বাংলাদেশে দালালিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে মানুষজন। ভিসা অফিস, পাসপোর্ট অফিস, ইমিগ্রেশন পয়েন্ট কোনো জায়গা বাদ নেই। এবং এদের দালালির মাত্রা এমন ছোট খাটো নয়। রিতীমত পুকুর চুরি।
আপনি যে সেসবের পাল্লায় না পড়ে নিজে নিজে করবেন তা হবেনা। আপনাকে অফিস থেকেই আজগুবি কারণ দেখিয়ে বাতিল করে দেয়া হবে। তবে ধৈর্য্য থাকলে আর পড়াশোনা জানা থাকার পাশাপাশি জেদ থাকলে কাজ হয়ে যায় বটে।
ভিসা বা পাসপোর্ট অফিস যেমন হোক, বাই-রোড ইমিগ্রেশন একেবারে অন্য জিনিস।
আমার সেবার ইমিগ্রেশন পার হতে গিয়ে মনে হয়েছিলো আক্ষরিকভাবেই পুলসিরাত পার হয়েছিলাম।
ইমিগ্রেশন পার হওয়া আসলে তেমন কঠিন কিছু না।
তবে প্রথমবার বাই রোড ইমিগ্রেশন পার হওয়াটা নিঃসন্দেহে বিশাল বড় একটা হ্যাপা।
তারউপর, এটাকে কঠিন করে ফেলে বাংলেদেশ সাইডের কিছু দালাল।
সুতরাং আমি আজকে আপনাদেরকে দালালের খপ্পরে না পড়ে কিভাবে ইন্ডিয়ার বাই-রোড ইমিগ্রেশন পার করতে পারেন সে ব্যাপারে সবিস্তারে বর্ণনা দেবো।
কাগজপত্র সাথে যা রাখবেনঃ
যেহেতু এখন করোনার টিকাকার্ড একটা নতুন ব্যাপার, টিকাকার্ড সার্টিফিকেটের ৫/৭টা কপি রাখবেন।
অযাচিত ঝামেলা এড়ানোর খাতিরে ভিসা আর পাসপোর্টেরও কয়েকটা ফটোকপি সাথে রাখবেন।
ট্রাভেল ট্যাক্স
ভালো হয়, বর্ডারে যেয়ে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা না দিয়ে আগেই ব্যাংক এন্ডোর্সমেন্টের সময় ট্রাভেল ট্যাক্স দিয়ে দেবেন।
এতে করে ইমিগ্রেশন সহজ হবে লাইনে আগে দাঁড়াতে পারবেন।
যদিও এখন বাস-সার্ভিসের লোকজন ৫০টাকার বিনিময়ে ট্রাভেল-ট্যাক্সের কাজ ইমিগ্রেশনে বাস থেকে নামানোর পর সেরে দেয়।
কিন্তু অই যে বললাম, বাই-রোড ইমিগ্রেশনের লাইন যেহেতু অনেক লম্বা, সুতরাং যত দ্রুত লাইনে দাঁড়ানো যায় তত ভালো।
ট্রাভেল-ট্যাক্স আগেই দেয়া থাকলে আপনি বাস থেকে নেমেই লাইন ধরতে পারবেন।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন
সব কাজকর্ম শেষ করে দ্রুত বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে যাবেন।
- প্রথম ধাপে ট্রাভেল ট্যাক্স দেখিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসের ভেতরে ঢুকবেন। লাগেজ পত্র চেক করিয়ে পরের লাইনে যোগ দেবেন।
- দ্বিতীয় ধাপে ইমিগ্রেশন অফিসে ঢুকে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন সিলের লাইনে দাঁড়াবেন। ওখানে ৫/৬টা কাউন্টার থাকে এবং প্রচুর ভীড় হয়।
তক্কে তক্কে থাকবেন এবং যেই লাইনে মানুষ কম সেখানে ঢুকে পড়বেন। - আপনাকে ভ্যারিফাই করে সিল দিলে ব্যাগপত্র নিয়ে বিপরীত দিকের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবেন। শেষ মাথায় বিজিবিকে আপনি সিল পেয়েছেন ওটা দেখিয়ে নো-ম্যান'স ল্যান্ডের লাইনে চলে যাবেন।
No-Man's Land
ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন
- ওখানে লাইনের শেষ মাথায় ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশনের প্রথম ধাপে গেটের মাথায় বসে থাকা অফিসারকে আপনার বাংলাদেশ-ইমিগ্রেশনের সিল দেখিয়ে দুটো কাগজ দেবে, ওগুলো নিবেন।
- এরপর লাইন ছেড়ে দ্রুত পরের কক্ষে ঢুকে যাবেন।
চটপট ফর্ম দুটো ফিলাপ করবেন।
এরপর সেগুলো আর সাথে করোনার সার্টিফিকেট সহ কক্ষের শেষ মাথায় বসে থাকা অফিসারকে জমা দেবেন। - উনি সাইন করে দিলে সেই সার্টিফিকেট নিয়ে পরের কামরায় যাবেন।
- ওখানে লাগেজ চেক করিয়ে ফাইনাল সিলের জন্য অপেক্ষা করবেন।
- ওখানেও ৮/১০টার মত কর্ণার থাকবে। সুযোগ বুঝে যেটাতে লাইন কম বা দ্রুত কাজ হচ্ছে সেটায় যেয়ে ভ্যারিফাই করে সিল নিয়ে নেবেন।
সাধারণ দু'একটা ছোট খাটো প্রশ্ন করে "কেনো যাচ্ছেন/ কোথায় থাকবেন/ কি করেন" জাতীয়!
