ছোট্ট দুই বন্ধুর পছন্দ অপছন্দ আর প্রেমের গল্প...

in BDCommunity5 years ago (edited)

ছোট্ট দুই বন্ধুর পছন্দ অপছন্দ আর প্রেমের গল্প...



Source


উষ্ণ তখন ক্ল্যাস থ্রি তে উঠেছে সবে। নতুন স্কুল আর নতুন মুখগুলোর মাঝে উষ্ণ নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিল না, কেমন যেন একা একা লাগছিল। ১২/১৩ জন ছাত্রছাত্রির মধ্যে একজন ছিল একটু স্পেশাল, সে হচ্ছে সাগর। সাগর লেখাপড়ায় ভালো ছিল কিন্তু তখন দেখতে কেমন একটু বোকা বোকা মনে হতো। ধীরে ধীরে সাগর এর সাথে উষ্ণর ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই তারা খুব কাছের বন্ধু তে পরিণত হলো। আসলে দুজনের মাঝেই বড় একটা কমন দিক ছিল। সাগর ছোটবেলা থেকেই মা-বাবা কে ছেরে চাচার বাসায় থেকে লেখাপড়া করছে আর উষ্ণ তো মা-বাবা কে পায় ই নাই যদিও এই সময়টাতে উষ্ণর মা তার সাথেই ছিল কিন্তু সেটা খুব বেশিদিন এর জন্য হয়ে উঠে নাই।


উষ্ণ আর সাগর এর বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে গভীরে যাচ্ছিল আর তাদের পছন্দের জিনিশগুলোও এক রকম হয়ে উঠছিল। ওরা দুজন মিলে নিজ উদ্যোগে স্কুলের একটা ছোট্ট যায়গায় লাইব্রেরিও শুরু করেছিল আর তাতে ওদের শিক্ষক রা বেশ খুশি ই ছিল কারণ সাগর আর উষ্ণ দুজনই ছিল ক্ল্যাসের ভালো স্টুডেন্ট আর ভালো স্টুডেন্ট দের প্রতি যে শিক্ষকদের মনে একটা সফ্ট কর্নার থাকে সেটা কার না জানা? লাইব্রেরীতে অল্প দামের ছোট ছোট গল্পের বই পাওয়া যেত... ভুতের গল্প, কৌতুক, ধাধা ইত্যাদি। সাগর সাধারণত বই নেওয়া দেওয়ার দায়িত্বে থাকতো আর সাগর এর সাধারণত বাসা থেকে বেশি দূরে যাওয়ার অনুমতি বা সাহস না থাকায় বই কিনে আনার ব্যপার টা উষ্ণ সামলাতো। তখন থেকেই উষ্ণর মাথায় ব্যবসায়ী চিন্তা ভাবনা কাজ করতো। সে হেটে যেত বাজারে বই কিনতে আর বই এর সাধারন দাম থেকে একটু কমে কোথায় বই পাওয়া যায় সেটা খুজে বই কিনতো। অতিরিক্ত টাকা টা তার পারিশ্রমিক ভেবে নিত যদিও টাকার পরিমাণ টা খুবই সামান্য হতো। যেসব স্টুডেন্ট রা বই নিত পড়ার জন্য তাদের একটা ছোট্ট শুভেচ্ছা মুল্য দিতে হতো আর সেই টাকাটাই পরে নতুন বই আনার ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হতো।


