জন্মদিনের গিফ্ট।
উষ্ণর love at first sight এর গল্প টা শুরু করেছিলাম এখানে আর আজ সেই সময়ের আরো একটা গল্প বলতে আসলাম।
স্কুল জীবনের আর লিজার পিছন পিছন ঘুরার জীবনের প্রায় বছর দুয়েক হয়ে গিয়েছিল বোধহয় ততোদিনে আর এতোদিনে লিজার সাথে উষ্ণ ঠিকভাবে কথা বলার সাহসই অর্জন করে উঠতে পারে নি। ছেলেদের ক্লাসরুম ছিল একতলা বিশিষ্ট একটা বিল্ডিং এ আর মেয়েদের টা ছিল দুই তলা বিশিষ্ট আরেকটা বিল্ডিং এ আর লিজার ক্লাসরুম ছিল সেই বিল্ডিং এর দুইতলায়। উষ্ণ কোন কারণে ক্লাসরুম থেকে বের হতে পারলেই উকি দিয়ে তাকাতো সেই দুই তলার দিকে আর ভাবতো হয়তো দেখা মিলবে। টিফিন টাইমে বা ক্লাস শুরু হওয়ার আগে যখন বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মশগুল থাকার কথা উষ্ণের, ঠিক সেই সময়টা উষ্ণর মন আর চোখ থাকতো সেই দুই তলার বারান্দার দিকে যেখানে লিজা তার বান্ধবিদের সাথে গল্প করতো। এভাবে দিন কাটতে লাগলো। লিজার সাথে না হলেও লিজার কিছু বান্ধবির সাথে উষ্ণের টুকটাক কথা হতো আর ২/১ টা বান্ধবির সাথে তো ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়েই গিয়েছিল অলরেডি।
তো একদিন উষ্ণ জানতে পারলো যে কয়েকদিন পর লিজার জন্মদিন। উষ্ণ ঠিক করলো লিজা কে কিছু একটা উপহার দিবে, বার্থডে গিফ্ট দিবে আর কি। কিন্তু উষ্ণের কাছে তো টাকা থাকতো না কারণ সে তার বাসা থেকে সেভাবে টাকা পেত না। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে বিষয়টা তার অতি কাছের বন্ধু রাশেদ এর সাথে শেয়ার করলো, আর টাকাও ধার চেয়েছিল হয়তো। পরে রাশেদ উষ্ণকে বললো,
রাশেদঃ দেখ বন্ধু, আমি তোর ব্যাপার টা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারতেছি। আমি তোকে একভাবে সাহায্য করতে পারি যদি তুই বিষয়টা অন্য চোখে না দেখিস।
উষ্ণঃ কিভাবে বন্ধু?
রাশেদঃ আমার কাছে একটা গিফ্ট আছে। আমাকে একজন দিয়েছিল কয়দিন আগে। সেটা আমি তোকে দিয়ে দেই, তুই সেটা দিতে পারিস যেহেতু কিনতে পারছিস না। জিনিশটা একদম প্যাকেট করা নতুন এর মতোই আছে।
উষ্ণঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিস।
তো পরদিন রাশেদ ব্যাগে করে গিফ্ট টা স্কুলে নিয়ে আসলো, ছুটির পর উষ্ণর হাতে দিল। উষ্ণ দেখলো যে গিফ্ট টা ভালোই আছে শুধুমাত্র গিফ্ট এর প্যাকেট টা নিয়ে সমস্যা কারণ প্যাকেট এর উপরে নাম লেখা ছিল। তো উষ্ণ একটা রেপিং পেপার কিনলো প্রথমে, এরপর গিফ্ট এর প্যাকেটটার উপরে একটা সাদা কাগজ দিয়ে পেচিয়ে দিয়ে এরপর রেপিং করলো। গিফ্ট রেডি করে রাখলো এরপর লিজার যেদিন জন্মদিন সেদিন তার একটা বান্ধবির হাতে গিফ্ট দিয়ে উষ্ণ রিকুয়েস্ট করলো যাতে গিফ্ট টা লিজা কে দেয়। একদিন পর সেই বান্ধবি উষ্ণকে বললো,"তোমার গিফ্ট টা লিজা ফেরত দিয়ে দিয়েছে। আর, পুরাতন গিফ্ট কেন দিলা? নতুন কিছু কিনা দিতে পারলা না?"একথা শুনে তো লজ্জায় উষ্ণের মাথা কাটা গেল। যদিও একটু কষ্টও পেয়েছিল কারণ গিফ্ট টা নাকি ফেরত দিয়ে দিয়েছে আর সেটা বান্ধবির বাসার পাশের দেয়ালে থাকবে সেখান থেকে নিয়ে নিতে বলেছে।
এটা কোন কথা? গিফ্ট তো গিফ্টই, ভালো না লাগলে ফেলে দিত, ফেরত দেওয়ার কি দরকার ছিল? এরপর উষ্ণ আর ফেরত নিতে যায় নাই,কয়েকদিন একটু মন খারাপ করেই থাকতে হয়েছিল। আর এরপর মনে মনে সে ভেবে রেখেছিল যে পরের বছরে লিজার বাসা থেকে শুরু করে স্কুল পর্যন্ত রাস্তার অনেক জায়গায় Happy Birthday লেখা কাগজ লাগিয়ে সারপ্রাইজ করবে আর খুব ভালো গিফ্ট কিনে দিবে যদিও সেটা আর পরবর্তীতে হয়ে ওঠে নি কারণ কিছু স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যায়।
এরকম না বলা অনেক গল্প থেকে যায় উষ্ণের মতো অনেক বালকের জীবনে। আজকের গল্পটা এখানেই শেষ করছি তবে আবারো এই অসমাপ্ত প্রেমের আরো কিছু গল্প নিয়ে হাজির হবো ইন শা আল্লাহ।
Hi @ashikstd, your post has been upvoted by @bdcommunity courtesy of @rehan12!
Support us by voting as a Hive Witness and/or by delegating HIVE POWER.
JOIN US ON