এরপর সিল নিয়ে সোজা বেরিয়ে যাবেন!
এইটা সবচেয়ে লেটেস্ট আপডেট ইমিগ্রেশনের।
কেবল এই ধাপগুলো মনে রাখলেই কার কোন হস্তক্ষেপ ছাড়াই পার হয়ে যেতে পারবেন বাই-রোডে যেকোনো ইন্ডিয়ার বর্ডার।
আজকে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্মসাল ঠিক করলাম কোনো খরচ ছাড়াই। তবে অনেকদিন সময় দিতে হয়েছে 😀। এবার পাসপোর্ট করবো ভাবছি 🙂
সাবাশ ব্যাটা!
বাংলাদেশের সিস্টেম একটু স্লো, তবে কাজ ঠিকই হয়।
২০২০ এ এপ্লিকেশন করছিলাম, তারা কাজ করেনা দেইখা নিজেই নির্বাচন অফিসে গিয়ে কাজ করে আসলাম 🙂
😂 লম্বা সময় মনে হলেও করোনার কারণেতো সবই বন্ধ ছিল আসলে।
নাইলে হয়ে যেত।
আমার স্বাক্ষর ঠিক করাতে হবে। করবো করবো করেই আর আবেদন করা হচ্ছে না। 😑
করে ফেলেন জলদি 😀
পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে আনুমানিক কতক্ষণ সময় লাগে?
এইটা নির্ভর করে টাইমিংএর উপর আসলে।
দিনের কোন সময়ে লাইন ধরছো, সপ্তাহের কি বারে যাচ্ছো, কোনো লম্বা ছুটির সিজন কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আবার বর্ডারের উপরেও নির্ভর করে।
তবে সাধারণত অফ-আওয়ারে ৩/৪/৫ ঘন্টাতেই পুরো ইমিগ্রেশন শেষ হয়ে যায়।
পাসপোর্ট করার প্ল্যান কতবার নিয়েও করা হচ্ছে না।
বাড়ির পাশেই আখাউড়া চেকপোস্ট, ৩০ মিনিটের দূরত্ব। সাথের কয়েকজন প্রতি মাসেই আগরতলা চক্কর দিতে যায় বিভিন্ন কাজে। করে ফেলবো 😤
কালকেই যাও।
চলো বেড়াতে যাবো শীতকালে।
পিংক সিটিতে 🥰
এই মাসে সম্ভব না, আপাতত অনেক বড় একটা কিছু সামলাতে হচ্ছে, সেটার পর ইনশাআল্লাহ করে ফেলবো।
হম্ম। করে ফেলো।
পাসপোর্ট রেডি থাকা ভালো এখনকার যুগে
আগরতলা গিয়েছেন কখনো?
নাহ! যাবার কথা ছিল, ভিসাও নিয়েছিলাম, নাগাল্যান্ড যাওয়ার জন্য।
করোনা এসে সব ভজকট করে দিয়েছিল।
ওহ্, হয়তোবা আপনি নেক্সট প্ল্যান বানানোর আগে আমার এগুলোও রেডি থাকবে। 🫣