উষ্ণ আর সাগর একসাথেই খেলতো, আশেপাশে ঘুরে বেড়াতো। দুজনই চেষ্টা করতো ক্লাসে ফার্স্ট বয় হওয়ার জন্যে কিন্তু সাগর সাধারণত একটু এগিয়ে থাকতো সবসময়। ওরা দুজনই ক্লাসে লেখাপড়ার দিক দিয়ে প্রথম দিকে থাকতো। পরের বছরে ক্লাস ফোর এ উঠার পর উষ্ণ বেশ কিছুদিনের জন্যে গ্রামে ছিল। ফিরার পর দেখে ক্ল্যাসে নতুন একটা স্টুডেন্ট, এটা একটা মেয়ে নাম যার রুমি। উষ্ণ খেয়াল করলো যে রুমি মেয়েটা লেখাপড়ায় ওদের দুই বন্ধুকে পিছে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। শুরু হলো এবার দুজনের লেখাপড়ায় পাল্লাপাল্লির সময়। আবার সাথে বাধন নামে আরেকটা ছেলেও উড়ে এসে জুরে বসেছে। ৪জন এর মাঝে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল আর উষ্ণ পরে গেল ৪ নাম্বারে। সাগর এর ছোট্ট মনে রুমির জন্য ভালোলাগা কাজ করা শুরু করলো। উষ্ণসহ বেশকয়েকজন ছাত্রছাত্রি জানতে পারলো যে সাগর রুমির পেছনে লেগেছে। কেন, ক্লাসের ভালো ছাত্র কি প্রেমে পড়তে পারে না? কিন্তু... ওরা এখনো মাত্র ক্ল্যাস ফোর এ আছে সেটা ভুলে গেলে হবে না। ওদের ক্ল্যাসে মতিন মিয়া নামে একটা ছেলে ছিল ও একদিন আন্দাজে কেন যেন সাগর কে বলে দিল যে উষ্ণ ও নাকি রুমি কে ভালোবাসে যদিও উষ্ণর মনে তখন পর্যন্ত এরকম কোন কিছুই ছিল না।


সাগর তখন বড় মন ওয়ালা বন্ধুত্বের পরিচয় দেওয়ার জন্যে তার প্রেমিকাকে উষ্ণর হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। ওয়েট, প্রেমিকা? কে? কার? স্যরি প্রেমিকা না, পছন্দের মানুষকে আর পছন্দ করবে না ঠিক করেছে ছোট্ট সাগর। তো একদিন উষ্ণ মতিন কে জিজ্ঞাসা করলো...

উষ্ণঃ আচ্ছা, তোকে আমি কবে বলছি যে রুমি কে আমি পছন্দ করি বা ভালবাসি?
মতিনঃ রুমি সুন্দর একটা মেয়ে অরে তো ক্ল্যাসের সবাই ই ভালোবাসবে, আমিও ভালোবাসি।

উষ্ণ তখন ভ্যাবাচ্যাকা (এটার অর্থ জানি না দুঃখিত) হয়ে গেল আর কিছুই বলার ভাষা পেল না। যদিও কথাটা শুনার পর উষ্ণর মনেও কেমন একটা ফিল হলো রুমির জন্য। তাছাড়া সাগর তো নিজের ভালোবাসা কুরবানি দিয়েই দিয়েছে বন্ধুর জন্যে। তো উষ্ণর ভালোলাগা শুরু হলো রুমি কে। উষ্ণ কিন্তু এখনো বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে যে, তার মনে রুমির জন্য কোন ফিল ই ছিল না আগে, কিন্তু সাগর আর মতিন এর এই সেই কথা শুনে উষ্ণ প্রেমে পরে যায় রুমির।

আচ্ছা ওয়েট, আপনি কি ভাবছেন যে গল্প টা এখানেই শেষ? জি না। পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরা দোস্ত। তবে বাংলায় লিখতে লিখতে লেখকের ক্ষুধা লেগে গেছে, এমনিতেও সে সকাল থেকে একটা টোস্ট বিস্কুটের উপর দিয়ে চলছে। তো একটা বিরতি নেয়া যাক নাকি বলেন? ফিরছি বিরতির পর।


"বিরতি | Interval"

"Be Good, Think Good and Do Good"

"Stay Home, Stay Safe & Let's Beat Corona".


Sort:  

তার মানে এখন আমরা ক্লাস ৪ এর নিব্বা নিব্বির গল্প পরবো। 😂

Yeah, kind of.