social Media (সোশ্যাল মিডিয়া) বর্তমান সময়ের এক জনপ্রিয় নাম। মাত্র ২০ বছর আগেও যার অস্তিত্ব ছিল না, সেই সোশ্যাল মিডিয়া এখন আমাদের সাথে উতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গেছে। মোবাইল ফোন স্পর্শ না করে বর্তমান সময়ের যুব সমাজ একটি দিনও পাড় করতে পারবে কিনা সন্দেহ। কি যুব সমাজ, বুড়োরাও বসে বসে স্ক্রল করেন সোশ্যাল মিডিয়া তে । ট্রেডিশনাল বা গতানুগতিক সোশ্যাল মিডিয়ার দখলে এখন বড় একটা গ্রুপ । হে আমরা আমাদের প্রয়োজনে হয়ত এই মিডিয়া গুলো ব্যবহার করি কিন্তু আমাদের ব্যবহারের ফলেই কিন্তু এর মালিক ধনী থেকে ধনীতর হচ্ছে। খুব স্বাভাবিক ভাবে চিন্তা করলে এটা বুঝা যায়, যেহেতু গতানুগতিক বড় বড় মিডিয়া প্রত্যেকটা মানুষের কন্ট্রিবিউশন থেকে আজকের অবস্থানে কারন প্রত্যেকটা কমেন্ট, প্রত্যেকটা শেয়ার এর মাধ্যমে একটা মিডিয়া ইন্টারনেটে জনপ্রিয় হয় এবং এই লাইক, কমেন্ট, শেয়ার বা পোস্ট কিন্তু এই সোশ্যাল মিডিয়ার মালিক দিতে পারে না, এটা দিতে হয় এর ব্যবহারকারীদেরকেই এবং আজকে পর্যন্ত তারা সেই মানুষগুলোর জন্য কিছু করা কথা ভাবছে না, মানে ব্যবহারকারীরাই রয়েছে বঞ্চিতদের তালিকায়।
Source: Image by William Iven from Pixabay
যদি এমন হত তবে কেমন হত, যেখানে আমরা যেহেতু ব্যবহারকারী ও আমাদের ডাটা দিয়েই এই মিডিয়ার মালিক ধনী হচ্ছেন সেহেতু আমাদেরকে তার লাভের কিছু অংশ দিত আমাদেরকে যার যার কন্ট্রিভিউশন অনুযায়ী। নিশ্চই খুব ভাল হত। অর্থাৎ আমরা ফেসবুকে লাইক কমেন্ট করে টাকা পেতাম। তাহলে ভালই হত। যেহেতু সময় খুব মুল্যবান, আর ডাটাও কিনতে হয়, তাই এমন্টাই হওয়া উচিত ছিল। ব্লকচেইন ভিত্তিক মিডিয়াগুলো এমনটা করে থাকে কিন্তু পুরাতন বা গতানুগতিক মিডিয়াগুলো এটা করে না। ব্লকচেইন ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া গুলো গ্রাহকদেরকে কিছুই দেয় না কিন্তু ব্লকচেইন ভিত্তিক গুলো গ্রাহকদেরকেই দেয় আগে।
তো বুঝতেই পাড়ছেন ট্র্যাডিশনাল বা গতানুগতিক সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে আধুনিক বা ব্লকচেইন ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক পার্থক্য রয়েছে। আমি আজকে আমার বাঙ্গালী কমিউনিটির জন্য কিছু পার্থক্য এখানে শেয়ার করতে যাচ্ছি। পার্থক্যগুলো যদি আপনি ভালোভাবে জানতে পারেন তাহলে আপনার জন্য হাইভে (#hive) কাজ করার ক্ষেত্রে সহজ হবে এবং আপনি একটা ভালো প্লাটফর্মে কাজ করছেন এজন্য মোটিভেশন পাবেন । তাই কথা না বাড়িয়ে চলুন সরাসরি টেবিলে চলে যাই যেখানে আমি একেবারে গতানুগতিকভাবে পার্থক্য করে দেখাবো কোনটা কেমন এবং কিভাবে কাজ করে ।
ক্ষেত্র | গতানুগতিক সোশ্যাল মিডিয়া | আধুনিক (ব্লকচেইন ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া) |
---|---|---|
কি করতে পারবেন | সামাজিক যোগাযোগ | সামাজিক যোগাযোগ ও পাশাপাশি অর্থ আয় |
কারা সময় দিচ্ছে আর কারা লাভবান হচ্ছে | ব্যবহারকারীরাই সময় দিচ্ছে, মালিক একটা লাইকও দিচ্ছে না কিন্তু ফল অর্থাৎ লাভ পাচ্ছে মালিকেরা | ব্যবহারকারীরাই সময় দিচ্ছে আর তারাই বেনিফিটেড হচ্ছে |
জনপ্রিয় করতে সময় কারা দিচ্ছে | ডেভলপমেন্ট ও মেন্টেনেন্সে সময় দিচ্ছে যা খুব সামান্য | মূল সময় ব্যবহারকারীরাই দিচ্ছে |
সময়ের মুল্য | যারা খুব ভাল করেছে তাদের সময়ের দাম দেয়া হয় | প্রত্যেক ব্যবহারকারীর দেওয়া প্রত্যেকটি মুহুর্তকে মুল্যায়ন করা হয় |
মার্কেটিং করে আয় | যারা এই মিডিয়াতে খুব বড় ফলোয়ার তৈরী করতে পারেন তাদের জন্য এড দিয়ে আয় করার সু্যোগ তৈরী করা হয় | এখানে প্রথম থেকেই একজন ব্যবহারকারী আয় করতে পারেন |
তথ্য সংরক্ষন | এখানে আপনার তথ্য আপনি মুছে ফেললে তা আর ফিরে পাবেন না | এটা ব্লকচেইন হওয়ায় আপনার তথ্য হারাবে না যদিওবা আপনি ডিলিট করে দেন। সত্যিকার অর্থে আপনি ডিলিট করতে পারবেন না । সবই ব্লক আকারে ব্লকচেইনে থেকে যাবে |
