলো তাদের দিকে তাকিয়ে।
ভয়ে আতকে উঠলো সকলেই আর সাথে সাথে রেজুয়ানা আর সুমি অজ্ঞ্যান হয়ে গেল। তাদের জামাই রা তাদের কে নিয়ে একটা রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল। এরপর আর দরজা খুলল না সারারাতে।

পরদিন সকালে তারা সেন্ট মারটিন ত্যাগ করলো।

(গল্পটার বিহাইন্ড দ্যা সিন অন্য কোন একদিন শেয়ার করবো ইন শা আল্লাহ)।


এটা একটা কাল্পনিক গল্প ছিল যেটা লেখক নিজেই নিজের মনের মতো করে লিখেছে। যদি কারো লেখা কোন গল্পের সাথে এই গল্প মিলে যায় (যেটা হবার কথা না) তাহলে সেই ক্ষেত্রে এই গল্পের লেখক গল্পের ক্রেডিট নিজে নিচ্ছে না।


"সমাপ্ত | The End"

"Be Good, Think Good and Do Good"

"Stay Home, Stay Safe & Let's Beat Corona".