কমিউনিটির সাথে সম্পর্ক | আপনি শুধুমাত্র সময় দিয়ে কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন না যেহেতু এগুলোতে কোন আর্থিক মানদন্ড নেই তাই আপনি ভালো কোন সুযোগ পেলে এখান থেকে বের হয়ে যেতে পারেন এবং সম্পর্কগুলো মজবুত হবে না | কিন্তু এখানে যেহেতু এই যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি আপনি কিছু রিওয়ার্ড পাচ্ছেন তাই একে অপরের জন্য কাজ করবেন এবং বন্ধুত্ব ও বন্ধনগুলো মজবুত হবে |
উদাহরন | ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, লিঙ্কড-ইন ইত্যাদি | হাইভ, টাটা, স্টিমিট, এপিক্স, মিডিয়াম ইত্যাদি |
Source: Image by Arek Socha from Pixabay
আমি অনেককে দেখেছি যারা এধরনের ব্লকচেইন ভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়ার সন্ধান পাওয়ার পর আগের মিডিয়াগুলোকে আস্তে আস্তে পরিত্যাগ করে এখানেই সম্পূর্ণরূপে কাজ করে যাচ্ছে এবং সময় দেওয়ার হলে এখানে দিচ্ছে । আমি নিজেও এখন অন্য সোস্যাল মিডিয়াগুলো তেমন ব্যবহার করি না। শুধু রিওয়ার্ড ভিত্তিক মিডিয়াগুলো ব্যবহার করি যেখানে আমার সময় দেয়ার ফলে আমি তার রিটার্ন আর্থিক মানদন্ডে পাই। আজকেই এই পার্থক্যগুলো কোনো ব্লগ বা গবেষনা থেকে নেওয়া হয়নি। আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি থেকে ও যতটুকু জেনেছি তা থেকে লিখার চেস্টা করেছি। ভুল হলে শুধরে দিবেন এবং কমেন্টে জানাবেন আমি সংযোজন ও সংশোধনের চেস্টা করব। এই @bdcommunity #bdcommunity বিডিকমিউনিটির বাংলা ভাষাভাষী ব্যবহারকারীরা কিছুটা উপকৃত হলেই এই পোস্টের সার্থকতা। এই পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
হাইভের বেসিক বিষয়ের উপর আমার বাংলায় লেখা কিছু পোস্টঃ
নিচের কোন টপিক সম্বন্ধে জানার প্রয়োজন হলে পড়ে আসতে পারেন।
আমার অভিজ্ঞতা ও নতুনদের জন্য দিকনির্দেশনা
কীভাবে আপনার পোস্ট ফরমেট করবেন মার্কডাউন দিয়ে– পর্ব ১
হাইভে ডাস্ট কি ও কীভাবে তা সেভ করতে পারবেন
হাইভ (Hive), হাইভ পাওয়ার বা এইচপি (HP) ও এইচবিডি (HBD) নিয়ে বিস্তারিত
আমি কে
আমি বাংলাদেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একজন প্রভাষক এবং সদ্য বাবা। আমি আমার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলি আমার বন্ধুদের এবং সম্প্রদায়ের সাথে ভাগ করে নিতে ভালোবাসি। ইউটিউব, ডিটিউব, হাইভে ব্লগিং করতে ভালবাসি। আমি শেয়ার করতে চাই ওইসবকিছু যা আমি শিখেছি যাতে মানুয আমার থেকে কিছুটা হলেও উপকৃত হতে পারে। আমি আমার ব্লগে টেক্সটাইল, অনলাইন আয়, ও নানান রকম আকর্ষনীয় বিষয় নিয়ে কথা বলে থাকি। আমি সর্বদা একজন শিক্ষানবিস হিসেবে সবার থেকে শিখতে চাই ও এই কমিঊনিটির সাথে এগিয়ে যেতে চাই।
Upvote, Resteem and Follow me on hive @engrsayful
Find me on social media
Follow me on DTube
Follow me on Youtube
Follow me on ThreeSpeak
Follow me on Facebook
Follow me on Twitter
আপনি যেভাবে নিয়মিত বাংলা ভাষায় ব্লকচেইন এর উপর বিভিন্ন লেখা লিখছেন তা সত্যিই অসাধারণ।
নতুনরা বিশেষ করে আপনার এই কাজে দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছে।
ধন্যবাদ। সবাই উপকৃত হচ্ছে ভেবে ভাল লাগছে। বাংলা ভাষা বাসীরা উপকৃত হবে এই আশায় লিখি
আপনার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন। শুভকামনা।
এপিক্স বা মিডিয়াম এ কখনো কাজ করিনি। তবে আপনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পোষ্ট করেছেন। পার্সোনালি বিষয়গুলো যেনে খুব ভালো লাগলো।
একসময় ফেসবুক ইউটিউব ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সময় নষ্ট করতাম। ব্লক চেইন এ আসার পর সেই নেশা কেটা গেছে।
আমারো একই অবস্থা
Thanks